কালবিহঙ্গ - দীপাঞ্জন দাস Kalbihongo by Dipanjana Das

কালবিহঙ্গ - দীপাঞ্জন দাস Kalbihongo by Dipanjana Das

বই: কালবিহঙ্গ
লেখিকা: Dipanjana Das 

ফেসবুকে "ভূত ভূতুম" ভৈরব ওঝার বিভিন্ন কীর্তিকলাপ পড়েছি কিন্তু ভৈরবের 'ভৈরব ওঝা' হয়ে ওঠার গল্প এই কাল বিহঙ্গ।

সাঁওতাল পল্লীর শান্ত, সমৃদ্ধ, সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশের উপর নেমে আসে এক ত্রাস। সেই ত্রাসের চালক ফিরে এসেছে তার প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করতে। সেই সঙ্গে আসে এক 'দানো' যাকে ভয় করে স্বয়ং সেই চালক।কে আটকাবে এই ত্রাসের অভিশাপ?
কেই বা থামাবে এই দানো কে?
জানতে হলে পড়ুন কালবিহঙ্গ।

উপন্যাসটির শক্ত বুনোট, চরিত্র নির্মাণ ও তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক, সাঁওতাল পল্লীর এক সুন্দর মনোমুগ্ধকর বর্ননা, তন্ত্র সাধনার জটিল পদ্ধতির সরল ব্যাখ্যা, রহস্য সৃষ্টি করা এবং শেষে সেই রহস্যের অত্যন্ত সুন্দভাবে যবনিকা লেখিকার শক্তিশালী লেখনীর প্রকাশ ঘটায়। টানা পড়ে শেষ করবার মতো এক দুর্দান্ত উপন্যাস।
বইটি পড়বো বলেই ফেসবুকের সমস্ত ভৈরব সিরিজ আবার পড়েছি, তাই উপন্যাসটি আমার আরও ভালো লেগেছে।

রিভিউটি লিখেছেনঃ

review
বই- কালবিহঙ্গ লেখিকা- দীপাঞ্জনা দাস
শেষ করলাম তন্ত্রনির্ভর গল্প কালবিহঙ্গ। তো গল্পের নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই গল্পে বিহঙ্গ বা পাখির একটা বড়ো ভূমিকা আছে, এবার এই বিহঙ্গ কিভাবে কাল হয়ে উঠলো সেটা গল্পের মাধ্যমে ক্রমশ প্রকাশ্য।
গল্পের প্লট নির্মিত হয়েছে সাঁওতাল পরগনার এক গ্রামের সমাজ জীবনের ওপর ভিত্তি করে। শান্ত প্রকৃতির সেই গ্রামে হঠাৎ আবির্ভাব হয় বজ্রধনু নামে এক অশুভ শক্তির উপাসকের। কেন সে এল এই গ্রামে এবং তাঁর উদ্দেশ্য টাই বা কি? অন্যদিকে দেখা যায় গল্পের মূল চরিত্র ভোলানাথকে, যে তার বাবার সাথে থাকে। ভোলানাথের মাধ্যমে লেখিকা গ্রামের সরল, নির্ভীক এক কিশোরকে তুলে ধরেছেন যে অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য সদা সচেষ্ট।
হঠাৎ গ্রামের ওপর নেমে আসে এক ভয়াল, অলৌকিক বিপদ। এই বিপদ থেকে গ্রামকে রক্ষা করতে পরিত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন এক সৌম্যকান্তি পুরুষ, যিনি মহামায়ার উপাসক। কে ইনি? কেনই বা তিনি এলেন? তার সাথে কি আদেও কোনো সম্পর্ক আছে ভোলানাথ এর? কিভাবে দমন হলো সেই দুষ্ট তান্ত্রিকের?- জানতে গেলে অবশ্যই পড়তে হবে এই গল্প।
গল্পটি আসলে একটি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার গল্প, খুব সহজভাবে সেটির প্লট তৈরি করা হয়েছে যা গল্প পড়ার মাঝপথেই পাঠক বুঝতে পারবেন। গল্পটি তন্ত্রনির্ভর হলেও সেখানে তন্ত্রের বিশদে কোনো বর্ণনা নেই বরং তন্ত্রের প্রয়োগের কথা বেশি বলা হয়েছে। গল্পের মূল ইউএসপি হল সম্পর্কের কিছু আবেগতাড়িত দিক, যা শেষে গিয়ে পাঠকের চোখের কোণ ভিজিয়ে দিতে পারে (উল্লেখ্য মেয়েরা তো মায়ের জাত)। লেখিকার লেখনীর বাঁধন খুব সুন্দর, তবে গল্পের শেষটা যেন একটু তাড়াতাড়িই হয়ে গেল, ক্লাইম্যাক্স এর আরেকটু বিশদ বিবরণ আশা করেছিলাম। গল্পের অন্যান্য চরিত্রে মধ্যে বগলীচরণ উল্লেখযোগ্য। পরিশেষে বলা যায় যে এটি ভোলানাথ থেকে ভৈরব হয়ে ওঠার গল্প যা বইয়ের প্রচ্ছদে বলা হয়েছে। ভয়ের পরিমাণ কম হলেও যথেষ্ট গোছানো গল্প, পড়ে ভালই লেগেছে। পাঠক বিশেষে নির্ভর করবে এটি একবার না বারবার পড়ার গল্প।

 রিভিউটি লিখেছেনঃ Cthulhu

Post a Comment

0 Comments