বিশ্বাসঘাতক || নারায়ণ সান্যাল Biswasghatak by Narayan Sanyal

বিশ্বাসঘাতক || নারায়ণ সান্যাল Biswasghatak by Narayan Sanyal

ব‌ই - বিশ্বাসঘাতক 
লেখক - নারায়ণ সান্যাল 
প্রকাশনা - দে'জ পাবলিশিং 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক আনুকূল্যে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় তৈরি পরমাণু বোমা ' লখিন্দরের বাসর ঘরের ' কোন ' ছিদ্র ' গলে সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে পৌঁছালো তাই এক রূদ্ধশ্বাস থ্রিলার ব‌ই 'বিশ্বাসঘাতাক'।

ব‌ইটি 'কী' ,'কে' এবং ' কেন' এই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ব‌ইটিকে পুরোপুরি থ্রিলার ব‌ই বলা যায়না। কারণ ব‌ইটির প্রথম ভাগ বিজ্ঞান বিষয়ক - পরমাণু বোমা কী ও কীভাবে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের চেষ্টায় পরমাণু বোমা আবিষ্কার হয়েছে তার এক সহজসরল কাহিনী আছে।

বাকি অংশে কে কীভাবে কোন স্বার্থে এই 'বিশ্বাসঘাতাকতা' করে এবং কীভাবে এফ.বি.আই গোয়েন্দারা 'বিশ্বাসঘাতাক'কে খুঁজতে লাগে তার এক টানটান কাহিনী আছে।

বিজ্ঞান বিষয়ক সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা এই বইটাতে থ্রিলের অভাব নেই ।

আরো একজন পাঠকের রিভিউ
atom bomb বানানোর জন্য বিখ‍্যাত / কুখ্যাত ম‍্যানহাটান প্রোজেক্ট কে প্রেক্ষাপটে রেখে অসাধারণ মুন্সিয়ানায় লেখা নারায়ণ সান্যালের উপন্যাস বিশ্বাসঘাতক।

বিশ্বাসঘাতক আসলে কে? এই অমোঘ প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন লেখক। 

গল্প যত এগিয়েছে তত twist & turn নিয়েছে বিভিন্ন দিকে।

বাস্তবের ক্যানভাস থেকে বইয়ের পাতায় লেখক যেভাবে সহজ সরল ভাষায় কঠিন বিজ্ঞান, মানুষের ক্রূরতা, বিশ্বাসঘাতকতা তুলে এনেছেন অযথা তথ্যের কচকচানি বাদ দিয়ে, তা সত্যি সাধুবাদ যোগ্য, অবশ্যপাঠ্য।

বিশ্বাসঘাতক ( নারায়ণ সান্যাল )
প্রকাশক- দে'জ পাবলিকেশন

চির উন্নত বিদ্রোহী শির লোটাবে না কারও পায়ে
তোমারেই শুধু করিব প্রণাম ,অন্তরতম প্রভু! 
জীবনের শেষ শোণিতবিন্দু দিয়ে যাব দেশ ভাইয়ে, 
রহিবে বিবেক! সে শুধু আমার! বিকাবো না তারে কভু! 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির  পরাজয়ের পর নানা রকম আর্থিক এবং সামরিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ফিনিক্স পাখির মত উত্থান ঘটে জার্মানীর যার নেতৃত্বে ছিলেন হিটলার। তিনি তৃতীয় রাইখস্ট্যাগের স্বপ্ন বিক্রী করে জার্মানির মসনদে বসেন। প্রথমেই তিনি ইহুদিদের দেশের শত্রু বলে চিহ্নিত করেন।এবং অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন।এই অত্যাচারের শিকার হন আইনস্টাইন,নীলস বোর,ৎজিলার্ড  এর মত বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানীরা।একই সময় ইতালিতে উঠে আসেন বেনিটো মুসোলিনি। একনায়কতন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের বিশ্বত্রাস করে তোলেন। 

হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানির ঘুরে দাঁড়িয়ে পেশিশক্তির মাধ্যমে একচ্ছত্র কায়েম করার চেষ্টা এবং আমেরিকার মিত্রশক্তির পক্ষালম্বী হয়ে অক্ষশক্তিকে হারিয়ে দেওয়ার পিছনে একটিই কারণ ছিল।সেটা হল অ্যাটম বোম।যেটা তৈরীর পিছনে অবদান ছিল সেই জার্মান বৈজ্ঞানিকদেরই ।যারা হিটলারের অত্যাচারে অত্যাচারিত হয়ে আমেরিকা পালিয়ে আসেন।শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পৃথিবী একসময় শান্তও হয়। কিন্তু থেকে যায় শুধু  পেশিশক্তির অন্যায্য আস্ফালনের সামনে থেমে যাওয়া কোন এক হিরোশিমা অথবা নাগাসাকি।কালচক্রকে স্তব্ধ করে দেওয়া সুখ্যাত অথবা কুখ্যাত কোন এক ফ্যাট ম্যান অথবা লিটিল বয়। কেমন ছিল ফ্যাট ম্যান অথবা লিটিল বয়ের তৈরীর গল্প?কেমন ছিল সেই বিজ্ঞানীদের দিন রাত্রি এক করে চেন রিয়্যাকশন তৈরীর গল্প? অথবা কেমন ছিল  রাজনীতি দ্বারা বিজ্ঞানকে ভুলুন্ঠীত করার অতি আগ্ৰাসী নীতি যা কিনা হিটলার থেকে হ্যারি ট্রুম্যান হয়ে আবহমান কালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য...কেমন করে এক সর্বজন গ্ৰাহ্য বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী কার্ল ফুকস হয়ে যান আমেরিকার 'ডেক্সটার' এসব জানতে গেলে আপনাকে পড়তে হবে নারায়ণ স্যানালের বিশ্বাসঘাতক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা এই গল্পে অত্যন্ত সুচারুভাবে ভাবে দেখানো হয়েছে লিটিল বয় আর ফ্যাট ম্যান তৈরীর ইতিহাস এবং তার সাথে যুক্ত বিজ্ঞানীদের চরিত্র । কেন বারবার  রাজনীতির কাছে পদদলিত হয়েছে বা হচ্ছে বিজ্ঞান সে প্রশ্নও অতি সুকৌশলী পন্থায় তুলে ধরা হয়েছে ক্লাউস ফুকসের চরিত্রের মাধ্যমে।উপরিপাওনা হিসেবে থেকে যায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আঁচে লেখা আমেরিকা রাশিয়ার ঠান্ডা লড়াই সম্পর্কে জানতে গেলে এই বই অবশ্য পাঠ্য।

রিভিউটি লিখেছনঃ Arindam

পাঠ প্রতিক্রিয়া - বিশ্বাসঘাতক
লেখক - নারায়ণ সান্যাল

আমার ধারণা যে বইটার কথা আমি বললাম এই গ্রুপ এ অনেকেই এই বইটা ইতিমধ্যেই পরে ফেলেছেন। আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল আজ ইচ্ছেপূরণ হলো।

এই বইয়ের প্রেক্ষাপট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, পরমাণু বোমা আর বিখ্যাত ম্যানহাটন প্রজেক্ট। তবে নাম সারাংশ এর দিক দিয়ে দেখলে এই বই একজন বিশ্বাসঘাতক এর কথা যিনি ম্যানহাটন প্রজেক্টের গোপন নথি রাশিয়া তে পাচার করেছিলেন। 

অসাধারণ লেখনী আর বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্যাদি এই বই টিকে সমৃদ্ধ করেছে। যারা বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখা পড়তে ভালোবাসেন তাদের খুব ভালো লাগবে। তাছাড়া আমার মনে হয় এ বইটি সবার পড়া উচিত।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Somnath Seal

বই- বিশ্বাসঘাতক
লেখক- নারায়ণ সান্যাল
বইটি এককথায় অসাধারণ। আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গোপনে পরমানু বোমা বানিয়েছিল ও জাপানের ওপর ফেলেছিল তার বর্ণনা খুব প্রাঞ্জল ভাষায় দেওয়া আছে। উপরন্তু রাশিয়া কীভাবে ওই বোমা তৈরির ফর্মুলা পেয়েছিল ও কোন বিজ্ঞানী বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকা পালন করেন তার বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। এর সাথেই আমাদের খুব পরিচিত বিজ্ঞানীদের কয়েকটি অজানা দিক ও জানা যায়।
ধন্যবাদ।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Shanti Swarup

