বইয়ের নাম- ১৪ই ফেব্রুয়ারী ও তার আগের কাহিনী
লেখকের নাম- বুদ্ধদেব হালদার
প্রকাশনী- পালক পাবলিশার্স
দাম 355/-
আলোচনার শুরুতে 'Anatidaephobia' নামক এই মানসিক রোগের বিষয় ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। ডাক্তারি ভাষায় "A person suffering from this condition feels that somewhere in the world, a duck or goose is watching him or her. অর্থাৎ অনতিদায়েফোবিয়া হলো এমন এক মানসিক রোগ, যেখানে সেই ব্যক্তিটির মনে হবে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে একটি হাঁস আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে। লেখকের দাবি অনুসারে এই বিষয় নিয়ে বাংলা ভাষায় শুধু না, অন্য কোনো ভাষাতেও নাকি লেখা হয়নি।
এবার উপন্যাসটা নিয়ে আলোচনা করা যাক। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র যিনি, তিনি একজন কবি। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকার পরেও তিনি হঠাৎ করে এসব থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নিলেন। এরপর একটি প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করলেও সেটিও কিছুকাল পর ছেড়ে দেয়।
এইভাবেই ধীরে ধীরে সবকিছু থেকে নিজেকে একা করে নিতে চাইছে। আর এর জন্য তার বাবা মাও সবসময় তারউপর খিটখিট করতো। এইরকম এক আবদ্ধ জীবনে যুক্ত বাতাস বলতে ছিলো পাড়ার চায়ের দোকানের একটি ছেলে, যে তার বাল্যকালের বন্ধু। আবার সেই বন্ধুটার মধ্যে এক অলৌকিক শক্তি ছিলো। সে কোনো মানুষের মৃত্যুর আগেই সেই মানুষটার গা থেকে একপ্রকার গন্ধ পেত। যাইহোক, এছাড়াও অন্তরা, রণিতা ও পর্না নামের ওজন বান্ধবীও ছিলো।
যখন সে নিজেকে ধীরে ধীরে সব কিছুথেকে নিজেকে লুকিয়ে নেওয়া শুরু করছে ঠিক তখনই সে দেখতে পায় কোনো না কোনো জায়গা থেকে একটি হাঁস তাকে অনুসরণ করছে। বাসেতে, লাইব্রেরীতে, রাস্তা ঘাটে, ঘরেতে সব জায়গায় হাঁস দেখতে পাচ্ছে। এর ফলে যেমন সে ভয়ও পাচ্ছে তেমনই নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছে। কারণ কেউ যদি সারাক্ষণ অনুসরণ করে, তাহলে তার পার্সোনাল স্পেস বলে কিছুই থাকছে না। অবশেষে 2টো মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে দ্বারস্থ হলেও তেমন কিছু সুবিধে করতে পারেনি।
এবার বইটি পরে আমার প্রতিক্রিয়া বলি। বইটির মূল বিষয়বস্তু হলো "Anatidaephobia"। এই রোগ বিষয় অনেক কিছু জানার আকাঙ্খায় উপন্যাসটা পড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু এই রোগের বিষয় তেমন কোনো ব্যাখ্যা গোটা উপন্যাসে পেলাম না। এমনকি, এই রোগটার উপশমেরও ঠিকঠাক ব্যাখ্যা নেই। তবে লেখকের এটা লেখা তার প্রথম উপন্যাস, আর প্রথম উপন্যাসেই এমন একটা বিষয় তুলে ধরার জন্য বাহবা জানাই।
[এটা আমার এখানে প্রথম রিভিউ। যদি ভুলভ্রান্তি কিছু হয়ে থাকে তো নিজগুণে ক্ষমা করবেন।]
রিভিউটি লিখেছেনঃ শেষের কবিতার অমিত
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।