বই : তেরো নদীর পারে
লেখক : শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশক: ওয়েস্টল্যান্ড (২০১৮)
মূল্য: ২৭৫ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৮৪
তেরো নদীর পারে নামটি শুনে রূপকথার বা গভীর দর্শনের চিন্তাভাবনা সমৃদ্ধ কাষ্ঠল গ্রন্থ মনে হলেও হতে পারে; কিন্তু মনে হ্ওয়ার বিপরীতে এই বইয়ের (উপন্যাস বা মিনি উপন্যাস নভেলা জাতীয় বলা যায়) ঘটনাটি এমন একটি সময়কে সাক্ষ্য করে রচিত, যেখানে সন্ত্রাসবাদ ও হিংসা প্রতিশোধ স্পৃহার নৃশংস দাবানলে জ্বলছে সারা পৃথিবী । বাস্তব কিছু ঘটনা অবলম্বনে রচিত কাল্পনিক গল্প কালো মলাটের মাঝখানে পরিবেশিত হয়েছে ।
গল্পের গতি অনায়াসে বিভিন্ন সময়ের গতিপথে আনাগোনা করে - সে প্রত্যন্ত গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নিজের আত্মীয়দের হাতেই যৌন হেনস্থার নির্মম শিকার রাজেশ্বরী ('রাজু') হোক, অথবা বাবা মায়ের সাথে নিষ্পাপ আনন্দ করতে প্যারিসে যাওয়া হাফিজ্ই হোক। নির্দিষ্ট এক সম্প্রদায়ের বা ধর্মের মানুষ হবার জন্য যার কপালে জোটে এমন কিছু লাঞ্ছনা, যার ফলাফল হয় সুদুরপ্রসারী। এছাড়াও আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে আরও অনেক বর্ণময় চরিত্র, যারা আবার গল্পের শেষে ওতপ্রোতভাবে একে অপরের সাথে ঘটনাচক্রে জড়িত।
সাংবাদিক হিসেবেই অধিক পরিচিত শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় এর নিপুণ কলম চালনার গুনে গল্পের বাঁধন কোথাও আলগা হবার সুযোগ পায় না। প্রতি পরিচ্ছেদের শেষে পরের পরিচ্ছেদ পড়ার জন্য উৎসাহিত করার মত মালমশলা বর্তমান। অনেক বাস্তব ঘটনার সংমিশ্রণ গল্পের সাথে আমাদের একাত্ম হতে সাহায্য করে। তা বাংলাদেশের ব্লগার বা চিত্রশিল্পীদের খুন করার ঘটনাই হোক, আর প্যারিসের রেস্তোরায় ঢুকে দিনদুপুরে কিছু নিরপরাধ মানুষকে হতচকিত করে গুলি করে হত্যা করার ঘটনাই হোক। তবে কিছু কিছু জায়গায় লেখক নিজের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মত অজান্তেই প্রকাশ করে ফেলেছেন, যা হয়্ত এই ধরনের বইতে কাম্য নয়।
রিভিউটি লিখেছেনঃ চকোলেট বয়
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।