আমার মা'র বাপের বাড়ি
এটি আমার পড়া রাণী চন্দর প্রথম বই। কোন গল্প, উপন্যাস নয়। আটপৌরে, সহজসরল ভাষায় লেখিকার মামারবাড়ি থাকার বর্ণনা। ছোটবেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে দিদা যেমন গল্প শোনাত, অনেকটা সেই রকম।
লেখিকার বাপের বাড়ি ঢাকায় আর মামারবাড়ি বিক্রমপুরের গঙ্গাধরপুর নামক গ্রামে। বাবা মারা যাওয়ার পর কয়েকবছর মায়ের সঙ্গে সেখানে থাকতেন তাঁরা। সেই যাপনের চিত্র এই বইয়ে ফুটে ওঠে।
বেশ কয়েকটি পর্বে সেজে আছে এই বই। গ্রামের বাড়ির বর্ণনা, সেখানকার মানুষজন, পোশাক, সুখ, দুঃখ, সংস্কৃতি, পুজোআচ্চা, বারব্রত সবকিছু সুচারুভাবে ধরা আছে। পুণ্যিপুকুর ব্রত, বিয়ে, অধিবাস, বধূবরণ গ্রামীণ জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছাপ ফেলে যায়। নদীতীরের গ্রামদেশের কত না মাছ আর তাদের ধরার কথা, গ্রাম্য মেয়েদের অবসরকালীন আলপনা চোখের সামনে ফুটিয়ে তোলা, আর আছে দিদা ঠাকুমাদের হাতের খাবারের বর্ণনা, ক্ষীরপাটালি, আমসত্ত্ব, নারকেলি গুড় - পড়তে পড়তে জিভে জল আসে। এছাড়াও, পলতে কাটা, কাঁথা সেলাই কত কাজ ছড়িয়ে থাকে।
আসলে এ বই মায়ায় মোড়া। এ লেখা আমাদের ফেলে আসা সময়ে ঘুরিয়ে আনে। ছুটতে থাকা সময়ের ফাঁক গলে কিছুক্ষণ চোখে মায়ার কাজল পরে নিতে যারা ভালোবাসি, এটি একান্তই তাদের বই।
'আমার মা'র বাপের বাড়ি'
লেখিকা - রাণী চন্দ
প্রকাশক - বিশ্বভারতী
রিভিউটি লিখেছেনঃ Saheli
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।