বই: বিশ্বাসঘাতক
লেখক: শ্রী নারায়ণ সান্যাল

"চির উন্নত বিদ্রোহী শির লোটাবে না কারও পায়ে
তোমারেই শুধু করিব প্রণাম, অন্তরতম প্রভু!
জীবনের শেষ শোণিতবিন্দু দিয়ে যাব দেশ-ভাইয়ে
রহিবে বিবেক! সে শুধু আমার! বিকাবো না তারে কভু!"

- কবি উইলিয়াম টেল

ক্লাস নাইন- টেন- ইলেভেন- টুয়েল্ভে যে তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীদের নাম পড়েছিলাম, মতবাদ পড়েছিলাম, সেই রাদারফোর্ড, চ্যাডউইক, নীলস্ বোহর্, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, হাইজেনবার্গ- সবার সাথে যেন আলাপ করিয়ে দিল এই বই। পারমাণবিক বোমা আবিষ্কারের সুতোয় এক একটা ফুলের মতো এই বৈজ্ঞানিকদের কথা নিয়ে নারায়ণ সান্যাল যে মালা গেঁথেছেন, তার গন্ধ ছুঁয়ে গেছে সমকালীন রাজনৈতিক পরিবেশকেও। 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট' এর বিশদ ধারণা, ডজনখানেক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর অবদান; ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়কদের কাছে বৈজ্ঞানিকদের অসহায়তা এবং তার ফলস্বরূপ হিরোশিমা- নাগাসাকির... পড়তে পড়তে সত্যিই শিহরিত হতে হয়। মানব সভ্যতার এক নগ্নতার দলিল। আর বিবেকের তাড়নায় এক বৈজ্ঞানিকের এই চরম গোপনীয় নথি রাশিয়ার কাছে গোপনে হস্তান্তরের বাস্তব গল্প। এভাবেই তো স্কুলে বিজ্ঞান জানতে চেয়েছিলাম, চেয়েছিলাম এমনভাবেই ইতিহাসকে বুঝতে। নারায়ণ সান্যাল মহাশয়ের এই গল্প পাঠককে ভাবিয়ে তোলার গল্প। বিশ্বাসঘাতক 'ডেক্সটার'কে খোঁজার গল্প। 'বিশ্বাসঘাতক' এর গল্প।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Souvik Sadhukhan

বিশ্বাসঘাতক- নারায়ণ সান্যাল

কখনো কখনো একজন মাত্র মানুষের জন্য বদলে যায় সমস্ত পৃথিবীর ভাগ্য- কিন্তু সে গল্পের নায়ক নাও হতে পারে, হতে পারে সেই হয়তো প্রতিনায়ক। আণবিক বোমার বিখ‍্যাত " ম‍্যানহাটান প্রোজেক্ট" এর প্রেক্ষাপটে অনন্যসাধারণ মুন্সিয়ানায় লেখা নারায়ণ সান্যালের কালোত্তীর্ণ উপন্যাস " বিশ্বাসঘাতক"।

বিশ্বাসঘাতক আসলে কে? কে অত্যন্ত গোপনীয় ম‍্যানহাটান প্রোজেক্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শত্রুশিবিরে চালান করে দিচ্ছে? এই খোঁজ নিয়ে গল্প এগিয়ে চলে, বারংবার মোচড় খায় বিভিন্ন দিক থেকে। উঠে আসে নামকরা বিজ্ঞানীদের নাম, পাঠক মনে করেন এই বুঝি ধরা পড়ে গেল গুপ্তচর। টানটান উত্তেজনার মধ্যে শেষে প্রকাশ পায় কে বিশ্বাসঘাতক, কেন ই বা সে এমন করেছে। 

