বই : তার চোখের তারায়
লেখক : সায়ক আমান
রেটিং : ৪/৫
সায়ক আমানের সাথে পরিচয় সানডে সাসপেন্সের কিছু ছোট গল্পের মাধ্যমে। গল্প 'ছোট' হলে কী হবে, বেশ 'বড়' আকারের ভয় ধরাতো। তারপর আরিন ও আদিম দেবতার উত্থান পড়ে মুগ্ধতার পারদ উপরেই দিকেই উঠেছিল। 'তার চোখের তারায়' পড়ে সেই মুগ্ধতা বেড়েছে বৈ কমেনি।
শুরু করার পর থেকে দারুণ গতির জন্যে থামতে পারছিলাম না কোথাও। এছাড়া যে বর্ণণা দিয়েছেন লেখক, পড়তে পড়তে মাথার ভেতর একের পর দৃশ্য যেন সিনেমার মতো চলছিল। আর ঠিক এইজন্যেই বইটা মনের উপর বেশ ভালোই প্রভাব ফেলেছে।
'তার চোখের তারায়' বইটিকে বেশ অন্যরকম একটা হরর থ্রিলার বলা যায়। যেখানে হরর এলিমেন্টের চেয়ে থ্রিলটাই বেশি ছিল। কিন্তু হরর এলিমেন্টগুলো লেখক জায়গামতো এমনভাবে দিয়ে রেখেছেন যে পড়তে গেলে গা শিউড়ে উঠছিল। এছাড়া পুরোনো জমিদার বাড়ির দুর্দান্ত বর্ণণা হরর এলিমেন্টগুলোকে অন্য একটা মাত্রা দিচ্ছিল।
সব মিলিয়ে বইটি আমার বেশ ভালো লেগেছে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Aadi
তার চোখের তারায়
সায়ক আমান
বিভা প্রকাশনী
এক ধনী দম্পতি সপ্তাহখানেকের জন্য জরুরি দরকারে বিদেশ যাচ্ছেন। ঘটনাচক্রে তাদের দশ বছর বয়সের একমাত্র মেয়ে তুলিকে এক্ষুনি তারা সাথে নিয়ে যেতে চাইছেন না। তাই সাতদিনের জন্য মেয়েকে দেখেশুনে রাখার দায়িত্ব নেয় সুনন্দা ও নিলাদ্রি দম্পতি। তবে থাকতে হবে তাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকা পুরনো একটি জমিদারবাড়িতে।
পুরনো ভগ্নপ্রায় একটি জমিদারবাড়ি। সেটিকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য রহস্য। চার দশকে চারটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যা মনে হলেও আসলেই আত্মহত্যা কিনা কারো জানা নেই। পরিত্যক্ত অন্দরমহলের আনাচেকানাচে দেখা যায় কুয়াশা ঢাকা এক ছায়ামূর্তিকে। কে সে?
জমিদারবাড়িতে গিয়ে সুনন্দার সাথে পরিচয় হয় কোনোভাবে ওই জমিদারেরই উত্তরপুরুষ পায়েল রায় চৌধুরীর সাথে। সময়টা ভালোভাবেই কাটছিল। একদিন কাছের একটি ক্রিশ্চিয়ান গ্রেভইয়ার্ডে ঘুরতে গিয়ে তারা মসক্রপ পরিবারের সমাধি আবিষ্কার করে। কৌতূহল থেকেই প্রবেশ করে তার মধ্যে। খুঁজে পায় মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করা এলিজাবেথ মসক্রপের ডায়েরি। কি লেখা ছিলো ডায়েরিতে?
এরই মধ্যে জমিদারবাড়িতে আরেকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে যায়। দেয়ালে মাথা ঠুকে ঠুকে আত্মহত্যা করেছে সেই বাড়িরই বাসিন্দা অতীন নামের চৌদ্দ বছরের এক কিশোর!
বছর দশেক আগে জমিদারবাড়ির দেখাশুনার দায়িত্বপ্রাপ্তির প্রমাণ নিয়ে হাজির হওয়ার মাস তিনেকের মধ্যে নিজের দোকানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন শশীভূষণ সরকার। মৃত্যুর আগে শশীভূষণ তার স্ত্রীর কাছে বলেছিলেন অতীনের খুব বিপদ। অথচ অতীনের বয়স তখন মাত্র চার বছর! কিছু কি টের পেয়েছিলেন তিনি?
লেখক সায়ক আমানের তার চোখের তারায় খুবই ইন্টারেস্টিং একটা গল্প। সেইসাথে লেখকের লেখনশৈলী এক কথায় চমৎকার ও শক্তিশালী। দারুণ প্লট। ইতিহাস, অভিশাপ, পৌরাণিক আবেশ, রহস্য, রোমাঞ্চ, খু*ন সবই রয়েছে এক মলাটে। গল্পের পরতে পরতে রয়েছে চমক। সবথেকে অসাধারণ চমকটা রয়েছে গল্পের শেষে। তার আগে পর্যন্ত কিছুই ধারণা করতে পারবেন না। সব মিলিয়ে আমার দারুণ লেগেছে। পড়া না হয়ে থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন। আশা করি হতাশ হবে না কেউ।
রেটিং :৩.৫/৫
রিভিউটি লিখেছেনঃ Saiful Islam
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।