বই - শাকম্ভরী
লেখক - সায়ন্তন ঠাকুর
প্রকাশনী - ধানসিডি
মুদ্রিত মূল্য- ৪৫০ টাকা
সেদিন ধূসর ঘন মেঘের ছায়ায় ঢাকা ছিল দুপুর। পুরোনো স্মৃতির গন্ধমাখা ঝোড়ো হাওয়া বইছিল তখন। সেই নির্জন দুপুরে মনে হচ্ছিল বহু বছর পূর্বে কে যেন কথা দিয়েছিল ফিরে আসবে। বৃষ্টিভেজা উঠোনে এসে পড়বে তার বিবাগী পায়ের পদছাপ। এমন সব ভাবনা বয়ে আনা বৃষ্টিস্নাত দুপুরেই শেষ করেছিলাম সায়স্তন ঠাকুরের লেখা উপন্যাস শাকম্ভরী।
পড়ার পরে মনে হয়েছিল যে এমন অপূর্ব উপন্যাস পড়ার জন্য বহুদূর হেঁটে আসা যায়। বহু দুশ্চিন্তা, চাঞ্চল্য শুষে নিতে পারে এমন উপন্যাস। লেখক সায়ন্তন ঠাকুরের লেখা পড়লে সত্যিই মনে প্রশান্তি অনুভূত হয়। সপ্তদশ শতক থেকে একবিংশ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত কালসীমা জীবন্ত হয়ে উঠেছে তাঁর কলমে। লেখকের বর্ণনা করবার ক্ষমতা এতোটাই শক্তিশালী যে সব কিছু চোখের সামনে ছবির মতো ভেসে ওঠে। সব নারীচরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক সুনিপুণ ভাবে। অহল্যা ডোমনি, শাকম্ভরী, কৃষ্ণাশঙ্করী থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের নীলাঞ্জনা প্রত্যেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ নারীচরিত্র। প্রত্যেকেই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে সক্ষম, সমাজে প্রচলিত সংস্কার বা প্রথাকে ভাওঁতে পিছপা হয়নি। পড়তে পড়তে ভীষণ মায়া লেগেছে অহল্যার পোর্তুগিজ প্রেমিক রেমিলের উপরে। বইটার শ্রেষ্ঠত্ব লুকিয়ে আছে প্রকৃতির বর্ণনাতেও।
আমার কাছে ভীষণ আকর্ষণীয় চরিত্র বলে মনে হয়েছে সায়ম বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অমিতাভ ঘোষের The Shadow Lines" পড়ে লেখককে কেরালার একটি মেয়ে mail করে বলেছিল- ত্রিদিবকে প্লিজ এনে দিন। কারণ চরিত্রটা এতোটাই জীবস্তু আর বাস্তব মনে হয়েছিল। সেরকম শাকম্ভরী" পড়ার পরে লেখককে আমার বলতে ইচ্ছে করছে সায়ম বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্লিজ এনে দিন ......
রিভিউটি লিখেছেনঃ Srija Khanna
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।