হিমঘুম - বাপ্পী খান Himghum by Bappi Khan

হিমঘুম - বাপ্পী খান Himghum by Bappi Khan

হিমঘুম
 বাপ্পী খান


গল্পের শুরুতে জানা যায় কোনো এক ড্রাগের অতিরিক্ত ব্যাবহারে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোরহান লতিফর ছোটছেলের মৃত্যু হয়।
বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইকবাল হোসেন ও তার তিন বন্ধু ওরফে বিজনেস পার্টনার (সাংবাদিক মাহমুদ রহমান অসীম পাল স্বর্ণ ব্যাবসায়ী, শোয়েব তপন) ইকবাল হোসেন এর বাড়িতে মিলিত হয় বোরহান সাহেব কে বোঝায় যে তার ছোট ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ এর ব্যাবস্থা তারা করে ফেলেছে, ওয়ার্ড কমিশনার আরমান সাহেব এর পেছনে আছে তাকে তারা শাস্তি দেবে কারণ তিনিই মাদক চক্র চালান (কিন্তু সত্যি হলো আরমান সাহেব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাজ করে চলেছেন), তাই বোরহান সাহেব যেন আবার সব ভুলে তাদের সাথে বিজনেস এ যোগ দেন (কারণ তিনি একজন অর্থবান ব্যাক্তি) কিন্তু তিনি মনস্থির করতে পারেন না তিনি একজন সৎ ব্যাক্তি ছিলেন কিন্তু নারী ঘটিত ঘটনায় ফেঁসে গিয়ে তার মন্ত্রিত্ব যায় এবং তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান এই ঘটনার পর তার বড় ছেলে কোনো অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে বিদেশে চলে যায়।
সেইমতো ইকবাল হোসেনের লোকেরা আরমান সাহেব কে হত্যা করে এবং তার পরিবারকেও হত্যার চেষ্টা করে কিন্তু কেউ আরমান সাহেবের পরিবারকে ইকবাল হোসেনের লোকেদের হাত থেকে রক্ষা করে। তার পরই হঠাৎ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইকবাল হোসেনর বন্ধুরা এক এক করা মারা যেতে শুরু করে এবং এইগুলি খুন না স্বাবাভিক মৃত্যু তা বোঝা যায় না, হোমিসাইড অফিসার কায়সার কবির ও হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট প্রধান ডক্টর আদনান মৃত্যুর কারণ জেনে অবাক হয় যায় যে এরা সবাই মারা যাচও সাপের কামড়ে এবং তারা এই বিষয় জানতে সাহায্য নেন স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনর দুই তরুণ তরুণী মাহফুজ ও অনন্যা র আর জানতে পারে যে যে সব সাপের কামড়ে এরা মারা যাচ্ছে সেগুলি এই সময় বা এই এরিয়াতে পাওয়া যায়না প্রায় অসম্ভব । আর সাপ গুলো যদি এসেও থাকে কোনো ভাবে এল এবং তা কোথা দিয়ে চলে গেল? যেন গায়েব হয়ে গেছে।
ঠিক এই সময়ে বোরহান সাহেবের বড় ছেলে ফিরে আসে যে বিদেশ চলে গিয়েছিল যখন তার বান্ধবী ও তার পরিবারকে কে নৃশংস ভাবে হত্যা করে তারই বাবার নিযুক্ত গার্ডরা এবং সে এই গার্ড দের মেরে যখন বাবার কাছে এই চক্রান্তের কথা বলতে আসছিল ঠিক তখনই সে এক একসিডেন্ট এ পঙ্গু হয় যায় এবং বিদেশে চলে আসে এবং সেখানে এক দম্পতির সাথে তার দেখা হয় র তারা তাকে তার প্রতিশোধ নিতে তাকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে তৈরি হতে সাহায্য করে।