ভালো: 
 ১. অসম্ভব পড়াশোনা করে লেখা যুগের জীবন্ত দলিল
২. লেখকের টানটান সাসপেন্স ধরে রাখার মুন্সিয়ানা
৩. সরল ভাষার ব্যবহার
৪. অযথা তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত নয় 

খারাপ: 
নেই বললেই চলে। তবে " বিশ্বাসঘাতক" কে পরের দিকে কেমন জীবন ভোগ করতে হয়েছিল, সেই কৌতূহল থেকেই যায়। 

সিদ্ধান্ত: অবশ্যপাঠ্য

বিশ্বাসঘাতক
        নারায়ণ সান্যাল 
সেই ছোটবেলা থেকে যে তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীদের নাম পড়েছিলাম, মতবাদ পড়েছিলাম, সেই রাদারফোর্ড, চ্যাডউইক, নীলস্ বোহর্, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, হাইজেনবার্গ- সবার সাথে যেন আলাপ করিয়ে দিল এই বই। পারমাণবিক বোমা আবিষ্কারের সুতোয় এক একটা ফুলের মতো এই বৈজ্ঞানিকদের কথা নিয়ে নারায়ণ সান্যাল যে মালা গেঁথেছেন, তার গন্ধ ছুঁয়ে গেছে সমকালীন রাজনৈতিক পরিবেশকেও। 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট' এর বিশদ ধারণা, ডজনখানেক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর অবদান; ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়কদের কাছে বৈজ্ঞানিকদের অসহায়তা এবং তার ফলস্বরূপ হিরোশিমা- নাগাসাকির... পড়তে পড়তে সত্যিই শিহরিত হতে হয়। মানব সভ্যতার এক নগ্নতার দলিল। আর বিবেকের তাড়নায় এক বৈজ্ঞানিকের এই চরম গোপনীয় নথি রাশিয়ার কাছে গোপনে হস্তান্তরের বাস্তব গল্প।

 নারায়ণ সান্যাল মহাশয়ের এই গল্প পাঠককে ভাবিয়ে তোলার গল্প। বিশ্বাসঘাতক 'ডেক্সটার'কে খোঁজার গল্প।

অবশ্য পাঠ্য (মতামত ব্যক্তিগত)

রিভিউটি লিখেছেনঃ KศມຮнḯK 🇮🇳

বই: বিশ্বাসঘাতক
লেখক: নারায়ণ সান্যাল
এ যেন বই না,লেখক দ্বারা সৃষ্ট চরিত্রের ভবিষ্যতবাণী। এক কথায় অসাধারণ।
ছোটবেলা থেকে যেসব বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার পড়ে আসছি, তাদের জীবন ও সমকালীন রাজনৈতিক মহলের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এমন ভাবে তুলে ধরা, যেনো নিজেই ডেক্সটার কে খুঁজে বেড়াচ্ছি এরপর কি হবে জানার জন্য।
বইটার রেফারেন্স অনেকদিন আগেই পেয়েছিলাম আমার এক স্যার এর কাছে কিন্তু নানা অছিলায় পড়া হয়নি।
বইটা পড়ার আরেকটা কারণ ছিল,
বইটা লেখা মানব সভ্যতার সব থেকে ভয়ংকর সুন্দর আবিষ্কার
পরমাণু বোমা নিয়ে যা আজকের দিনে সবথেকে বেশি সমালোচিত বিষয় এর একটি। অতএব সমস্ত পাঠক বন্ধুদের অনুরোধ করবো বইটা পড়ার জন্য।
এই গ্রুপে এটা আমার প্রথম রিভিউ, তাই ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
সাইলেন্ট রিডার হিসেবে বর্ণপরিচয় চ্যানেলে এক্টিভ ছিলাম তাই রিভিউ দিতাম না। এখন সাহস করে একটা রিভিউ লিখে বেশ ভালো লাগছে আর ভবিষ্যতে লেখার জন্য উৎসাহও পাচ্ছি। বই পড়ার পাশাপাশি আমি সিনেমাপ্রেমী তাই পরবর্তী রিভিউ গুলো বই ও সিনেমা দিয়ে হবে। আশা করছি গ্রুপের সকল বন্ধুরা আমাকে গ্রহণ করবে।

Post a Comment

0 Comments