বই - গোয়েন্দাপীঠ লালবাজার
লেখক - সুপ্রতিম সরকার
প্রায় গোগ্রাসে শেষ করলাম সুপ্রতিম সরকার এর লেখা গোয়েন্দাপীঠ লালবাজার। বইটির বিষয়বস্তু হল ১৯৩৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত কলকাতায় ঘটে যাওয়া ১২ টি খুনের রহস্য নিয়ে। স্বাধীনতার পূর্ব সময় থেকেই কলকাতা পুলিশের বিশেষত গোয়েন্দা বিভাগের মূল কেন্দ্র হিসেবে লালবাজার এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে সেকালের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড এর সাথে এর তুলনা টানা হত। শুধু দুঁদে গোয়েন্দারাই নন, ক্রাইম করে তাঁদের কালঘাম ছোটাতেন অপরাধী রাও। শরীরে প্রথম বিষ প্রয়োগ করা আসামি থেকে প্রথম মহিলা খুনি সবাই কলকাতার জলবায়ুতে মানুষ (যদিও এতে কলকাতার জলবায়ুর কোনও অবদান আছে নাকি তা আমার পরীক্ষা করা হয়নি)! গোয়েন্দা গল্পের প্রতি আমার আকর্ষণ ছোট থেকেই। কিন্তু গোয়েন্দা বললেই আমাদের মাথায় যে কাল্পনিক চরিত্র ভেসে ওঠে বাস্তবের গোয়েন্দারা তার থেকে কিছুটা(হয়তো বা অনেকটাই) আলাদা। এই গল্পগুলিতে আছে শুধু বাস্তবতা আর সেখানেই এর সার্থকতা। গল্প গুলির সময়কাল প্রমাণ করে গোয়েন্দাবিভাগের রহস্যভেদ করার ট্র্যাডিশন। লেখক পেশায় আইপিএস অফিসার কিন্তু তাঁর কলম চালাবার ক্ষমতা যথেষ্টই প্রশংসা কুড়ানোর যোগ্য! আর এই বই পড়ে আরেকটা সত্যি জানতে পারলাম যেটা অন্য কোনও গোয়েন্দা বইতে আমি পাইনি? উত্তর পেতে গেলে পড়ুন এই বইটি! আর যারা পড়ে ফেলেছেন তারা কমেন্ট করে জানান আপনার কেমন লেগেছে এই বইটি...
রিভিউটি লিখেছেনঃ S S
Review
গোয়েন্দাপীঠ লালবাজার
সুপ্রতিম সরকার
লালবাজার
নিপুণ নিধনকান্ডে নরাধমদের নির্বিচারে নিঃশব্দে নিখোঁজ হবার আগেই যুক্তি তর্ক গাল গপ্পোর অসারতার আখ্যান অক্লেশে নিরলস অন্তর্ভেদী অনুসন্ধানে জনসমক্ষে এনে সুবিচারের সৌষ্ঠব সুদূর অতীত থেকে বর্তমানেও তুলে ধরা এক আস্থাভাজন আশ্রয়ের নাম আবালবৃদ্ধবনিতাদের জন্য।
প্রযুক্তির প্রচার প্রসারের এই ব্যাপকতার যুগে অপরাধীদের প্রচলিত আইনে নিয়মকানুনের জালে জড়িয়ে ফেলা বেশ সহজসাধ্য ই হয়ে গেছে, কিন্তু আজ থেকে আরো বছর ত্রিশেক আগে সদ্য ফরেন্সিকের বিস্তারের সাথে নানাবিধ প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শুধু মাত্র নিষ্ঠা সততা সম্বলিত তীক্ষ্মধী সম্পন্ন সেইসব সুপার হিউম্যানরা ছিলেন বলেই পাপ বাপকে ছাড়লেও পাপীকে ছাড়েনি মোটেও।
শ্বাসরুদ্ধকর সব কেস অবস্থা জালে ফেঁসে যে যায়নি তা মোটেও নয় কিন্তু ফিকশনের চেয়ে বাস্তবের অ্যাকশন বড়ো বিচিত্র।বন্ধুর যে পথে কল্পনার ফেলুদা ব্যোমকেশ কিরীটি একেনবাবুরা সমাধানের অভাবনীয় পথ খুঁজে পেলেও লালবাজারের হোমিসাইডের ডাকসাইটে গোয়েন্দাদের খাটতে হয়েছে প্রচুর।
ব্যক্তিগত ভাবে এইসব নৃশংস হত্যাকান্ডের প্যাটার্ণ জ্ঞাত হলেও অজ্ঞাতসারে বুক চিরে বেরিয়ে এসেছে দীর্ঘ শ্বাস বাইশ বছরের ফুটফুটে গৃহবধূ দেবযানী আর সন্তানসম্ভবা বেলারানী অকাল বোধনে।কিশোর অনুরাগ আগরওয়াল কিংবা শিশু হারুন হত্যায় মনে পড়ে যায়;
"মানুষ বড় শস্তা,কেটে, ছড়িয়ে দিলেও পারত
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো
অপরাধীদের মুখখানা বিজ্ঞাপনের আগেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলেই অনাচার সমাজ থেকে ছাড়ত।"
সুপ্রতিম সরকারের সত্যসন্ধানে এই অপ্রতীম চেষ্টা কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ করার জন্য রইলো শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।
রেটিং: ৪.৭৫
রিভিউটি লিখেছেনঃ Esrat
বইঃ গোয়েন্দাপিঠ লালবাজার (১)
লেখকঃ সুপ্রতিম সরকার।
শুরুর গল্পটায় অনেক বেশি রোমাঞ্চকর অনুভূতি কাজ করলো। এভাবেও মেরে ফেলা যায়? ধীরেধীরে অন্যন্য গল্প মনের ভেতর প্রশ্নের পাশাপাশি নিজেকে একজন গোয়েন্দা ভাবতে বাধ্য করেছে। দ্বিতীয় গল্পটিও তেমনি, " মানুষ বড় সস্তা, কেটে ছড়িয়ে দিলেও পারতো"। আসলে গোয়েন্দাপিঠ লালবাজার ১ নিয়ে আরো ভাল লাগার কারণ এর ভূমিকায় থাকা একটি রহস্য! এমন কতই না রহস্য রয়েছে যা এখনো কোন সমধান হয়নি।
রিভিউটি লিখেছেনঃ BatMaN
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।