বইয়ের নাম : সর্বনাশিনী
লেখক : সায়ন্তনী পূততুন্ড
প্রকাশক : বিভা পাবলিকেশন
এক অজ্ঞাত ফেসবুক প্রোফাইলে পড়তে থাকে একটার পর একটা ডেথ ফরকাস্ট। কেঁপে ওঠা গোটা কলকাতা।তারপর যা হয় আরকি এইসব কেসে আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে পাওয়া যাবে না।কোথাও মিলবেনা সর্বনাশিনীর খোঁজ।
আর বাকি গল্প টুকু রাজ - রানীর। পুরো গল্পটা দাড়িয়ে আছে সাদা কলোর ৬৪ ঘরের ওপর। এই নিয়েই গল্প।
এরপর টীম অধিরাজ এর ছুটে চলা। একটার পর একটা ডেড এন্ড, টুইস্ট। তবে হ্যা গল্পটা ২০০ পাতাতেই হ্যাপি এন্ডিং হতে পারত যদি না লেখিকা নায়কের পাতার পর পাতা বর্ণনা দিতেন। হ্যাঁ গল্পের স্বার্থে কিছুটা দরকার ছিল ।কিন্তু লেখিকা "অধিরাজ বন্দোপাধ্যায়" কে "ক্রাশ বন্দ্যোপাধ্যায়" বানাবার জন্য এতটা বদ্ধ পরিকর না হলেও পারতেন। যাকগে যেটা বলার এই সিরিজ এর অন্যতম একটা স্ট্রেন্থ হলো থ্রিলার এর সাথে চমৎকার হিউমার এর ব্যবহার। এই বিষয় টা লেখিকা তার অন্যান্য বইগুলোতে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তবে হ্যা বইটার প্লট গুলো দুর্দান্ত ছিল ।যেভাবে দাবার চালের মত দুই দিক থেকে সাদা - কালো পুরো গল্প টাকে ছকে ছকে লিখে গেছেন সেটা দারুন। যথেষ্ঠ টেন্সড ফিল নিয়ে ,খুব টানটান ভাবে গোটা গল্পটা এগিয়ে গেছে। টুইস্ট আর টার্নিং গুলো দুর্দান্ত। সঠিকাবে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে।
ওভারঅল গল্পটা পড়ে সাটিস্ফাইড। বাজারে ঘুরে বেড়ানো আর পাঁচটা হাইপ থ্রিলার এর থেকে এই বই অনেক ভালো।
থ্রিলার প্রেমী বন্ধুরা যারা সর্বনাশিনী পড়েনি ,তারা দায়িত্ব নিয়ে পড়ে ফেলুন।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Reshma
সর্বনাশিনী
সায়ন্তনী পূততুন্ডর লেখার সাথে পরিচয় বহুদিন হলেও, অধিরাজ সিরিজের সাথে আমার পরিচয় খুব বেশিদিনের নয়। এর আগে ত্রিমুর্তি যখন ভয়ঙ্কর ছাড়া সেরকম কিছু পড়েছি বলে এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। যাইহোক ম্যাডামের লেখা বেশ আমার ভালো লাগে। বইটার হার্ড কপি আমার কাছে আছে।
এবার আসি লেখার বিষয়ে, উপন্যাসটি প্রাপ্তমনস্কদের জন্য। বেশ বড় একটি উপন্যাস, প্রায় 350 পৃষ্ঠার। লেখিকার লেখনীর প্রাঞ্জলতায় কিন্তু সুবৃহৎ বলে ভয় লাগেনি। উপন্যাসটি সিরিয়াল কিলিং এর উপরে। সর্বনাশিনী নামাঙ্কিত কেউ ফেসবুক থেকে বেশ কিছুদিন বাদে বাদে তথাকথিত ধনী ব্যক্তিদের আগাম মৃত্য পরোয়ানা পোস্ট করছে। সর্বনাশিনী কে? আদতে কে এবং কেন এই সিরিয়াল কিলিং গুলো করছে আর মৃত ব্যক্তিদের মধ্যেই বা কি সম্পর্ক, এই হচ্চে উপন্যাসের উপজীব্য। পড়তে যদিও এতটুকু ধৈর্যহীন হতে হয়নি। অধিরাজ কি শেষমেষ সফল হলো খুনীকে খুঁজে পেতে? এর জন্য অধিরাজকেই বা কতটা পরিশ্রম করতে হলো বা কি মারাত্মক বিপদে পড়তে হলো? এটুকু জানতে উপন্যাসটা পড়া যায়। যারা থ্রিলার ভালোবাসেন তাদের জন্য বেশ উপভোগ্য হবে বলে মনে হয়।
সায়ন্তনী কে খোলা চিঠি
প্রসঙ্গ : সর্বনাশিনী
প্রিয় লেখিকা,
অর্কুট জমানা থেকে আপনার লেখার সাথে পরিচিতি। কোন এক লেখালেখির গ্রুপে প্রথম আপনার লেখা পড়ি। তারপর থেকে প্রতিদিন সেখানে উঁকি দেওয়া ছিল আমার অর্কুট ভ্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্য। অনেক কিছুই লিখতেন আপনি, কিন্তু আমার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল প্রখর বুদ্ধিমান সি. আই. ডি. অফিসারটি। বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনি সম্ভবত নিজেকে নিঃস্ব করে তাকে প্রাণ দিয়েছেন। সেই থেকে আপনার অগুনিত পাঠকের মতো আমিও পিছু নিয়েছি সেই হ্যামিল্টনের বাঁশিওয়ালার।