অফিসার কায়সার কবির সন্দেহে করে যে হয়তো এই হত্যা গুলোর সঙ্গে গালিব মির্জা বলে একজনের কোনো সম্পর্ক আছে যে আবার তার সব সম্পত্তি ও উপার্জন গরীব, অনাথ দের জন্য দান করে বৃদ্ধা আশ্রম ও চালান নিজের বাড়িতে। যদিও সে কয়েক বছর আগেই দেশে ফিরে সে এই সব করছে সারা দিন সে ফেরি তে করে বিভিন্ন | সামগ্রী বিক্রি করে উপার্জন করে এবং বৃদ্ধাআশ্রম চালান যদিও কেউ সামনে থেকে তার চেহারা দেখেনি, তিনি কোনো মিডিয়া র কাছে আসেন নি তিনি অদ্ভুত পোশাক পরে ঘুরে বেড়ান, তিনি সারা দিন কোথায় থাকে তার কোনো সন্ধান কেউ জানে না। অফিসার কায়সার কবির মনের মধ্যে দ্বন্ধ নিয়ে তাকে ধরতে গেলে গালিব মির্জা তাদের উপর গুলি চালায় এবং কবির ও গুলি চালায় তাতে কবির নিশ্চিত যে একটা গুলি তো তার লেগেছে কিন্তু সেই অবস্থাতে গালিব একটা গ্যারেজের মধ্যে ঢুকে যায় এবং তার একটাই গেট প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের দল নিয়ে কবির ও তোকে সেই গ্যারেজে কিন্তু গালিব কে তাঁরা দেখতে পায়না যেন সে উবে গেছে তার বদলে তারা একটি সাপ আবিষ্কার করে সেখান থেকে। যারা সেখানে ছিল তারা বলতে লাগে গালিব কি কোনো মানুষ না অন্য কিছু।
কবির এই অপেরেশন এর পর গালিব কে খুঁজতে গিয়ে জানতে পারে সে একবারই এক রেডিওতে ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলো সেখানকার আর জে তাহমিনার কাছে কবির তার কাছে যায় কিন্তু অদ্ভূতভাবে গালিবের রেডিও স্টেশন এ ঢোকার বা আসার বা বেরোনোর কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়না।
 ঠিক এই সময় যখন কবির কিছুই সমাধান করতে পারছেনা তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইকবাল হোসেন পুলিশের স্পেশাল টিম এর এক সদস্যকে আরহাম মুহাতাসিম কে কবির এর সাথে কাজ করতে পাঠায়। এর মধ্যেই খবর আসে যে একটা বেআইনি ড্রাগের কারখানায় দারুন বিস্ফোরণ ঘটে পুরো কারখানা নষ্ট হয় যায় এবং সেখান থেকে দুষ্কৃতিকারীরা পালানোর সময় এক জনকে অপহরণ করে এবং সে আর কেউ নয় প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বড় ছেলে।
এখন প্রশ্ন হলো কে এই গালিব সে কি মানুষ না অন্য কিছু? কেন এই মৃত্যু গুলো হচ্ছে এরপর কার পালা বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর? যদি তাই হয় তো কেন? তিনি কি করবেন?
বোরহান লতিফ সাহেবর বড় ছেলে কি জানতো? কার বিরুদ্ধে সে প্রতিশোধ নিতে চাইছিল? এই হত্যা গুলোর সাথে কি তার কোনো যোগাযোগ আছে? তাকে বিদেশে যে দম্পতি সাহায্য করে ছিলো তারা কারা? কি তাদের উদ্দেশ্য?
বোরহান সাহেব কি তার উপর যে আরোপগুলো দেওয়া হয়েছিল তার থেকে মুক্তি পাবেন? পেলেও তার জন্য তাকে কি হারাতে হবে? কবির কি এই কেসের সমাধান করতে পারবে? অপরাধীকে কি ধরতে পারবে?
কে এই স্পেশাল অফিসার আরহাম?
কোনো সম্পর্ক আর জে তাহমিনা আর গালিব মির্জার? সবকটা প্রশ্নই কি একটা সূত্র বাঁধা মা আলাদা আলাদা? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানতে হলে বইটি পড়তেই হয়।
৪০০ পাতার বই হলেও গতিশীল এবং জটিল প্লট এবং সুন্দর টুইস্ট এর জন্য কোথাও বইটা পড়তে গতিহীন লাগবেনা। অনেক কটা ঘটনাকে সুন্দর ভাবে এক জায়গায় এনে শেষ করেছেন লেখক।
অতিরিক্ত পাওনা সাপেদের বর্ণনা ও কিছু সুন্দর ছবি সাপেদের যা বইয়ের শেষে QR কোড থেকে পাওয়া যাবে।
প্রতিশোধ, থ্রিলার, প্রকৃতি রাজনীতি সব কিছুর মিশ্রণ বাপ্পী খানের হিমঘুম।
থ্রিলার প্রেমীদের বইটা ভালোই লাগবে।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Purna

Post a Comment

0 Comments