এ ব্রীফ হিস্ট্রি অফ টাইম ফ্রম দ্য বিগ-ব্যাং টু ব্ল্যাকহোল পর্যালোচনা ও হিপস-বোসন-ঈশ্বর কণা বিতর্ক - স্টিফেন হকিং, প্রফেসর মতিয়র রহমান Sapiens - A Brief History Of Time by Stephen Hawking

এ ব্রীফ হিস্ট্রি অফ টাইম ফ্রম দ্য বিগ-ব্যাং টু ব্ল্যাকহোল পর্যালোচনা ও হিপস-বোসন-ঈশ্বর কণা বিতর্ক - স্টিফেন হকিং, প্রফেসর মতিয়র রহমান Sapiens - A Brief History Of Time by Stephen Hawking

সেপিয়েন্স - আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম
আমার রেটিং ১০/১০

"...Now I've become Death, the destroyer of worlds..."

লকডাউন আর চারিদিকে এতো অস্থিরতা র মধ্যে অনেকগুলো বই শেষ করলাম। কিন্তু কোনো একটি বই পড়তে গিয়ে এতো চমকে কোনওদিন উঠি নি। "সেপিয়েন্স" টা পড়লাম বল্লে ভুল হবে, গোগ্রাসে গিল্লাম। মানবসভ্যতার ইতিহাস নিয়ে বই পড়তে গিয়ে তথ্য-উপাত্তের ঠাসাঠাসিতে অধিকাংশ পড়ুয়া অস্থির বোধ করেন। কিন্তু এই বই টি সত্যি বলছি, অন্যরকম।

কে তুমি? কেও যদি আমাকে এই প্রশ্ন করে তাহলে প্রথমেই হয়ত উত্তর দেব— আমি সুমন। কিন্তু এটাই কি আমার এক্সাক্ট উত্তর হবে? আমি জন্মের সময় অবশ্যই আমার নামটা নিয়ে জন্মাইনি। আমার নাম সুমন না হয়ে অন্যকিছু হতে পারত। নাম আমার যাই হোক না কেনো, আমি আমিই থাকতাম। তাহলে আমি আসলে কে? Birds eye view থেকে যদি বলি, উত্তর দেব— আমি মানুষ। এখানেও জটিলতা। কারণ আমার জন্মের লক্ষ বছর আগেও মানুষ ছিলো, এখনও মানুষ আছে। মানুষে মানুষে গায়ের রঙে, উচ্চতায়, শরীরের বাহ্যিক গঠনে ভিন্নতা। তারাও মানুষ, আমিও মানুষ; তবু কেনো এত ভিন্নতা?

এইসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই অদ্ভুত আলোচনা ইউভাল নোয়া হারারির ‘সেপিয়েন্স: এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ হিউম্যানকাইন্ড’ বইতে।

আজ থেকে এক লক্ষ বছর আগে এই পৃথিবীতে অন্তত ছয়টি মানব প্রজাতি বসবাস করত। আজ এখানে টিকে আছে মাত্র একটি প্রজাতি। আর সেই প্রজাতিই হলাম আমরা। হােমো সেপিয়েন্স। হােমাে সেপিয়েন্স খুবই কৌতূহলী প্রজাতি। তাই আমরা খুঁজে বের করতে চাই আমাদের টিকে থাকার রহস্য। আমাদের মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে-বাকি পাঁচটি প্রজাতির মত আমাদের প্রজাতি কেন কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে গেলনা? কিভাবে তারা রক্ষা পেয়েছিল? কিভাবে আমাদের বন্য ও যাযাবর পূর্বপুরুষরা শহর ও সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল? আজকের দিনে আমরা যে ঈশ্বর’, জাতি’ ও ‘মানবাধিকারে’ বিশ্বাস করি-তা কিভাবে আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হল? আমরা ছিলাম-সাহসী, বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ এবং উদ্যোগী। আমরা টিকে থাকার পথে যেকোনাে সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ করেছি। আর বাকি মানব প্রজাতিগুলি সাথে হারিয়ে না গিয়ে বরং নিয়ন্ত্রণ করছি এই পৃথিবীকে। আমাদের লক্ষ বছরের দীর্ঘ পথ চলার গল্প এই বই।

বিশ্বাস করুন, ৪৬২ পৃষ্ঠার বইটা পড়ার সময় একটা পৃষ্ঠাতেও 'বোরড' ফিল করিনি - বীভৎস হত্যার ঘটনায় কখনো শিউরে উঠেছি, মানুষের অর্জনে কখনো গর্ববোধ করেছি, কিংবা লেখকের বুদ্ধিদীপ্ত বর্ণনাতে নিজের অজান্তেই উচ্চস্বরে হেসে উঠেছি। যারা বই পড়তে ভালবাসেন তাদের সবাইকেই আমি "Sapiens" একবার হলেও পড়তে রেকমেন্ড করব।

সত্যি বলতে, ইউভাল নোয়া হারারির কথাগুলো মানবপ্রকৃতিকে আয়নায় দেখার মত লেগেছে আমার কাছে। সেপিয়েন্স আর নিয়ান্ডারথাল - দুই প্রজাতির মানুষ একে অপরের সংস্পর্শে আসার কয়েক হাজার বছর পর নিয়ান্ডারথালরা রহস্যময়ভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার অন্যতম একটা কারণ বলছেন লেখক - গণহত্যা। আমরা সেপিয়েন্সরা নিষ্ঠুরভাবে আরেকটি প্রজাতিকে কেন নিশ্চিহ্ন করে দিলাম এর কারণ বলতে গিয়ে হারারি যে বাক্যটি বলেছেন তা বোধহয় ইতিহাসের প্রত্যেকটি গণহত্যার কারণ হিসেবে লেখা যায়, 

"....They were too familiar to ignore, but too different to tolerate!"

মানুষের ইতিহাসকে এমন সোজাসাপ্টাভাবে তুলে ধরার দুঃসাহসের জন্যই বোধহয় "Sapiens" একদম অন্যরকম। 
আবার প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাম।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Suman

Post a Comment

0 Comments