জোনাকিদের বাড়ি
লেখক: স্মরণজিৎ চক্রবর্তী
অনেকেই অনেকরকম ঋণাত্মক মন্তব্য করলেও আমার এক অন্যতম শান্তি পাবার জায়গা স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর উপন্যাস। হোক তাঁর নায়িকারা রূপকথার দেশের, অন্য গ্রহের বা "মুকুট কপাল"; তবুও তাদের চাওয়া- পাওয়া, চেয়েও না পাওয়া- এগুলো যেন আমাদের প্রত্যেকের। হোক তাঁর গল্পের প্লট একঘেয়ে( অনেকের মতে), তবু দিনের শেষে যতই ক্লান্তি থাক তা পড়লে আপনা আপনিই মনটা হাল্কা হয়ে যায়। আর চরিত্রের নাম নির্বাচনে তো উনি তুলনাহীন!
'জোনাকিদের বাড়ি', দুই প্রজন্মের গল্প, এক প্রজন্মের অসম্পূর্ণতা আরেক প্রজন্মে পূর্ণতা পাওয়ার গল্প। কাজু- পেখমের গল্প, নিশান- রাধিয়ার গল্প, জয়- নোঈ- পুশকিনের গল্প, আর অবশ্যই 'মাহির'দের গল্প। একদিকে যেমন বিশাল বিত্তবান রাধিয়ার জীবনের খুঁটিনাটি, অন্যদিকে দারিদ্র্যের জন্য নিজের শখ আহ্লাদ স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া মাহিরের জীবন। এই চরম বৈপরীত্যের ভিতরে আলো পড়েছে আরো অনেক চরিত্রের ওপর, আলো পড়েছে শেষ হয়েও এক নতুন শুরুর ওপর, আলো পড়েছে ঝিকুদার 'বিলকিস' হয়ে কোলকাতা ছুঁয়ে সোনাঝুরির ওপর, জোনাকিদের বাড়িতে। এ আলো এক নতুন শুরুর আলো। এ আলো আশার আলো। এ আলো জোনাকিদের আলো।
"অন্য কোনও নদীর পাশে দাঁড়িয়ে ওঠে ঘুম
গাছের পাতায় শেষ হল প্রায় বাদামি মরসুম
কাঁধের ঝোলা, রুপোর লকেট, ফেরত আসা খাম
শূন্য আমার বুকপকেটে তোমাকে রাখলাম
তুমিও রেখো আমার তারা, নৌকোবেলার ছই
এই জন্মের অনেক আগেই আমরা কিছু হই
ভাবতে আমার অবাক লাগে! ভাবতে জীবন শেষ...
তোমার থেকে দূরের বলেই, দিন যেন দরবেশ
ভিক্ষে আমার রাজার মোহর, অন্ন সোনার ক্ষীর!
আমার হয়ে তোমার কাছে থাকুক জোনাকি..."
রিভিউটি লিখেছেনঃ Souvik Sadhukhan
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।