বিদূষক
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
কাব্যের নবরসের মধ্যে বীভৎস একটা রস। আর এই গল্প, এই রস কে কেন্দ্র করেই।
একটা মানুষকে আমরা প্রথমেই তার রূপ দিয়ে বিচার করি। হ্যাঁ বিচার করি। মননে আমরা সবাই বিচারক। ঠিক, ভুল ইত্যাদি নিয়ে আমাদের ভীষণ মাথাব্যথা। মনে মনে একটা মতাদর্শ গড়ে তুলি আর সজ্ঞানে অজ্ঞানে সেটার মতোই গড়ে তুলতে চাই শিব কিছুই। এখানে ছেলেটির রূপ বিচিত্র, ভয়াল। তাকে দেখলেই শরীর শিউরে ওঠে। ছোট থেকে এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে সে অভ্যস্ত। বীভৎসতা র কারণে তাকে স্কুল ছাড়তে হয়, ছাড়তে হয় বাড়ি ও। বিশাল চেহারা নিয়ে নামে পকেটমারী র দুনিয়ায়। কিন্তু সেখানেও মন বসাতে পারে না। অবশেষে সার্কাস দলে জোকার সাজে। এতদিনে চেহারার উপযুক্ত কাজ পায় সে। ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়ে মানুষকে হাসানোর কাজ। কি মারাত্মক সহাবস্থান! মরুভূমির কাঁটা গাছের মত এক টুকরো সবুজ মন তার ও ছিল সেটা হঠাৎ বসন্তের ফুল সাজিয়ে জেগে ওঠে। পদ্মার প্রেমের জোয়ারে মন তখন আকুলায়। চেপে রাখতে গিয়েও ধরা পড়ে। প্রেম কোনোদিন গোপন থাকে না। এক্ষেত্রেও তাই প্রথমে মারধোর, তারপর কাজ থেকে বের করে দেওয়া। মানুষের মন বেশি অপমান ও সহ্য করে নেয় কিন্তু নিজের প্রেমের কাছে পরাজিত হওয়ার যন্ত্রনা বুঝি সহ্য করতে পারে না। ফলস্বরূপ মেরে তারপর নিজেকে শেষ করে দেওয়া। গল্পের চলন, লেখনী কোথাও থামতে দেয় না। তত্ত্বের কচকচি নেই, তথ্য ভরে জর্জরিত নয়। একটি সুন্দর অথচ বীভৎস গল্প মনে দাগ কেটে যায়।
রিভিউটি লিখেছেনঃ payel Mukherjee
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।