হিমু সমগ্র (১ ম খন্ড) - হুমায়ূন আহমেদ Himu Samagra Part 01 by Humayun Ahmed

হিমু সমগ্র (১ ম খন্ড) - হুমায়ূন আহমেদ Himu Samagra Part 01 by Humayun Ahmed

বই- হিমু সমগ্র (১ ম খন্ড)
লেখক - হুমায়ূন আহমেদ
“হিমু সমগ্র” বইয়ের ভূমিকা
হিমুকে নিয়ে কতগুলি বই লিখেছি নিজেও জানি না। মন মেজাজ খারাপ থাকলেই হিমু লিখতে বসি। মন ঠিক হয়ে যায়। বেশি লেখার ফল সব সময় শূভ হয় না। আমার ক্ষেত্রেও হয় নি। অনেক জায়গাতেই ল্যাজে গোবরে করে ফেলেছি। হিমুর পাঞ্জাবির পকেট থাকে না অথচ একটা বই-এ লিখেছি সে পকেট থেকে টাকা বের করল। হিমুর মাজেদা খালা এক বই-এ হয়ে গেলো মাজেদা ফুপু। তবে হিমু যে ঠিক আছে তাতেই আমি খুশি। হিমু ঠিক আছে, হিমুর জড়ৎ ঠিক আছে। তার বয়স বাড়ছে না। সে বদলাচ্ছে না। এই আনন্দ সংবাদ নিয়ে ভূমিকা শেষ করেছি।
সব হিমুকে বন্দি করে যে প্রকাশক বিশাল হিমু সমগ্র বের করলেন তাঁকে (মনিরুল হক, অনন্যা। ধন্যবাদ।
হুমায়ূন আহমেদ
13.11.2006

“হিমু সমগ্র” বইয়ের সূচিপত্র
* ময়ূরাক্ষী
* দরজার ওপাশে
* হিমু
* পারাপার
* এবং হিমু ...
* হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম
* হিমুর দ্বিতীয় প্রহর
* হিমুর রূপারী রাত্রি
* একজন হিমু কয়েকটি ঝিঝিপোকা
* তোমাদের এই নগরে
* চলে যায় বসন্তের দিন
* সে আসে ধীরে
* আঙুল কাটা জগলু
* হলুদ হিমু কালো র‍্যাব

রিভিউঃ
উন্মাদনা, বাতুলতা, অস্বাভাবিকতা মানেই যে মানসিক অসুস্থতা বা ভারসাম্যহীনতা, এই ধারণাটা ভুল। সত্যি বলতে এসবে আধ্যাত্মিকতা নেই, তবে একরকম প্রশান্তি আছে। তা শুধু উন্মাদরাই অনুভব করতে পারে।

রাত জিনিসটা অনেকের কাছেই স্বর্গীয়। সে অনিদ্রারোগীই হোক বা মহাপুরুষ। একটা সম্পূর্ণ দিনের সবচেয়ে প্রাণবন্ত সময় হলো রাত। রাত শুরু হয় 'জিরো আওয়ার' অর্থাৎ ১২ টার পর থেকে৷ নিশি রাতে বোধহয় মন্থর পায়ে হাঁটাই চমৎকার।নদীর ধারে বালির নিচে ঢুকে শুধু পূর্ণিমা দেখে।

ভোজন নিয়ে একটু কথা বলা যাক। কেন জানি, খাদ্যরসিক মানুষদের অসম্ভব ভালো লাগে। কারণ, তারা সকল সমস্যা, যন্ত্রণা, বিপদেও খাবার নিয়েই মেতে থাকে৷ খাদক হতে হলে শুধু খেতে জানলে হবে না। স্বাদটা অনুভব করতে হবে৷ খাবারের প্রতিটা উপাদানের আলাদা স্বাদ আবিষ্কার করতে হবে। রান্না যেহেতু একটা শিল্প। তাই এটা নিয়ে অনেক পড়াশোনা, গবেষণা এবং বাস্তব পরীক্ষা করতে হবে।সে জীবনকে এক উন্মুক্ত পৃথিবীর মতো দেখে। সব কিছু থেকে রসদ নেওয়ার চেষ্টা করে।ভীষণ গম্ভীর পরিস্থিতিতেও মস্করা করার মত সাহস দেখায়।যে কোনো সাধারণ ঘটনার মধ্যে এক গভীর এবং মৌলিক পর্যবেক্ষণ থাকে,এই জন্যই হিমু আর পাঁচ জনের থেকে আলাদা হয়ে উঠেছে।

হিমু আসলে কোনো একটা মানুষের গল্প নয়। বাউন্ডুলে, ছন্নছাড়া, নির্দিষ্ট নিয়মের বাড়িয়ে বেরিয়ে যারা জীবন কে যাপন করে তাদের গল্প।
হিমুদের সবকিছু আত্মসাৎ করার ক্ষমতা আছে কিন্তু তারা ছিনিয়ে না নিয়ে সেটা অর্জন করে নেয়। হিমুদের উপর প্রায় সকলেই বিরক্ত। অনেকেই ঘৃণা করে। দিনশেষে, এরাই হিমুদের প্রেমে পড়ে৷ সুরেলা কণ্ঠ, অপরূপ শ্রী, অমায়িক চাহনি, গোলাপী অধর, স্নিগ্ধ চেহারা, কপালের ছোট্ট টিপ, সুন্দর নীল শাড়ি, প্রেম নয়ন এসব হিমুদের আকৃষ্ট করলেও ছুঁতে পারে না। রাত হয়; হিমুরা বেরিয়ে পড়ে। রাস্তায়-রাস্তায় হাঁটে। ক্লান্ত হয়ে হাঁটে, হনহনিয়ে হাঁটে। গুটিগুটি পায়ে হাঁটে, মন্থর গতিতে হাঁটে। কারণে হাঁটে, অকারণে হাঁটে। কেউ হাঁটতে চাইলে হিমুরা তাকে পাশে নেবে। সাথে হাঁটবে। কেউ হাত ধরতে চাইলে রাগ করবে না। কিন্তু হাত ধরবে না। কারণ, হিমুরা কখনো কারো হাত ধরে না।

সব মিলিয়ে হিমু সিরিজের গল্প গুলো অসাধারণ লেগেছে আমার। আমি ৯/১০ রেটিং দিলাম।

রিভিউটি লিখেছেনঃ 𝚙𝚛𝚊𝚜𝚞𝚗

Post a Comment

0 Comments