★সিনেমা : ᴏɴᴄᴇ ᴜᴘᴏɴ ᴀ ᴛɪᴍᴇ ɪɴ ᴄᴀʟᴄᴜᴛᴛᴀ (২০২১)
পরিচালক : আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত
★★ আসা যাওয়ার মাঝে, জোনাকি আগেই দেখা আর তারপর আদিত্য বাবুর সাম্প্রতিকতম কাজ ᴏɴᴄᴇ ᴜᴘᴏɴ ᴀ ᴛɪᴍᴇ ɪɴ ᴄᴀʟᴄᴜᴛᴛᴀ, টেলিগ্রামের দৌলতে এটাও দেখা হয়ে গেল।
★ সিনেমাটি ইতিমধ্যেই একাধিক বিদেশি চলচ্চিত্রের উৎসবে দেখানো হয়ে গেছে এবং একাধিক পুরষ্কার পেয়েছেন পরিচালক, মুখ্য চিরত্রে অভিনয়ে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসাবে পুরষ্কার পেয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র।
★ সিনেমাটা পুরোটাই শহর কলকাতাকে কেন্দ্র করে।কলকাতার বিভিন্ন মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা-বিশ্বাস, ব্যক্তিগত সমস্যা, সমসাময়িক সাংস্কৃতিক ও সমাজিক চর্চা এইসব বিষয়ে সযত্নে দিক নির্দেশ করেছেন পরিচালক। একটা শহরের আসক্তিকে তিনি যে ভাবে রূপকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। সব ঘটনাগুলিকে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন তাই তার ফসল এত উৎকৃষ্ট যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য এনে দিয়েছেন খুব সহজেই।
★ মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ে রয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র, অভিনয় সত্যিই অসাধারণ, চরিত্রে একাধিক লেয়ার থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি স্তরেই তার বিচরন অত্যন্ত সাবলীল। তার পর সবথেকে বেশি যার অভিনয় নজর কেড়েছে সে হল সায়ক রায়, এটা তার ডেবিউ সিনেমা। নন্দিনী সিমু, বাত্য বসু, সত্রাজিৎ সরকার প্রত্যেকেই তাদের অভিনয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। পরিচালক সিনেমায় তার বাবাকেও অভিনয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন।
★ ক্যামেরার কাজ আদিত্য বিক্রম বাবুর সিনেমার বিষয় বস্তুকে অন্য মাত্রা যোগ করে। সিনেমাটোগ্রাফার ɢöᴋʜᴀɴ ᴛɪʀʏᴀᴋɪ যে কিনা এর আগে ᴏɴᴄᴇ ᴜᴘᴏɴ ᴀ ᴛɪᴍᴇ ɪɴ ᴀɴᴀᴛᴏʟɪᴀ সিনেমার জন্য একাধিক পুরষ্কার পেয়েছেন। বেদেশি নামকরা লোকজন যে সাফল্য এনে দেবে এমন কিন্তু নয়, দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির লোকের ভিন্ন সৃষ্টিশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে শিল্পের উৎকর্ষতা বাড়ে অবশ্যই। ɢöᴋʜᴀɴ ᴛɪʀʏᴀᴋɪ এই সিনেমাতে অতুলনীয়। বাংলা সিনেমায় এই ইউরোপীয় ছোঁয়া সেটা এই পরিচালক ও সিনেমাটোগ্রাফারের অসামান্য যুগলবন্দীর ফল। চরিত্রের ইমোশনাল জার্নিকে যেভাবে ফ্রেম করেছেন তা অনবদ্য।
★ সিনেমায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল গান ও আবহ সঙ্গীত। তবে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের সিনেমায় গানের আশা করা বোকামি, ভবিষ্যতে কি হবে জানি না। তবে আবহ সঙ্গীত আন্তর্জাতিক মানের। আবহ সঙ্গীতের মায়জাল গল্পের প্রতি মোহাচ্ছন্ন করে তোলে।
★ আমার কাছে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত একজন ট্রেন্ড সেটার। কারন তার শিল্পে তিনি কোনো আপস করেন না, নিজের কাজে যথেষ্ট যত্নবান। দায়সারা ভাবে বছরে সাতটা পাঁচটা কাজ করেন না বেশি মুনাফা লাভের আশায়। কাস্টিং এর ক্ষেত্রে তার সৎ মনোভাব, এমন নয় যে নিজের কমফোর্ট জোনের অভিনেতাকে অযাচিত ভাবে বার বার ব্যবহার করে ছিবড়ে করে ফেলেছেন। তিনি নিজের ভাবনা কে বাস্তবায়িত করতে প্রতিকূল পরিস্হিতিতে শুটিং বন্ধ করে অন্যত্র সরিয়ে নিতেও পিছুপা হন না তবুও নতমস্তক করতে রাজি নয়। তার সিনেমা যে সাধারণ চাটুকারি বাঙালীর পছন্দের তালিকায় রাখতে একটু দ্বিধাগ্রস্ত হবেই এটাই স্বাভাবিক।
★ এখন শুধুই প্রতীক্ষা আদিত্যবাবুর পরবর্তী প্রজেক্ট গুলির জন্য সেগুলি হল, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের ছোটগল্প অবলম্বনে একটি হাতির মৃত্যু। অন্য দুটি প্রজেক্ট হল ম্যানড্রেক, কলকাতার ম্যাজিকের উপর একটি চলচ্চিত্র এবং বলিউডের উপর তথ্যচিত্র।
★ যারা গতানুগতিক বাংলা সিনেমার ভক্ত, যেগুলোতে অতিরিক্ত মাত্রায় দর্শককে বোকা বানানো হয়, সেই সব সিনেপ্রেমীদের জন্য নয় এই সিনেমা।
★★ শুরুতে সিনেমার নাম “মেমোরিজ অ্যান্ড মাই মাদার” থাকলেও পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা
হয় "ᴏɴᴄᴇ ᴜᴘᴏɴ ᴀ ᴛɪᴍᴇ ɪɴ ᴄᴀʟᴄᴜᴛᴛᴀ"।
রিভিউটি লিখেছেনঃ ᗩᔕᑌᖇ
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।