আঁধার আখ্যান
কৌশিক মজুমদার
প্রকাশক- বুকফার্ম
মূল্য-২৫০ টাকা
বইটি ১৫ টি গল্পের সংকলন।
১) নির্জন স্বাক্ষর, (২) স্ন্যাপচ্যাট, (৩) কাঁটা, (৪) পোস্টকার্ড, (৫)টেলিপ্যাথি, (৬) পিপহোল, (৭) শল্লের নাভি, (৮) অভিশাপ, (৯)মরণের পরে, (১০) প্রেতিনী, (১১) বারো মিনিট, (১২) শেষমেষ (১৩) সে এক অদ্ভুত পার্টি, (১৪) পাকড়ো ছোড়ো, (১৫) সাজঘর। ১৫ টি গল্পের মধ্যে মৌলিক(১১ টি) এবং অনুবাদ (৪ টি)। ১৫টি গল্প আবার রহস্য, ভৌতিক, ফ্যান্টাসি কল্পবিজ্ঞান, অপরাধ এর উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে।
বইটিতে বেশ ভালো লেগেছে প্রতিটি গল্পের শেষে লেখকের জবানি, কি ভাবনা চিন্তার উপর ভিত্তি করে বা কোন পটভূমিকায় তিনি গল্প লিখেছেন সেটা সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন। অনুবাদ গল্পগুলো আমার ব্যক্তিগত ভাবে বিশেষ ভালোলাগেনি।ক্ল্যাসিকাল লকড রুম মিস্ট্রি নিয়ে লেখা প্রথম গল্প নির্জন স্বাক্ষর বেশ ভালো লেগেছে। পিপহোল, শল্লের নাভি, পোস্টকার্ড, প্রেতনি, টেলিপ্যাথি, অভিশাপ , কাঁটা। কাঁটা গল্পটি নন ক্রাইম স্টোরি, এই গল্পটির মধ্যে দিয়ে পাঠকরা পরিচিত হবেন অপরাধ সম্বন্ধীয় গল্পের নতুন একটি ধারার সাথে,যেখানে গল্পে অপরাধ নয় বরং অপরাধ মূলক কর্মের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়েছে।গল্পটি বেশ অন্যরকম। শিশুমনের গহীন অন্ধকার নিয়ে লেখা প্রেতনি গল্পটি বেশ নতুনত্ব। শল্লের নাভি এই গল্প সংকলনের সেরা গল্প বলা যেতে পারে, তন্ত্রসাধনার উপর ক্লাসিক ভয়ের গল্প। অভিশাপ গল্পটি গ্রামীণ পরিবেশে অপদেবতার গল্প, বেশ সুন্দর এগোচ্ছিল। বাঁধ সাধল শেষ টা। শেষটা বেশ আকস্মিকআকস্মিক। পিপহোল গল্পটি খুব ভালো লাগলো শেষের টুইস্ট এর জন্য। পোস্টকার্ড গল্পটি ও একাধারে লকড্ রুম মিস্ট্রি। চেনা ছকের অপরাধের অন্যরকম 'কারন' দর্শানোর জন্য স্ন্যাপচ্যাট গল্পটি লেখা। মরণের পরে গল্পটি সাদামাটা এবং ভয়ের বা অন্ধকারে তেমন কিছু নেই। পাকড়ো ছোড়ো (মূল গল্প Catch and relese ) মানুষের মনের এক অন্ধকার দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই গল্পে। খেলার নিয়ম তৈরি ও নিয়ম ভাঙা কি খেলোয়াড় এর হাতে! বাকি সাইন্স ফিকশন, ফ্যান্টাসি,ডিস্টোপিয়ান,অনুবাদ গল্প ১২ মিনিট(সাইন্স ফিকশন/ফ্যান্টাসি) , শেষ মেষ (রোয়াল ডাল রচিত Lamb to the slaughter র অনুবাদ), সে এক অদ্ভুত পার্টি( সাইন্স ফ্যান্টাসি), সাজাঘর (মূল কাহিনী Punishment Room)খুব একটা ভালো লাগেনি তাই বিশদভাবে লিখলাম না। ভিন্ন স্বাদের ভিন্ন ভিন্ন গল্প পড়ার জন্য বইটি পড়াই যেতে পারে। নামে আঁধার থাকলেও লেখক খুব বেশী অন্ধকার ঢালেন নি তার রচনায়। আজকাল তন্ত্রমন্ত্র, ওকাল্ট এর পটভূমিতে লেখা অন্যান্য বইয়ের বদলে এই বইটি স্বাদবদল করবে।
