বই - রক্ততৃষ্ণা
লেখক - মনীষ মুখোপাধ্যায়
উপন্যাসটিতে দুটি সময়কালের বর্ণনা রয়েছে ১৯৭১ ঢাকা মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল আর ১৯৯০ কলকাতার সময়কাল।
১৯৭১ সাল ঢাকা - শ্রীকান্ত সামন্ত তাঁর পরিবার কে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। চারিদিকে খানসেনাদের অত্যাচার দিন দিন বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি ঠিক করেন সপরিবারে বড়দা শ্রীমন্ত সামন্তর কাছে চলে যাবেন যিনি কলকাতায় থাকেন। কিন্তু সমস্যা হল রাধা গোবিন্দের প্রতিষ্ঠিত মন্দির তিনি কোথায় রেখে যাবেন! বহু বহু যুগ ধরে সামন্ত পরিবারের সেবা পেয়ে আসছে এই মূর্তিযুগল। শ্রী মাধবের গলার কাছে একটা নীল রঙের হীরে বসানো আছে। সেই হীরের প্রতি বড্ড লোভ এই অঞ্চলের রাজাকারদের। এমনঅবস্থায় শ্রীকান্ত সামন্ত দ্রুত এই শহর ছারার সিদ্ধান্ত নেন।
ছেলে শাম্ব খবর আনে আজিজ নামে এক এজেন্ট তাদের রাতের অন্ধকারে খানসেনাদের চোখ এড়িয়ে পোঁছে দেবে নদীর পাড় অবধি, এক মাঝি তাদের পার করে দেবে। শ্রীকান্ত সামন্তের আজিজের চোখের দৃষ্টি দেখে মনে হলো বাঘের চোখ যেমন সর্বদা শিকার খোঁজে, আজিজের চোখও তেমন যেন শিকার খুঁজে চলেছে।
বাজারে মেছকন্দর উদ্দিনের দোকানটি শ্রীকান্ত সামন্তের দোকানের ঠিক পাশে। মেছকন্দরের শ্রীকান্তের প্রতি গোপন ক্ষোভ আছে, এদিকে এরশাদ মাংসের দোকান চালায় পুরোনো বাজারে। কিন্তু আসলে সে পাকিস্থান আর্মির গুপ্তচরের কাজ করে। মেছকন্দর আর এরশাদের রাস্তায় কথা বলা নিতান্ত কাকতালিয় ঘটনা নাকি এর পিছনে রয়েছে কোনো সরযন্ত্র?
১৯৯০ কলকাতা - বিজয় হেমব্রম, ছাব্বিশ বছরেই বেশ নামডাক হয়েছে ছেলেটার। সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়ে সমাজের অনগ্রসর মানুষের পাশে দাড়াঁনোই ওর কাজ। পুলিশ ইন্সপেক্টর মোজেস বিজয়ের ছেলেবেলার বন্ধু। বিজয় অনেকদিন বাদে বন্ধুর সাথে দেখা করতে আসলে মোজেসকে ভীষন চিন্তিত দেখায়। মোজেস বিজয়কে এমন একটি মেয়ের কথা বলে যে কাঁচা মাংস ভক্ষণ করে। মেয়েটির সাথে বিজয় কথা বললে মেয়েটি তাকে জানায় যখন সে অনেক ছোট ছিল তখন সে কারোর গন্ধ পেয়েছিল তাঁকে খুঁজতেই সে এখানে এসেছে। অন্ধকারের মধ্যে কনস্টেবল নারায়ণ মেয়েটির সেলের বাইরে কাউকে একটা দাড়িয়ে থাকতে দেখলো। কে সে? এত রাতে সে সেলের বাইরে এলোই বা কী করে? মেয়েটি কী শেষপর্যন্ত সেই চেনা গন্ধের মানুষটিকে খুঁজে পেয়েছিল ? অতীতে কী ঘটে ছিল সেই রাতে সামন্ত পরিবারের সাথে? আর এসব প্রশ্নের সাথে রয়েছে এক রক্ত পিপাসু দেবীর কথা।
ব্যক্তিগত মতামত- উপন্যাসের অতীতের ঘটনাটা বেশ ভালো লেগেছে তবে বর্তমান অংশে বিশেষ করে শেষের কয়েক পাতায় অতিরিক্ত বর্ণনা মনে হয়েছে। তবে খুনের বর্ণনা গুলি পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। লেখকের লেখনী আকৃষ্ট করেছে আরও উপন্যাসটির প্রতি এত সুন্দর করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে পরিবার গুলির আতঙ্ক, দুশ্চিন্তা লিখেছেন তা খুব ভালো লেগেছে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ রুপা শাহ
বইয়ের নাম : রক্ততৃষ্ণা
লেখক-মনীশ মুখোপাধ্যায়
তন্ত্র সাধনা ও তান্ত্রিক ওপর লেখা গল্প এখন বিশেষ একটু প্রাধান্য পাচ্ছে। তাই ভৌতিক গল্প পড়তে ভালো লাগে বলে পড়ে ফেললাম বইটি। বইটি কেমন তা বলবো না কিন্তু পুরাতন একটি অভিশাপ কে ঘিরে উপন্যাসটি আবর্তিত হয়েছে। ওপার বাংলায় রাজাকারদের অত্যাচার এবং তারপর সেই অত্যাচারের প্রতিশোধ, বিশ্বাসঘাতকতা এই গল্পের মূল কাঠামো বলতে পারেন। বইটি পড়তে পড়তে আমার pari সিনেমাটির কথা মনে পড়ছিল। শেষে একটা কথাই বলবো আমার খুব একটা ভালো লাগেনি বইটি পড়ে। সবকিছুই যেন একটি প্রশ্ন বা কাল্পনিক কের মত লেগেছে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Abhishek
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।