প্রবঞ্চক
নারায়ণ সান্যাল
প্রথমেই শুরু করি লেখাটির নামকরণের মাধ্যমে।
'প্রবঞ্চক' শব্দটি মূলশব্দ 'বঞ্চনা' থেকে এসেছে, অর্থাৎ কারোর প্রাপ্য থেকে তাকে জোর করে সরিয়ে রাখা হলে তাকেই বঞ্চনা করা হয়ে থাকে।
এই গল্পেও এক অনামী অথচ প্রতিভাবান শিল্পী Han Van Meegeren কে তাঁর প্রাপ্য সন্মান, স্বীকৃতি, খ্যাতির থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু। শিল্পীর মনে সেই ঘটনা কি প্রভাব ফেলেছে, কি ভাবে বদলা নিয়েছেন সেটাই নিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। দারিদ্র্যসম্পৃক্ত বৈবাহিক জীবন, দুই বিশ্বযুদ্ধের মাঝের অস্থির ইউরোপের রাজনীতির পাকেচক্রে আবর্তিত হয়েছে মীগেঁরের জীবনপ্রবাহ। মীগেঁরে এই গল্পের মূল চরিত্র হলেও তাকে ঘিরে আছেন কনৌশর ডঃ ব্রেডিউস, শিল্প কলা বিশারদ অ্যাগনেস শ্যাম্পেন, ভূতপূর্ব গোয়েন্দা-সাংবাদিক বব পোঁয়ক্যারে, কমিশনার ডি-ভেলডি প্রভৃতি। চিত্রকলার উপর যাঁদের আগ্রহ আছে তাঁদের কাছে খুবই ভালো লাগবে এই বই সেটা বলাই বাহুল্য এবং বাকী বইপোকাদের জন্যও অবশ্যপাঠ্য 'প্রবঞ্চক'।
বিশুপাল বধ এবং বিশ্বাসঘাতকের পরে আমার পড়া এটা নারায়ণ সান্যালের তৃতীয় বই এবং তিনটে বই পড়ে একটা সিদ্ধান্তে এসেছি কিছুক্ষেত্রে লেখকের জটিল শব্দ ব্যবহারের প্রবণতা। অবশ্য লেখা এবং কাহিনীর টানে সেটা উপেক্ষা করাই যায়। গল্পের শেষে টমাস চ্যাটার্টন-হাঁন ভাঁ মীগেঁরে যখন লেখক একসূত্রে বেঁধেছেন তখন চোখের কোণ হালকা আদ্র হতে পারে এবং একই সঙ্গে এই সত্যও প্রতিষ্ঠা করে "History Repeats Itself"।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Soumili
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।