Rupa:
#Reaction
বই - আঁধার আখ্যান
লেখক - কৌশিক মজুমদার
বইটি মূলতঃ একটি গল্পসমগ্র যেখানে ১৫ টি গল্প রয়েছে যার মধ্যে ১০ টি গল্প লেখকের স্বরচিত আর ৫ টি অনুবাদকৃত। রহস্য, ভৌতিক, রোমাঞ্চ, অলৌকিক, ক্রাইম ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গল্প বইটিতে আছে, আর একধরনের গল্প আছে যেটাকে বলে নন ক্রাইম স্টোরি, নন ক্রাইম স্টোরি বলতে যেখানে কোনো অপরাধ ঘটে না কিন্তু অপরাধের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। বইটিতে বিভিন্ন ধরনের গল্প থাকলেও একটি বিষয় কমন সেটা হলো অন্ধকার, মানুষের মনের অন্ধকার বা বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে নিহীত ডার্কনেস এই বইটির আসল থিম। প্রতিটি গল্প বিভিন্ন স্বাদের হওয়ায় একঘেয়ে লাগে না, লেখার বৈচিত্র্য থাকায় পড়তে বেশ ভালো লাগে, যারা একটু অন্য ধরনের লেখা পড়তে ভালোবাসেন পড়ে দেখতে পারেন।
রেটিং - ৮/১০
বইয়ের নাম : আঁধার আখ্যান
লেখক : কৌশিক মজুমদার
প্রকাশক : বুকফার্ম
বইটির কভার দেখে বইটির বিষয়বস্তু সম্বন্ধে মনের ভিতরে ধারণা জন্মালেও গল্পগুলি তার থেকেও "ডার্ক"। সৌভিক চক্রবর্তী প্রদত্ত ভূমিকা বইটির প্রতি আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দেয়।
কৌশিক মজুমদার রচিত "আঁধার আখ্যান" বইটিতে কিছু অন্ধকারের সন্ধান খুঁজে পাওয়া যায় যা অন্বেষণে মনের অনেক গভীরে প্রবেশ করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পন্থার সন্ধান পাওয়া এক প্রকার অসম্ভব।
বইটিতে মৌলিক এবং অনুবাদ নিয়ে রয়েছে মোট পনেরোটি গল্প।
১. নির্জন স্বাক্ষর :
প্রাইভেট ডিটেকটিভ তুর্বসু রায় এবং আই.জি সুকল্যাণ মিত্রের মধ্যে কথপোকথন নিয়ে এই গল্প শুরু। সুকল্যাণ মিত্র তার জীবনের একটি অমীমাংসিত কেস হিস্টরি প্রাইভেট ডিটেকটিভকে শোনাতে ব্যস্ত যা দগদগে ঘায়ের মতো বেঁচে আছে আই জির কর্মজীবনের ইতিহাসে। কলকাতার বিখ্যাত নাট্যকার রঘু শর্মার হত্যা রহস্য। এটাকে একটি "ক্লাসিক্যাল লকড রুম মিস্ট্রি" বলা যেতে পারে।
২. স্ন্যাপচ্যাট :
একটি চিঠির বয়ানে প্রকট হতে থাকে বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিটি অধ্যায়। নিজের স্বামীকে ঠকিয়ে পালিয়ে যাওয়া একজন স্ত্রীর পরকীয়ার মুহূর্তগুলোকে চিঠির মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে সেই মানুষটির কাছে তুলে ধরেছে একজন পুরুষ যার স্ন্যাপচ্যাটে পরিচিত হয়েছিল সেই মহিলা অর্থাৎ সুজাতার সঙ্গে। প্রেমের ধারায় ভেসে গেলেও ছেলেটি তার আরেক ভালবাসাকে ভুলে যায়নি। সে গাছ ভালোবাসে, ফুল ভালোবাসে, বাড়িতে গড়তে চায় একটি সুন্দর গোলাপের বাগান। কিন্তু তারপর.....
