কবীর (২০১৮) : অনিকেত চ্যাটার্জি Kabir 2018 Movie

কবীর (২০১৮) : অনিকেত চ্যাটার্জি Kabir 2018 Movie

সিনেমা: কবীর (২০১৮) 
পরিচালক: অনিকেত চ্যাটার্জি 
IMDb: ৫.৯/১০ (৫৯৩) 
আমার রেটিং : ৪/১০ 

ভাবুন তো, আপনি ভুল করে নিজের ব্রেণ খুলে না রেখেই এই সিনেমাটি দেখতে বসলেন যার সাথে অ্যাকশন like bollywood, first action terrorist drama in bengali এসব অতিরঞ্জিত হাইপ জড়িত। এবার প্রথম কয়েকটি দৃশ্যের পরেই আপনাকে দেখানো হচ্ছে, একটি বিশাল বিস্ফোরণের পর পুলিশি তৎপরতা, যেখানে কোনও গাড়িকে নির্দিষ্ট ওই অঞ্চলে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছেনা, সেখানেই বোরখা পরিহিতা ওই মেয়েটিকে (রুক্মিণী) কত সহজেই লিফট দিয়ে দিচ্ছে নিজেকে আবির বলে পরিচয় দেওয়া ওই যুবক (দেব) এবং তাতে ইয়াসমিনের কোথাও ভাবান্তর নেই। এই বুদ্ধি নিয়ে চরিত্র দুটি নিজেদের ফিল্ডে এত নামধারী! আশ্চর্য। 
২৪ ঘণ্টার একটা ট্রেনজার্নি (মমতা ব্যানার্জির দুরন্ত এক্সপ্রেস বাওয়া!! হুঁহুঁ) এবং ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে কাহিনী বলে যাওয়া (সাথে দুর্দান্ত BGM) অবশ্যই দারুন একটা আইডিয়া। পর পর বিভিন্ন সবপ্লোট খুলছে, বিভিন্ন থ্রিল আসছে - কিন্তু এসব কোনও কিছুই প্লটের দুর্বলতা ঢাকা দিতে পারলো না। কেবল Cliche, বহুল ব্যবহৃত কিছু সিন, ভোঁতা ডায়লগ ও মাদাম তুসোর মিউজিয়ামের মোমের পুতুলের মত  অভিব্যক্তিহীন অভিনয় দিয়ে একটা সিনেমাকে উতরে দেওয়া যে যায়না, এটা পরিচালককে বুঝতে হবে। যদিও রুক্মিণী নিজের সাধ্যের মধ্যে চূড়ান্ত চেষ্টা করেছেন কিন্তু আবীর বা কবীরের ভূমিকায় দেব একদম ডামি। তুলনায় ফ্ল্যাশব্যাকে দুজন টেরোরিস্ট চরিত্রাভিনেতাদের অভিনয় ভালো লেগেছে। 

পরিচালকের উদ্দেশ্যও পরিষ্কার হলো না। ধর্মীয় গোঁড়ামির ফলে কীভাবে সন্ত্রাসবাদের উৎপত্তি হয় ও তার পরিণাম - এসব বিষয়ে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করার অভিপ্রায় নিয়ে শুরু করে শেষমেশ সন্ত্রাসবাদের নির্মম পরিণাম দেখিয়েই ক্ষ্যান্ত দেন পরিচালক। আর ট্রেনের মধ্যে অন্যতম মূল চরিত্রের নামাজ পড়া, দুবার কোরআন এর সুরা আওড়ানো (প্রথমবার আবার ভুল ব্যাখ্যা সমন্বিত) - এগুলোর মাধ্যমে কী প্রমাণ করতে চাইলেন উনিই জানেন।

ছবির সিনেমাটোগ্রাফি ও এডিটিং ভালো লেগেছে (দু ঘন্টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন)। অ্যাকশন ছবি বলে খুব প্রমোট করা হলেও অ্যাকশন বিশেষ কিছু নেই , বেশিরভাগই আবীর / কবীর সাহেব দুরন্তর সিটে বসেই কাটিয়েছেন। 

ছবিটি দেখে মনে হলো নির্মাতারা গল্পের তুলনায় চাকচিক্য বজায় রাখার প্রতি খুব বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। আগামী দিনে টেরোরিজম বা অ্যাকশনধর্মী ছবি বানানোর আগে যেনো অন্তত একটা ভালো গল্প সমন্বিত স্ক্রিপ্ট তৈরি করা হয় - না হলে রাধের সাথে কোনও তফাৎ থাকবে না এসব ছবির; যদিও বলিউডে এই বিষয়ে একাধিক ভালো ছবিও হয়েছে।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Chocolate Boy

Post a Comment

0 Comments