বই: নীরেন ভাদুড়ী সমগ্র ১
লেখক: সৌভিক চক্রবর্তী
নীরেন্দ্রনাথ ভাদুড়ি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। পড়াতেন সংস্কৃত কিন্তু কৌতূহল বশত ডুব দেন তন্ত্রের অন্দরে।গভীর সাধনা ও অভ্যাসের ফলে দেশ ও বিদেশের নানাবিধ তন্ত্র ও তার প্রয়োগ তার নখদর্পণে। স্মৃতিশক্তি প্রখর।গুরুদেব হিসেবে পেলেন রামদাস ঠাকুরকে।বিচিত্র অলৌকিক অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ জীবন।এই বইয়ের একটি উপন্যাস ও দুটি বড় গল্প তারই প্রতিফলন।
বাংলা সাহিত্য জুড়ে এখন তন্ত্র নির্ভর কাহিনীর প্রাচুর্য. তা হলে কেন সেই বিষয়েই একটি নতুন চরিত্রের অবতারণা? কারণ বুদ্ধি দিয়ে অমোঘ শক্তির বিরুদ্ধে পাঞ্জা কষা এই কাহিনী তিনটির মূল মন্ত্র। ভাদুড়ি মশাই এর নিজের কথায় “পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অলৌকিক হল মানুষের বুদ্ধিমত্তা, তার ইন্টেলিজেন্স”.
💢 অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ: কাহিনীটি ভাদুড়ী মশাইয়ের পরিচয় দেবার গল্প। বন্ধু জ্যোতিরিন্দ্র এর টানে জলদাপাড়া তে গিয়ে সেখানে গন্ডার শিকারীকে শাস্তি দেওয়া এই কাহিনীর সংক্ষেপসার। রেডিও মিরচি তে এই গল্প অডিও স্টোরি হিসেবে প্রকাশিত। তাই এই নিয়ে আর বেশি কথা নয়।
💢 পর্ণশর্বরীর অভিশাপ: অমিয় পল্লব মিতুল তিতাস সবাই মিলে গেলো কর্শিয়াং বেড়াতে। যাবার পথে রাস্তা হারায় তারা। পল্লব আর অমিয় গাড়ী থেকে নেমেখুঁজতে যায় রাস্তা। তখন তিতাস ও মিতুল এক সুতীব্র সুগন্ধের টানে নেমে এসে করে ফেলে এক চরম ভুল। তাদের উপর নেমে আসে এক চরম অভিশাপ। পারবেন কী রক্ষা করতে তাদের ভাদুড়ী মশাই?
খুবই সুন্দর একটা গল্প। বুনট ও ভালো। মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ এখানে দুর্দান্ত ভাবে করেছেন লেখক। এইটুকুই বেশি বললে স্পয়লার হয়ে যাবে।
💢 নিকষছায়া: পল্লব, অমিয়, সুপ্রতিম, সঞ্জয় চার বন্ধু। সঞ্জয়ের জীবনের এক অত্যন্ত খারাপ অলৌকিক দিক নিয়ে কথবার্তা হবার সময় মারা যায় সুপ্রীতিম।
তারপর কেটে গেছে অনেক সময়। গঙ্গা দিয়ে পেরিয়ে গেছে গ্যালন গ্যালন জল। কিন্তু সেই অন্ধকার অলৌকিক সত্তা আবার জেগে উঠেছে। সঞ্জয়ের পিছু নিয়েছে। মিতুলের জীবন হয়েছে বিপন্ন। এবং ভাদুড়ী মশাইএর মুখোমুখি এক শক্তি শালী কিন্তূ পরিচিতি প্রতিপক্ষ। হারাতে পারবেন কী তাকে? এই নিয়ে বইটির একমাত্র উপন্যাস।
টাইমলাইন অনুযায়ী নিকষছায়া উপন্যাসটি আগে ঘটেছে অন্য দুটি কাহিনীর থেকে।
শ্বাসরুদ্ধকরী একটি উপন্যাস। চরিত্র গঠন দুর্দান্ত। মানুষের জেদ, লোভ, ভালোবাসা, বুদ্ধিমত্তা এর পূর্ণ প্রকাশ ঘটেছে এই কাহিনীতে।১০/১০👍।
এক কথায় বইটি ভালো। এক নিঃশ্বাসে শেষ করা যায়। অতিরিক্ত চরিত্র বৃদ্ধি ঘটিয়ে কোনো জটের সৃষ্টি করা হয়নি।👍🔥
রিভিউটি লিখেছেনঃ
নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র প্রথম খন্ড
লেখক: সৌভিক চক্রবর্ত্তী
