তেইল্যা চোরা
ওবায়েদ হক
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১০১
মূল্য : ১০০ টাকা
খোয়াবনামা
শেষ করলাম লেখক ওবায়েদ হক-এর তেইল্যা চোরা। উত্তরাধিকার সূত্রে পিতৃপুরুষদের পেশা সিধেল চুরিকেই নিজের পেশা হিসেবে মেনে নেয় ফজর আলী, সে নাম নেয় তেইল্যা চোরা। স্ত্রী আমেনা আর ছেলে মজিদকে নিয়ে আবর্তিত হতে চাওয়া ছোট্ট সংসারকে সমাজ তাদের পাপ মনে করিয়ে দিতে কখনো কার্পণ্য করে না।
চোরের ছেলে হওয়ার দরুন যেদিন মজিদ তার প্রাপ্য মারটুকু খায় ফজর প্রতিজ্ঞা করে জীবনে সে আর চুরি করবে না, জোয়ারদার বাড়িতে কাজের সন্ধানে যায় সে। সেখানেও তাকেই বালা চুরির দোষী স্যাব্যস্ত করে তার প্রাপ্য হাজতবাস টুকুর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
জেলে সুজন, ইউসুফ মোল্লা, পাগলা প্রফেসর, বাচ্চু দের সাথে ফজর একদিন খবর পায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে। মজিদের খেলা করার স্মৃতি ভেসে ওঠে তার, আর ভেসে ওঠে আমেনার আজন্ম শুস্ক চোখ দুটি।
একদিন সময় আসে, প্রফেসরের বুদ্ধিতে জেল থেকে পালিয়ে যায় তারা....
নিজস্ব প্রতিক্রিয়া :
পার্সোনাল রেটিং :১০/১০
পুরোটা লিখলাম না কারণ ১০০ পাতার বই হয়তো পুরোটাই বলা হয়ে যাবে কিন্তু লেখক তা চান না ওনার মতে লেখকের পরিচয় প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠার মাঝের পৃষ্ঠা গুলিতে পাওয়া যায়। লেখনশৈলী নিয়ে কিছু বলার নেই, কত অল্প কথায় আবেগ তৈরী করে দিয়েছেন, কত গল্প, যুদ্ধের ভয়াবহতা লিখে দিয়েছেন লেখক।
আপনি আমিও তো এই সমাজেরই অংশ। ভেবে দেখুন তো, আমরা নিজের অজান্তে কখনো সখনো ফজর আলী দের তেইল্যা চোরা বানিয়েই দি, শুধু আমেনা দের চোখের দিকে তাকাতে পারি না এই যা.....
রিভিউটি লিখেছেনঃ Saikat
তেইল্যা চোরা
ওবায়েদ হক
ওবায়েদ হক এই বর্তমান সময়ের বাংলাদেশী লেখক। এই বইটি পড়েই তার লেখা বাকি বই গুলির জন্য আগ্রহ তৈরী হয়েছে তার লেখনশৈলীর জন্য। মুক্তি যুদ্ধের সময়কালের পটভূমিতে গল্পটি। ছোট গল্প ঠিক না আবার উপন্যাস বলতেও মন চায় না।
এত সহজ সরল ভাষায় সাবলীল ভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে ছোট ছোট ঘটনায় ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পের সময়কাল মুক্তি যুদ্ধের সমসাময়িক হলেও গল্প আবর্তিত হয় ফজর আলীকে কেন্দ্র করে।
গল্পের প্রতিটি চরিত্রকে আপনার আপাত দৃষ্টিতে সহজলভ্য মনে হলেও প্রতিটি মানুষের চারিত্রিক দৃঢ়তা কে লেখক সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন সফলভাবে আর এই জন্যই গল্পের বিভিন্ন চরিত্রগুলি - হুরমতি, আমেনা, নসু মাঝি, পাগলা প্রফেসর, ইউসুফ মুন্সি, বাচ্চু বা সুজন চরিত্রগুলি আপনাকে আলাদা করে ভাবতে বাধ্য করবে। ফজর আলী কেন কীভাবে "তেইল্যা চোরা" হয়ে উঠল, আর এই নাম কীভাবে তার জীবনকে অভিশপ্ত করে বা মুক্তি যুদ্ধ কীভাবে তার জীবনকে প্রভাবিত করে জানতে হলে বইটা পড়তে হবে।
বইটা অযাচিত ঘটনার বর্ননায় দীর্ঘায়িত হয়নি। মাত্র ১০০ পাতার কিছু বেশী। একদিনেই একটু সময় নিয়ে পড়ে শেষ করা যায়।
বইটা পড়ার পড় মনে হল একটা সিনেমা, ওয়েব সিরিজ বা সানডে সাসপেন্স মত জায়গায় পড়লে চরিত্র গুলো মানুষ আরো বেশী দিন মনে রাখবে, সব ক্ষেত্রেই গল্পটা হিট করার রসদ লেখক রেখেছেন, এখন শুধু উপযুক্ত হাতে বইটাকে পাত্রস্থ করার অপেক্ষা।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Aʜɪ
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।