বহুরূপী, খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফেরে, রস রহস্য আতঙ্ক পেরিয়ে যখন সর্বনাশিনী হাতে পেলাম, নির্দ্বিধায় জানাচ্ছি, মন খুঁত খুঁত করছিলো প্রচ্ছদ দেখে। অধিরাজ সিরিজের এইটা প্রথম বই যা সংগ্রহ করার আগে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি নিজের সাথে। "প্রাপ্তবয়স্ক বই" নিয়ে কোনো দ্বিধা নয়, দ্বিধা ছিল বইটির প্রচ্ছদ নিয়ে। কিন্তু এখানেই আপনি জিতে গেলেন, জিতিয়ে দিলেন আমার সিদ্ধান্তকে। প্রচ্ছদ নিয়ে নাক সিঁটকানো সরিয়ে রেখে, অধিরাজ ও তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি অগাধ বিশ্বাসের জোরে শুরু করলাম পড়া। আমার আগেও বেশ কয়েকজন "সর্বনাশিনীর" পাঠ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, আমার প্রতিক্রিয়াও তাদের থেকে বিশেষ আলাদা হবে না।
অদ্ভুত ভাবে কলকাতা শহরে দুজন ধন-কুবেরের মৃত্যু, মৃত্যুর আগেই উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু পরোয়ানা জারি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তথা ফেসবুকে এবং মৃতদেহ উদ্ধারের পরে মৃত্যুর কারণ অজানা। খুন সন্দেহ হওয়া সত্বেও, খুনের পদ্ধতি, তার উদ্দেশ্য ও সর্বোপরি খুনি এই তিন প্রশ্নের গোলকধাঁধায় যখন দিশেহারা কলকাতা পুলিশ, তখন রহস্য উদ্ধারে নামলেন অধিরাজ ব্যানার্জী ও তার টিম। এর পর দীর্ঘসময় ধরে চলে অধিরাজ ও সর্বনাশিনীর লড়াই। বুদ্ধিতে ব্যক্তিত্বে সূচাগ্র ভূমি ছাড়তে নারাজ দুজনের একজনও। শারীরিক অসুস্থতাও অধিরাজের ক্ষুরধার বুদ্ধিতে বিন্দুমাত্র মরছে ফেলতে পারে না। খুব অল্প সময়েই বুঝতে পারে সে খুনির মনস্তত্ব, তারপরই সে সুচারু দাবা খেলিয়ের মতো দিতে থাকে একের পর এক চাল, তার প্রতিপক্ষ যে দাবায় পারদর্শী, কতৃত্বময়ী ও সাংঘাতিক বুদ্ধিমতী! কিন্তু শেষ পর্যন্ত কার জিৎ হয়? দুই জিনিয়াসের মধ্যে কার মাথায় চড়ে খ্যাতির মুকুট? "আই হেট্ হার" যদি কোনো আগামী সংকেত হয় অবাক হব না। টাকলু যদি কাটামুণ্ডুর প্রেমে পড়ে শায়রী করতে পারে, তবে এই অনিন্দ্যকান্তি যুবক কেন নয়?
পরিশেষে বলি, সর্বনাশিনীর জন্ম হয় যে প্রিয় মানুষেরই অবহেলা, অভিমান ও অপমানের প্রেক্ষাপটে, সাধারণ নারী থেকে কিভাবে সে, জটিল মনস্তত্বের অধিকারিণী হয়ে ওঠে, তা অসাধারণ পারদর্শিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন আপনি। প্রিয় লেখিকা, আরো একবার আপনার কলমের সামনে নতজানু হল এই সাধারণ পাঠিকা।
Review
বইয়ের নামঃ সর্বনাশিনী
লেখকঃ সায়ন্তনী পূততুন্ড
প্রকাশনীঃ বিভা
ধরনঃ সিরিয়াল কিলিং (থ্রিলার)
শহরে ঘটে যায় দু'দুটো রহস্যময় মৃত্যু। ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে কিছুই পাওয়া যায় না। তখনই সামনে আসে এক ফেসবুক প্রোফাইল। ফেসবুক প্রোফাইলের নাম সর্বনাশিনী। এক অপূর্ব সুন্দরী কৃষ্ণাঙ্গ মহিলার ছবি দেওয়া তাতে। কেমন একটা রহস্যময়তার ছাপ।এক রহস্যময়ী প্রেমিকা। একের পর এক পুরুষ শিকার করে চলেছে। শিকারের নাম অনেক আগেই ফেসবুকে ঘোষিত করে দেয়। তবুও শিকারকে বাঁচানো যায় না।
কিন্তু খুনের মোটিভ কী? পরবর্তী শিকার বিজয় জয়সওয়াল কি রক্ষা পাবে সর্বনাশিনীর হাত থেকে? এই সব প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় গোলকধাধায় ঘুরতে থাকে।
চমৎকার লেখিকার ভাষা দক্ষতা ও ঘটনা বুনন। লেখার প্রবাহ এবং একাধিক প্রশ্নের অনুসন্ধানে একটি জমজমাট থ্রিলার উপন্যাস সর্বনাশিনী।
রিভিউটি লিখেছেনঃ কাব্য
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।