দুটি বড় গল্প, এবং একটি উপন্যাস নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বইটি। অবসরপ্রাপ্ত সংস্কৃতের শিক্ষক এবং একজন তন্ত্র-বিদ্ নীরেন্দ্রনাথ ভাদুড়ি এবং তাঁর ৬ জন অল্পবয়সী সঙ্গী কে নিয়ে তিন তিনটি অভিযান এবং অভিজ্ঞতার উপাখ্যান। বইটির তিনটি গল্প লেখক এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যে আমার পড়তে কখনো একঘেয়েমি লাগেনি বরং সুন্দর লেগেছে। আদিমতম অরণ্যের প্রাচীনতম প্রবাদ যদি জানতে চান, পর্ণশবরীর কি ছিল সেই অভিশাপ যদি জানতে চান, নিকষ ছায়ার ঘন অন্ধকারের অতলে যদি ডুব দিতে চান তাহলে অবশ্যই একবার পড়তে পারেন এই বইটি।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Pritam Roy
নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র (প্রথম খন্ড)
লেখক: সৌভিক চক্রবর্তী
সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সংস্কৃতের অধ্যাপক নীরেন্দ্রনাথ ভাদুড়ি। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রাচীন শাস্ত্র ও তন্ত্রবিদ্যা তার নখদর্পনে। তাঁর জীবনের কিছু অলৌকিক কাহিনী নিয়ে লেখা একটি উপন্যাস ও দুটি বড় গল্প নিয়ে এই নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র।
'নিকষছায়া' উপন্যাসটি শেষে থাকলেও এর সময়কাল 'পর্ণশবরীর শাপ'-এর আগে। অন্যান্য চরিত্রদের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য নিকষছায়া আগে পড়লে সুবিধা হবে। গল্পগুলির বিশেষত্ব হলো অলৌকিক সমস্যার সমাধানে মানুষের বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার, লেখকের ভাষায় "এ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অলৌকিক হল মানুষের বুদ্ধিমত্তা, ইনটেলিজেন্স।"
রিভিউটি লিখেছেনঃ IM
বইয়ের নাম : নীরেন ভাদুড়ী সমগ্র
লেখক: সৌভিক চক্রবর্তী
বইটি পড়া শুরু করি পর্ণশবরী সাপ গল্পটি সানডে সাসপেন্সে শুনে। বইটিতে মূলত দুটি গল্প ও একটি উপন্যাস। গল্প দুটি যথাক্রমে অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ ও পর্ণশবরীর সাপ ও উপন্যাস টি হল নিকষ ছায়া। বইটি মূলত তন্ত্রনির্ভর ভৌতিক থ্রিলার। নিকষ ছায়ার সময়কাল পর্ণশবরী আগে। এটা একটু বুঝতে বেগ পেতে হয়েছে। নিরেন ভাদুড়ী একজন তান্ত্রিক কিন্তু তার কোন রিচুয়ালের কথা এখানে জানা যায়নি। কিছু কিছু জায়গায় আমার মনে হয়েছে বাংলা সিরিয়াল এর সাথে মিল। সব থেকে ভালো আমার পর্ণশবরী সাপ গল্পটা লেগেছে। বাদবাকি চলনসই।
যদি পড়তে চান একবার অন্তত পড়তে পারেন।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Abhishek
নীরেন ভাদুড়ী সমগ্র
লেখক - সৌভিক চক্রবর্তী
নীরেন ভাদুড়ীর সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে sunday suspense এ অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ গল্প দিয়ে। গল্প শুনে এতটাই ভালো লাগে যে পড়ে শেষ করলাম এই খন্ডের বাকি দুটি গল্প।
লেখকের দাবীমাতো এই গল্প গুলি সত্যিই আর দশটা তন্ত্র নির্ভর গল্পের থেকে আলাদা। অলৌকিক এর সাথে লজিক্যাল টাচ। যারা হরর তন্ত্র জনরার বই পড়তে ভালো বাসেন তারা অবশ্যই পড়ে দেখতে পারেন, আশা করি নিরাশ হবেননা।বইয়ের শেষ গল্প "নিকষছায়া" গল্পটি সম্ভবত নীরেন ভাদুড়ী সিরিজের প্রথম লেখা, তাই এটা দিয়ে শুরু করাটাই ভালো।
রিভিউটি লিখেছেনঃ subhro Acharya
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।