বইয়ের নাম - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
লেখক - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
প্রকাশনা - আনন্দ
প্রথম প্রকাশ - ১৯৭৮
প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ - দেবাশীষ দেব
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের 'অদ্ভুতুড়ে সিরিজ' কিশোর সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। এই সিরিজের প্রতিটি বই আমার অন্তরের খুব কাছের। ' মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি ' বইটি সেরকমই একটি বই।
একটি ফটো --- একটি বাংলো-বাড়ির বারান্দার সামনের সিঁড়িতে বসে একটা সুন্দর দেখতে ছেলে। পিছনে পর্দার আড়াল থেকে উঁকি মারা অস্পষ্ট মুখ। ছেলেটির পাশের গ্লাস থেকে বিড়ালের দুধ খাওয়া। মনোজদের বাড়ি থাকা এই ফটোটা তাদের কারও না হলেও তাদের বাড়িতে আছে অনেক দিন ।
হরিণগড়ের রাজা গোবিন্দনারয়ণ। খুবই কৃপণ। মন খারাপ হলে গুপ্ত কুঠুরিতে গিয়ে টাকা গোনে। রানি পুকুর পাড় থেকে শাক তোলে। রাজমাতা ঘুঁটে দেয়। রানি এক গোয়েন্দা নিয়োগ দিয়েছে তাদের হারানো ছেলের সন্ধানে।
একদল ডাকাত কালীপুজো করছে। আজ এক বড়ো ডাকাতি হবে। সব ডাকাতরা হইহল্লা করছে। এতো ডাকাতের মধ্যেও তাদের মেজো সর্দার আলাদা ভাবে নজর কাড়ে । ঠিক ডাকাত বলে মনে হয় না।
কী, একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন না? বইটির সমস্ত হাসির এলিমেন্ট সরিয়ে নিলে এক জমজমাট গোয়েন্দা গল্প হয় না? এখানেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অদ্ভুতুড়ে সিরিজের বই গুলোর বিশেষত্ব। এই প্লটে ভরপুর হাসির উপকরণ দিয়ে বইটিকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেন লেখক।
একই গল্পে অনাবিল হাসি, রহস্য - রোমাঞ্চ, এমনকি পাঠকে দাঁড় করিয়ে দেয় রূঢ় বাস্তবের সামনে। এই বইতে দেখা যায় কিভাবে শহরের ছেলে গ্রামের ক্রিকেট কোচকে হেয় করে।
তবে এই বইয়ের আসল মজা প্রতি মুহূর্তে ঘটে চলা অসংখ্য হাসির ঘটনা, যা বলে শেষ হবে না। বিশেষ করে ভজবাবুর বাজার করা বা আদ্যাসুন্দরীদেবীর পুলিশকে লাঠি দিয়ে পিটানোর দৃশ্য উল্লেখযোগ্য।
দেবাশীষ দেবের প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ বইটি পড়ার সময় অনেক বেশি উপভোগ্য করে তুলেছে।
বইটিকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। যা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। যার সঙ্গে অন্যরা একমত নাও হতে পারেন।
রেটিং : ৪/৫
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।