বই: চৌধুরী বাড়ির রহস্য
লেখক: অভিরূপ সরকার
একদা বনেদি বাড়ির সন্তান হয়েও বাবার মৃত্যুর পর পরিস্থিতির চাপে পড়ে একRaktim Ghantaটা সাধারণ মেসবাড়িতে ভাড়া থাকতে হয় এই কাহিনির হিরো আদিত্য মজুমদারকে। না ব্যোমকেশের মতো শখের গোয়েন্দা তিনি নন, রীতিমতো পেটের তাগিদেই প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর হ'তে হয়েছে তাঁকে।
কাহিনির শুরুতেই এক মহিলার ফোন আসে। সোহিনী চৌধুরী নামের সেই ধনী মহিলা বলেন তাঁর সন্দেহ তাঁর মা মন্দাকিনী চৌধুরীকে কেউ খুন করতে চাইছে কারণ ইতিমধ্যেই তিন তিনবার তাঁকে মারার চেষ্টা করা হয়েছে, অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। এই জায়গায় তাঁর মায়ের পরিচয় দিতে হয়। মন্দাকিনী একজন প্রাক্তন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, বর্তমানে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালকিন। যিনি আদিত্যর কাছে এসেছেন কেস নিয়ে সেই সোহিনী দেবী মন্দাকিনীর প্রথম স্বামী নীলাঞ্জন মৈত্রের সন্তান। থিয়েটার আর্টিস্ট প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সুবীর চৌধুরীকে বিয়ে করেন মন্দাকিনী। সেই সৎ বাবা এখন গত হয়েছেন। আগের পক্ষের এক মেয়ে শঙ্খমালা ও এক ছেলে শঙ্খদীপ। শঙ্খমালা শান্ত কিন্তু তার স্বামী সুব্রত সেন একটু লোভী, শঙ্খদীপ বখে যাওয়া ছেলে। সন্দেহের তির একাধিক জনের দিকে। তদন্ত চলাকালীন আদিত্যর ওপর দু'জন গুণ্ডা আক্রমণ করতে গেলে সন্দেহ আরও বদ্ধমূল হয়। কে কলকাঠি নাড়ছে আড়াল থেকে? নতুন কোনো বিপদ কি আসবে? সবকিছুর উত্তর মিলবে একদম শেষে। দারুণ চমক আছে, বেশ ট্র্যাজিক এন্ডিং বলা যায়।
উপন্যাসটি আমার চমৎকার লেগেছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, এর আগে আমি এই গোয়েন্দা সিরিজেরই সম্ভবত দ্বিতীয় বই 'চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য' পড়েছিলাম। ভালো লাগায় এটা শুরু কেই। লেখক সম্পর্কে কয়েকটা কথা বলতে চাই লেখক নিজে শাস্ত্রীয় সংগীতের ভক্ত, সেজন্য ওঁর গোয়েন্দা আদিত্যও একইরকমভাবে শাস্ত্রীয় সংগীতের গুণগ্রাহী। আর লেখকের প্রায় প্রতিটি গল্পেই বাম মানেই অতিবাম তথা সমাজ বিচ্ছিন্ন এবং ভিলেন এই অতিসরলীকারণে আসার প্রবণতা লক্ষ্য করলাম! হয়তো ওঁর ব্যক্তিগত মতামত এটাই কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই এভাবে এগুলো প্রকট হ'লে রহস্যগুলোর আঁচ আগে থেকেই পেয়ে যাবেন পাঠক। বাকি প্লটলাইন থেকে স্টোরিটেলিং সমস্ত কিছুই ঠিকঠাক। পেশায় অর্থনীতিবিদ এই সুলেখকের থেকে এই সিরিজের আরও বই আশা করছি
রিভিউটি লিখেছেনঃ Raktim Ghanta
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।