৩. কাঁটা :
হাউজিং কমপ্লেক্সে আজকাল যে যার মতো বাঁচতে ভালোবাসে।তাদের অন্যের জগতে উঁকি দিয়ে দেখার মতো সময় বা ইচ্ছা কোনোটাই নেই। কিন্তু এই চিন্তাগুলো রণিতা দেবীর জন্য খাটে না। সোসাইটির সমস্ত খবর তার নখদর্পণে। কিন্তু সে যখন জানতে পারে তার সামনের ফ্ল্যাটের সোহম চলে যাচ্ছে তখন সন্দেহ বাসা বাধে তার মস্তিষ্কে। আর সেই সন্দেহ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে যখন সোহমের স্ত্রী স্নিগ্ধার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায় রণিতা দেবীর জন্য। পরে সবকিছু ঠিক হলেও এক ঘন চক্রান্তের জাল আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আমাদের তথাকথিত সিস্টেমকে। কী ছিলো সেই চক্রান্ত, এর পরে কী হলো সেই দম্পতি এবং রণিতা দেবীর।
৪. পোস্টকার্ড :
ঝাঁ চকচকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছে ধৃতি যেখানে এক মাস আগে মারা গিয়েছেন এই ফ্ল্যাটের মালিক চিত্রনাট্যকার সুপ্রিয় বসু। নিজের লাইব্রেরীতে মই থেকে পড়ে গিয়ে ঘটে সেই দুর্ঘটনা। কেমন মানুষ ছিলেন এই সুপ্রিয় বসু ? ভালো এবং খারাপ এই দুইয়ের হাওয়ায় খেলা করতো তার চিন্তন শৈলী। পেশায় জার্নালিস্ট ধৃতির এই মৃত্যু নিয়ে আগ্রহ আরো বাড়িয়ে তোলে একটি পোস্ট কার্ড, পাঠিয়েছেন সুপ্রিয় বাবুর বন্ধু অরবিন্দ। তাঁর ছবি "বিষণ্ণ সকাল" এর সাফল্যতার বিষয়ে নিজের হাতে লেখা চিঠির উত্তরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। ছবিটির সাফল্যর জন্য শুভেচ্ছা বার্তাও ছিল বর্তমান চিঠিতে। সুপ্রিয় বসু মারা গিয়েছেন কয়েক মাস আগে আর তার ছবি রিলিজ করেছে দুই সপ্তাহ হয়েছে ! আশ্চর্যের বিষয় হলো, চিঠিটাও ডেলিভারি হয়েছে মাত্র তিনদিন আগেই।
৫. টেলিপ্যাথি :
কুহুর সাথে অচেনা মানুষটির কথায় সে ঘাবড়ে যায়। মলয় সামন্ত দাবি করে যে কুহুর মস্তিষ্কে চলতে থাকা সবকিছুই সে জানতে পারে। কুহুর ক্ষেত্রেও ঠিক একই অনুভূতি, তাকে চরম পরীক্ষার সামনে ফেলে প্রতি মুহূর্তে। চরম আতঙ্কের মধ্যে কুহু একটি নির্মম উপসংহারে উপনীত হয় যার সাক্ষী থাকে মলয় সামন্ত নিজে।
৬. পিপহোল :
কালিম্পঙে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে সমস্যায় পড়ে মৌসুমী এবং তার বন্ধু নিধি। অবশেষে পুরোনো সাহেবি বাংলোবাড়িতে থাকবার ব্যবস্থা হয় মাসিক দশহাজার টাকার বিনিময়ে। কিন্তু পাশে আরেকটি তালা বন্ধ ঘরের ভিতরে অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায় নিধি।
দরজায় চোখ লাগিয়ে মৌসুমী পরে যা বুঝতে পারে তাতে সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হলেও ধোঁয়াশা থেকে যায় তাদের চারপাশে।এবং সেই রহস্য উদ্ঘাটনের বাসনা প্রশ্ন হয়ে ঘিরে ধরে বর্তমান মালিক বৃদ্ধ পেম্বা তামাংকে। যার মাধ্যমে এই বাড়ির এক কলঙ্কময় ইতিহাস তার রূপ মেলে ধরে নবাগতা ভাড়াটিয়াদের সামনে।
৭. শল্লের নাভি :
