শেষ মৃত পাখি - শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য Sesh Mrita Pakhi || Shakyajit Bhattacharya

শেষ মৃত পাখি - শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য Sesh Mrita Pakhi || Shakyajit Bhattacharya

বইয়ের নাম _ শেষ মৃত পাখি
লেখকের নাম_শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
পাবলিকেশন _সুপ্রকাশ
প্রথম প্রকাশ _1 সেপ্টেম্বর 2022
মূল্য_520 টাকা
পেজ_ 475
জনরা_ রহস্য কাহিনী


প্রথমেই বলে রাখি আমার পড়া লাস্ট 10 বছরের রহস্য উপন্যাসের মধ্যে আলোচ্য উপন্যাস টি সবার উপরে রাখবো।সেটা বাংলা সাহিত্য বা বিদেশি উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।আপনারা যারা কিয়েগো হিগাশিনো লেখা "দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স" অনুবাদ_সালমান হক পড়েছেন আমার মতে এটা সেই পর্যায়ের বা তাকেও ছাড়িয়ে গেছে।বইটির প্রচছদ এতো সুন্দর সেটা কাহিনী ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

এবার আলোচ্য বইটি নিয়ে আলোচনা করা যাক। দার্জিলিং এর পট ভূমিকায় নিয়ে লেখা।
দার্জিলিং ও এই উপন্যাস একে অপরের পরিপূরক একটা ছাড়া আরো একটা না থাকলে কোথায় যেনো একটা খামতি থেকে যেতো বলে মনে হতো।
যেহেতু এটা একটি রহস্য উপন্যাস।( আমার মতে লাস্ট 10 বছরে এটা বেস্ট) সেহেতু প্লট এর টুইস্ট আর এর রহস্য বিশদে আলোচনা করবো না।
শুধু বলতে পারি উপন্যাস টা অনেক টা পেঁয়াজের মতো।
তার প্রতিটি অধ্যায় এর মধ্যে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে।আপনি একটি করে অধ্যায় পড়বেন। আর একটি করে পেঁয়াজের আস্তরণ খুলবেন। শেষ 100 পাতা রুদ্ধশ্বাস আর টুইস্ট এর পর টুইস্ট আপনাকে প্রতি মুহূর্তে কাহিনীর সঙ্গে জড়িয়ে রাখবে।শেষ অব্দি গিয়ে আপনি যখন রহস্য উদ্ধার করবেন আপনি সেই মুহূর্তে পেঁয়াজের শেষ খোলস অব্দি পৌঁছে যাবেন। আর ভাববেন এতক্ষণ ধরে টানা পড়ে আপনার হাত পা ঘাড় ব্যাথা ওহহ সর্বশেষ চোখ ব্যাথা করলেও আপনি যে এতো কষ্ট করে এইই উপন্যাস টি পড়েছেন।আপনার সব পরিশ্রম সার্থক আর গ্রান্টি দিচ্ছি আপনি বইটা শেষ করে আপনি আরো একবার বইটা পড়তে বাধ্য।

যেহেতু এটা একটা রহস্য উপন্যাস ।
তাই স্পয়লার বাঁচিয়ে যতটা পারি বলার চেষ্টা করবো।আর যেহেতু এটা আমার মতে বেস্ট রহস্য উপন্যাস তাই বিষদে আলোচনা করবো না।
আপনাদের পড়েই এইই বইটার পুরো মজা আর আনন্দ নিতে হবে।আমি শুধু চেষ্টা করবো আপনারা যাতে পড়ার জন্য বইটা আপনাদের উইশ লিস্ট রাখুন। আপনাদের বইটা পড়ার পেছনে ঠেলে দেওয়াই আমার কাজ।
স্পয়লার বাঁচিয়ে সংক্ষেপে বলতে গেলে বইটিতে প্রধানত তিনটি মূল চরিত্র।আর এদের কেন্দ্র করে পুরো উপন্যাস টি লেখা হয়েছে। প্রধান ওহ আমাদের গল্পে সত্য উদ্ধার করেন মহিলা সাংবাদিক তনয়া ভট্টাচার্য। তার সাথে আছে অমিতাভ মিত্র ও অরুণ চৌধুরী দুইজন লেখালেখি করে।প্রথমজন পাগলাটে কবি আর দ্বিতীয় জন রহস্য উপন্যাস লেখেন। দুই জনের খুব বন্ধুত্ব। কিন্তু ঘটনা ক্রমে অমিতাভ খুন হলে সব সন্দেহ গিয়ে পড়ে তার বন্ধু অরুণ চৌধুরী উপরে। প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যান কিন্তু 44 বছর ধরে পাঠক সমাজের কাছে বার বার এক প্রশ্ন সম্মুখীন হতে হয়।আর সন্দেহ মুক্ত তিনি তার জীবনে কোনদিন হতে পারেননি।45 বছর পর এইই অতীত এর এইই অমীমাংসিত রহস্য উদ্ধার আর এর সঠিক কারণ ওহ আসল অপরাধী ওহ রহস্য পুনরুদ্ধার করার জন্য দার্জিলিং এ উপস্থিত হয় তনয়া ভট্টাচার্য।
পাঠক হিসাবে এইই রহস্য উপন্যাস টি এতো অভিনব বৃষ্টিস্নাত দার্জিলিং এর পটভূমিকায় এই গল্পে আছে 70দশকের নকশাল আন্দোলন,সেই সময়ের বাংলা কবিতা,লিটিল ম্যাগাজিন,আর তৎকালীন বাম সময়ের কবি, সাহিত্যিক স্বাধীন মত প্রকাশের উপর নেমে আসে রাষ্ট্র ওহ শাসকের নির্মম আঘাত এই গুলো সব নিয়ে লেখক গল্প বুনেছেন। এই গুলো সব গৌণ।এইই গল্পের লেখক এক এক করে প্রতি চ্যাপ্টার এ জাল বুনেছেন আর শেষ 60 পাতা সেই রহস্য চরম অবস্থা ওহ রহস্যের জাল ছড়িয়েছেন । গল্পের প্রতিটা অধ্যায় শুরু হয়েছে একটা কবিতার কিছু লাইন দিয়ে আর প্রতিটা টা অধ্যায় এ আছে অনেক চিঠি। যেগুলো মন দিয়ে পড়তে হবে । এইভাবে পঁয়তাল্লিশ বছর আগে খুন হয়ে যাওয়া একটা অমীমাংসিত রহস্য কে কেন্দ্র করে এমন বই যে লেখা সম্বভ টা আলোচ্য বইটা পাঠ না করলে আপনার বুঝতে পারবো।

আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো আপনার অতি অবশ্যই এই বইটা পাঠ করবেন। আর না পড়লে নিজেকে এতো ভালো বই পড়ার থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন।
বইয়ের নাম "শেষ মৃত পাখি"
আর লেখক "শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য"

রেটিং _ এটা এমন একটা বই আমি মনে করি প্রতি পাঠক হিসেবে তাদের উইশ লিস্ট অতি অবশ্যই এই বইটা রাখা উচিত। আর রহস্য উপন্যাস হিসাবে বাংলা সাহিত্য এর স্থান প্রথম দিকে থাকবে
তাই আমার ব্যাক্তিগত ভাবে আমি ১০ এর মধ্যে ২০ দেবো

রিভিউটি লিখেছেনঃ বাপনদা

Post a Comment

0 Comments