আধার রাতের বন্ধু – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত Adhar Raater Bonhu by Himadrikishore Dasgupta

আধার রাতের বন্ধু – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত Adhar Raater Bonhu by Himadrikishore Dasgupta

বই আধার রাতের বনধু
লেখক – হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
 বিষয় - ভৌতিক ছোটগল্পের সংকলন
প্রকাশক ও প্রথম প্রকাশ – শিশু সাহিত্য সংসদ, ২০১২ 
 

হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত মানেই কৈশোরের মনোরম পাঠ। কখনো রোমাঞ্চকর অভিযান, কখনো ভূতের গল্প, কখনো বা কল্পবিজ্ঞানের গল্প। বিশেষ করে কিশোরদের জন্য লেখা হলেও পড়তে বসলে। বড়দেরও চমৎকার সময় কেটে যায়। আর নানা রকম কাজের ব্যস্ততার মধ্যে একটু মনোরম সময় কাটানোর জন্য, বেশ ভালো লাগার কিছু মুহূর্ত তৈরি করার জন্য হিমাদ্রিকিশোরের লেখা চমৎকার সঙ্গী হতে পারে। আলোচ্য গল্পগ্রন্থটি সাতটি গল্পের সংকলন। প্রতিটিতে ভূত এসেছে
নানাভাবে।
গল্পগ্রন্থের নাম শেষ গল্পটির নামে আঁধার রাতের বন্ধু। এখানে ভূত একেবারে অপরিচিত লেখক। নিজের লেখা ভূতের গল্পটি সম্পাদক বন্ধুর কাছে যখন সে পাঠিয়েছে তখন অবশ্যই সে মানুষ ছিল। গল্পটি যথেষ্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও অপরিচিত কারোর লেখা বলে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। গল্পের সম্পাদক বনধুর কাছে ওকালতি না হোক এক ধরনের শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যে মৃত মানুষটি এসেছেন যে নামী লেখকের গল্প সব সময় শ্রেষ্ঠ হয় না।
ধূর্জটিবাবুর প্ল্যানচেট গল্পে ভূত কিছুটা রহস্য গল্পের গোয়েন্দার মতো, যে নিজের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মানুষটিকে সরাসরি এসে চিহ্নিত করে গেছে।
মৃত্যুযোগ গল্পটিতে ভন্ড জ্যোতিষাচার্যের কাছে তার এককালের
উপেক্ষিত শিক্ষাগুরুর ফিরে আসা এবং সেই অনিবার্য সত্যটি জানিয়ে যাওয়া যে মানুষের জন্ম মৃত্যুর বিধান কোনো জ্যোতিষী বদলে দিতে
পারে না।
বিকেলের আলোয় গল্পটি ভারি মনোরম। দুই প্রৌঢ় বনধুর দীর্ঘদিনের
পরিকল্পনা, মৃত্যুর পরে একই কবরস্থানে পাশাপাশি দুটি দেবদারু গাছের নিচে শুয়ে থাকা। দুই বন্ধু কি করে মৃত্যুর ওপারে এসে নিজেদের ইচ্ছে পূরণ করলে তাই নিয়েই একটি মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প।
সাঁত নম্বর খাদান এক দায়িত্ববোধসম্পন্ন ভূতের কথা বলে। কয়লাখনির ম্যানেজার যিনি খুনি দুর্ঘটনা কিছু শ্রমিকের মারা যাবার পরেও মৃত শ্রমিকদের প্রতি নিজের শেষ কর্তব্য করে যান।
জগবনধুর হারমোনিয়াম গল্প এক দরিদ্র শিল্পী ও তার পরিবার জীবনের কাহিনী এবং অবশ্যই এক সৎ ভালোমানুষো গল্প। যে ভালোমানুষের
কাছে সাহায্যর জন্য ভূতও সহজে আসতে পারে।
যে গল্পটি একটু শিহরণ জাগায় এবং অবশ্যই যথেষ্ট ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে সেটি শ্রাঙ্কেন হেড। মৃত মানুষের মাথা শুকিয়ে মুখোশ বানানো আদিবাসী বর্বরতার সঙ্গে এক হতভাগা মত পর্যটকের ভাগ্য জড়িয়ে যাওয়া এবং নিজের মৃত মাথাকে নিজেই ফিরে পেতে কুড়ি বছর ধরে অপেক্ষা করার গল্প।
ছোটোদের জন্মদিন বা এই জাতীয় কোনো উৎসব উপলক্ষে এই বই উপহার দিয়ে দেখতে পারেন। আজকে বিশেষ করে বাংলা বই সম্পর্কে বিমুখ ছোটোদের নিজেদের ভাষা ও সাহিত্যমুখী করতে বইটি আগ্রহ জাগাবে নিশ্চয়ই।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Bubu

Post a Comment

0 Comments