পালামৌ
লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মেজদা সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পালামৌ পড়লাম। অনবদ্য ভ্রমণ স্মৃতিচারণ। রেলওয়ে তখনও চালু হয়নি। লেখক ঘোড়ায়, পালকি এবং পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করেছিলেন। সেই সময়ের আরণ্যক পালামৌ এর নিঃসর্গ, উপজাতি অধ্যুষিত কোল, ভিল সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রা, তাঁদের সামাজিক সমস্যা, নারী পুরুষের সহজ সরল সংস্কার, খোলামেলা স্বাধীনতা এবং একইসাথে বণিকের অর্থনৈতিক শোষণের নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই বইটি যেন আজকালের ভাষায় ব্লগ বলা যায়। বইটি বাংলা ভাষার বিবর্তনের একটা মাইলস্টোন। বিভিন্ন বিখ্যাত উদ্ধৃতির জন্ম সঞ্জীবচন্দ্রের এই লেখা যেমন বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে ইত্যাদি; সাধু ভাষার সীমাবদ্ধতার রূপ তিনি দেখিয়েছেন, আবার কথ্য ভাষার সাবলীল চলন তিনি রূপকের মাধ্যমে যেভাবে দেখিয়েছেন তা মনোমুগ্ধকর। খেয়াল রাখতে হবে তখনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ চলছে। সাম্প্রতিক দেশ পত্রিকার বীজমন্ত্র ধারাবাহিকে জানা যায় বঙ্কিমচন্দ্রের চার ভাইয়ের মধ্যে তাঁর এই মেজদার প্রতিভা পরিবারে সব থেকে বেশি ছিল। বাংলা সাহিত্যের এই অনবদ্য বইটি ক্লাসিক পর্যায়ের বলে বিবেচিত হয়। বর্ণপরিচয়ের সকল সদস্য বন্ধুদের বইটি পড়ার অনুরোধ জানিয়ে শেষ করলাম।
রিভিউটি লিখেছেনঃ AB
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।