পিতামহ স্বর্গীয় বলহরি মজুমদারের খাতা ঘেঁটে লেখক জানতে পারে তার পিতামহের এমন নামের পিছনে আসল কারণ। তার আসল নাম ছিল প্রফুল্লকুমার মজুমদার। বাংলাদেশে থাকাকালীন তাঁর ছোটোকাকা পরেশচন্দ্র পাশে একটি শ্মশানে ডোম হরিয়ার সান্নিধ্য লাভ করে। স্বভাবে বাউন্ডুলে প্রকৃতির মানুষটিকে বিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও তার চরিত্রে কোনো পরিবর্তন আসে না। একদিন সেই হরিয়া শ্মশানে বাজ পড়ে মারা যায়। প্রফুল্লকুমারের কাকা স্বভাবতই ভেঙে পড়ে। অন্যদিকে গ্রামে হরিয়ার শরীর সঠিক সময়ে দাহ করা সম্ভব হয় না। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে আংশিক শরীর পোড়ানো সম্ভব হলেও হরিয়ার নাভি আর মাথার খুলি কেউ খুঁজে পায় না। অমাবস্যায় হরিয়ার মৃত্যু হয়েছে। খুলি আর নাভি পাওয়া যায়নি। চন্ডাল অপঘাতে মরলে চুন্ডু হয়। গয়ায় পিন্ডি দিলেও তার মুক্তি নেই। নাভি থেকে তৈরি হয় শল্ল। কেন এই জিনিসটি এত ভয়ঙ্কর আর কী অভিশাপ নিয়ে এসেছিল একটি চন্ডালের অপমৃত্যু।
৮. অভিশাপ :
"পানিহাটির অপদেবতা" নামে এই বিশেষ এবং অদ্ভুত লেখাটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রকাশ পায় এক অলৌকিক এবং হাড় হিম করা ঘটনা। ব্রিটিশ আমলে মশলা এবং তামাকের ব্যবসা করে বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছিল কিশোরীমোহন মুখুজ্জে। তার নায়েব হিরু বসাক ব্যবসার স্বার্থে ইংরেজদের নানাভাবে খুশি করার চেষ্টায় জঘন্য কাজ করতে পিছপা হতো না। সেই অভ্যাস গুণে তিনি করে ফেলেন এমন একটি কাজ যার ফলস্বরূপ তার উপর হয় প্রাণঘাতী হামলা। কষ্টদায়ক মৃত্যুর পরে শ্মশান পথে যাত্রা করার সময়ে তার নিষ্প্রাণ শরীরে অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে যা প্রত্যক্ষ করে তাকে নিয়ে চলা শ্মশান যাত্রীরা। লোকে বলে তাকে নাকি দানোয় পেয়েছিল! এক ভয়ঙ্কর অমানিশা গ্রাস করে কিশোরী এবং তার পরিবারকে। কেন এমনটা হলো! সেই তথ্যের ব্যাখ্যা পাওয়া যায় এই গল্পে।
৯. মরণের পরে :
এক বেওয়ারিশ লাশের জন্য কাটাপুকুর মর্গে টাকার বিনিময়ে কিছু ব্যবস্থা করে সার্জারির দুই ছাত্র সুমন এবং রজত। কিন্তু লাশের মধ্যে হঠাৎ করে প্রাণের সঞ্চার হওয়া তাদের মধ্যে নিয়ে আসে অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি। তারপরে......
১০. প্রেতিনী :
কিছু মানুষের অদ্ভুত ধরনের শখ থাকতে পারে। হয়তো সেটা অনেকের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু শখ তো, সহজে সেই নেশা থেকে বাইরে বেরোনো কী সম্ভব ? শুভদীপের মা বাবা তাকে নিজেদের সঙ্গে রাখতে পারেনি। তিন বছর পরে যখন তারা শুভদীপকে নিজেদের কাছে রাখার জন্য মনস্থির করে তখন তার বাবা শুভদীপের অদ্ভুত শখ যাকে সে গবেষণা বলে আখ্যা দেয়, সেই বিষয়ে জানতে পারে। আর সেই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে শুভদীপকে একরকম জোর করে তার বাবা। ফলস্বরূপ ঘটতে থাকে কিছু অলৌকিক ঘটনা। আচ্ছা, শুভদীপের আলাদা থাকার পিছনে আসল কারণটা কী ছিল! শুধুমাত্র একটি অভ্যাস না কি অন্যকিছু.......!
