শেষের কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Shesher Kabita pdf by Rabindranath Tagore

শেষের কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Shesher Kabita pdf by Rabindranath Tagore

উপন্যাস – শেষের কবিতা।
লেখক – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

শ্রেষ্ঠ কবিতা নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা আমার নেই, রিভিউ আমি লিখছি না, পড়েছি বলে দু-চার কথা লিখে রাখছি , মতামত ব্যাক্তিগত তবুও আলোচনা করলে করতে পারেন।
শেষের কবিতা সকলের জন্য নয়, এ এমন এক উপন্যাস যা শুধুমাত্র পাঠকরে অনুধাবন করা শক্ত, এই উপন্যাস উপভোগ করতে হয়, অনুধাবন করতে হয়। এই উপন্যাস পড়ার একটা বয়স আছে, আমার মনে হয় নির্দিষ্ট বয়স না আসলে এই উপন্যাস না পড়াই শ্রেয়, আর এই নির্দিষ্ট বয়সের পরিমাণটা ঠিক কতো তা বলা মুশকিল, তবে মানসিক দিক থেকে একটু সমর্থ না হলে এই উপন্যাসের বক্তব্য হৃদয়ঙ্গম করা শক্ত। উপন্যাসের বিষয়বস্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়ে খুবই সাধারণ সামান্য হলেও, যস্মিন্ কালে এই উপন্যাস লিখিত সেই কালের দৃষ্টিতে এই উপন্যাসের বিষয়বস্তু অত্যন্ত লোভনীয়। এই উপন্যাসের প্রাণ হলো লেখকের শৈলী, সামান্য ঘটনার বর্ণনা এত কাব্যিক শৈলীতে এতো শাব্দিক উজ্জ্বলতায় ভরিয়ে দিয়েছেন যে অতিমানবীয় লাগে মাঝে মাঝে। সংস্কৃতে মেঘদূত কালিদাসের শ্রেষ্ট রচনা এই কারণে নয়, যে তার গল্প অত্যন্ত হৃদয়বিদারী, বরং শ্রেষ্ঠ কারণ তার কাব্য শৈলীর জন্য, বাচনভঙ্গিমার জন্য, মেঘের যাত্রাপথের বর্ণনা যেভাবে করেছেন, কিংবা নগরের যে বর্ননা করেছেন সেখানে যেন শব্দ দিয়ে ছবি আঁকা আছে। সেরকমই শেষের কবিতা গল্পের জন্য শ্রেষ্ঠ নয়, শ্রেষ্ঠ হলো তার কাব্যিক গুণের জন্য। বাংলা সাহিত্যে কাব্যগুণে ভরপুর উপন্যাস এহেন কমই আছে। শেষের কবিতা উপন্যাসে ব্যাবহৃত শব্দাবলীর বিন্যাস অত্যন্ত সুচারু ও মার্জিত। সাহিত্যের মধ্যেও রবীন্দ্রনাথ দার্শনিক স্বকীয় চিন্তা ভাবনার প্রবেশ ঘটিয়ে কাব্যকে দর্শনের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন বললেও অত্যুক্তি হয়না। মানব মনের হদিস পাওয়া যায় এই উপন্যাসে। অমিত চরিত্রটি অনেকের ভালো লাগে অনেকের লাগেনা, তার কারণ তার মধ্যে অহমিকা বোধ অনেক নিতে পারে, অনেকে পারেনা, কিন্ত অমিতের মুখে যে সকল সংলাপ আমরা পাই তা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে, শুধু অমিত কেন লাবন্যর চরিত্রেও স্বল্প সংলাপে আমরা মুগ্ধ হতে বাধ্য হই। এই উপন্যাসের প্রাণবিন্দুই হলো প্রেম-দর্শন। হ্যাঁ প্রেম তো দর্শনই। প্রেমকে ভালোবাসাকে যদি প্রকৃতই আত্মস্থ করতে হয়, তাহলে একবার পড়ে দেখা যেতেই পারে এই উপন্যাস। আমি যাহা অনুধাবন করেছি তা এই- ভালোবাসার অর্থ হলো ত্যাগ। ভালোবাসতে গেলে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। একসাথে থাকাটা ভালোবাসা নয়। অমিত লাবন্য পরস্পরকে ভালোবাসিলেও বিবাহে আবদ্ধ হলোনা, একে অপরকে ভালোবাসবে বলে এহেন দৃষ্টান্ত বড়ই দুর্লভ। এবং আরোও একটা বিষয় বড়ো ভালো লাগলো, তা হলো ভালোবাসায় স্বাধীনতা, যা আজ আমরা ক্ষুণ্ন করে চলি। এই উপন্যাস আমাদের শেখায় কিভাবে ভালোবাসিলে ভালোথাকা যায়।

রিভিউটি লিখেছেনঃ রাহুল

Post a Comment

0 Comments