অনুবর্তন
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
অনেকদিন পরে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের লেখা অনুবর্তন উপন্যাস টা পড়লাম। প্রথম পড়েছিলাম আজ থেকে ৪০ বা ৪৫ বছর আগ। সেদিন ও যেমন ভালো লেগে ছিল, আজ ও তেমনি ভালো লাগলো।
উপন্যাস এর সময়কাল বোধ হয় ১৯৩০-৩১ হবে। একটি বে-সরকারি বিদ্যালয় ও তার শিক্ষক দের নিয়ে। স্কুল এর নাম মডার্ন ইনস্টিটিউশন এবং হেডমাস্টার হচ্ছেন ক্লার্কওয়েল সাহেব। ইনি আবার খুব কড়া ও ঘড়ির কাঁটা ধরে চলেন। আর আছেন মিস সিবসন, যিনি সাহেবের আত্মীয় ও নিচের ক্লাসে ইংরেজি শেখান। বাকি শিক্ষকরা বাঙালি, নারান বাবু, যদু বাবু, ক্ষেত্র বাবু , আলম স্যার ইত্যাদি। উপন্যাস এগিয়ে চলে স্কুলের মধ্যেকার ছোট বড়ো ঘটনা নিয়ে। সবাই মাঝে মাঝে ছুটি চায়, কিন্তু লম্বা গরমের ছুটি যখন পড়ে, তখন আর সময় যেন কাটতে চায় না। কবে স্কুল খুলবে সেই অপেক্ষায় থাকেন।
নারান বাবু স্কুল এর একটা ছোট ঘরে থাকতেন। অকৃতদার। বয়স্ক। তিনি ও হঠাৎ করে মারা গেলেন।
হঠাৎ করে যুদ্ধের আশঙ্কা তে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। অপুত্রক যদু বাবু বেড়াবাড়ি গ্রামে এক শরীকি জ্ঞাতি ভাই এর বাড়িতে যান। কিন্তু তারা যখন দেখেন যে উনি গরিব, উনা কে আলাদা করে দেন। প্রায় নিঃসম্বল অবস্থাতে যদু বাবু মারা যান।
শেষে যখন স্কুল খোলে, ছাত্র বেশি নেই, কয়েক জন শিক্ষক আর ফিরে আসেন নি।
এই উপন্যাস এর মাধ্যমে তখনকার সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্কুল গুলো কেমন চলতো, সেটা খুব ভালো ভাবে দেখানো হয়েছে। টিচার দের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল, টুশন করতে হতো। আমি বেশ ছোট বেলাতে প্রথম বার এই উপন্যাস পড়ি, এবং আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন, তাই অনেক গুলো ব্যাপার এ খুব মিল খুঁজে পাই।
পড়ার পর যদি কারুর ভালো লাগে, অবশ্যই জানাবেন। সবাই ভালো থাকুন।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Deb K
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।