১১. বারো মিনিট :
পৃথিবীতে ক্রমে বিস্তার ঘটে চলেছে ভীনগ্রহীদের। তাদের বিরুদ্ধে একটি জোট গঠন করে ড. অরবিন্দ মুস্তাফি। কিন্তু বর্তমানে কিছু ঘটনায় ড. মুস্তাফিকে সন্দেহ করতে শুরু করে তার সংগঠনের কর্মীরা। নিশ্চিত হতে ঠিক হয় প্রাণদন্ড। কিন্তু মুস্তাফি নিজেকে এত সহজে শেষ হতে দিতে পারে না। তিরিশ তলা বিল্ডিং এর কার্নিশে দাড়িয়ে এক বিকল্প পদ্ধতি বেছে নেয় সে। শেষ পর্যন্ত কী উপসংহার অপেক্ষা করছে তার জন্য! এসব কিছুই বর্নিত আছে এই গল্পে।
১২. শেষ মেষ :
স্বামীর জন্য অপেক্ষারত মেরি মালোনি এক জঘন্য অপরাধ করে ফেলে। খুন! আর হাতিয়ারকে লুকোতে সে বেছে নেয় এক অসাধারণ পদ্ধতি। হ্যাঁ, অসাধারণ। কারণ নিয়ম মেনে অপরাধ করাটাও একটা শিল্প, সকলে তা পারে না।
১৩. সে এক অদ্ভুত পার্টি :
ভিক আর এন দুই বন্ধু পার্টি করার জন্য হাজির হয় অন্ধকার গলি পেরিয়ে একটি বাড়িতে। পরিচয় হয় কিছু সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে। ভিকের আশ্চর্য গুণে সহজেই সে পরিচয় জমিয়ে ফেলে সকলের মধ্যে। কিন্তু এনের সময় লাগে। আর সেই সময়ের মধ্যে সে আবিষ্কার করে একটি কবিতা। গল্পের শুরু আর শেষের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকলেও অজানা অলৌকিকতার সাক্ষী হয় দুই বন্ধু যা তাদের জীবনের সমীকরণ সম্বন্ধে প্রচলিত চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন ঘটায়।
১৪. পাকড়ো-ছোড়ো :
একটি মানুষের মানসিক দ্বন্দ্ধ নিয়ে এই গল্প। যেখানে নায়ক, ভিলেন হলেন সেই মন যে শুধু মাছ ধরতে ভালোবাসে। নিজেকে মাছ শিকারি হিসেবে ভাবতে সে গর্ববোধ করে। কী সেই মাছ আর কী বা সেই মাছ ধরার পদ্ধতি!
১৫. সাজাঘর :
ডমিনিক প্ল্যাটাগ্লিয়া ধৈর্য্যের সীমা অতিক্রম করে। প্রতি ধাপে অত্যাচারের নতুন পন্থায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠা মানুষটা সুযোগ খোঁজে এই নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার। তার মতো আরো অনেক মানুষ বন্দি সেই সাজাঘরে। সে কি পারবে সাজাঘর থেকে পালাতে? কেনই বা তার মতো সকলে এই বর্বরতার শিকার হতে হয়! ডিসটোপিয়ান সমাজের এই অদ্ভুত নিদর্শনের আখ্যান রয়েছে এই গল্পে।
বইটিতে সবকটি গল্পের ভাষা অত্যন্ত সাবলীল। গল্পের দৈর্ঘ্য কম এবং সবথেকে চমৎকার লাগে প্রতি গল্পের শেষে লেখকের জবানি। কল্পবিজ্ঞান, ক্রাইম, রহস্য এবং অলৌকিক ধারায় রচিত এই গল্পগুলোর মারাত্মক মোচড় পাঠককে ভাবতে বাধ্য করে গল্পের শেষ লাইনে। সামগ্রিকভাবে, এই বইটি সকলের ভালো লাগবে বলেই আমার ধারণা।
রেটিং - ৯/১০
রিভিউটি লিখেছেনঃ Trishila Mohanty
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।