বই : টোয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি
লেখক : জুল ভার্ন
অনুবাদ : খালেদ নকীব
প্রকাশনী : পেপার ভয়েজার (বাংলাদেশ)
জুল ভার্নের সাথে পরিচিত নন এমন পড়ুয়া কমই আছেন।আর তাঁর অন্যতম সেরা কাজ 'টোয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি' অদ্রীশ বর্ধন, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় আর সেবা প্রকাশনীর অনুবাদের সুবাদে বাংলা পাঠকরা কৈশরেই পড়ে ফেলেছেন সম্ভবত।তাই বই সম্পর্কে নতুন কিছু বলছি না। শুধু এটুকু জানাই এই অনুদটা হল ফার্স্ট এডিশনের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ,যার কলেবর হল ৪৫০ পৃষ্ঠা! যেখানে পূর্বের আনুবাদগুলো ১০০ পৃষ্ঠার আশেপাশে। অর্থাৎ,মূল বইয়ের তিন চতুর্থাংশ আমাদের পড়া হয় নি!
এবার বলি পূর্ণাঙ্গ বই কেমন লাগল।এক কথায় বললে আজকের পাঠকদের কাছে অর্থাৎ গুগল-উইকিওয়ালা পাঠকদের কাছে মনে হতে পারে প্রচুর অপ্রয়োজনীয় তথ্য ঠেসে দেওয়া হয়েছে বইয়ের ভেতর। কিন্তু এই বই তো আর ২০২২ লেখা নয়, ১৮৭১ সালে লেখা।তাই এত তথ্যের সমাহার —প্রাণীবৈচিত্র, শ্রেণিবিন্যাস, নটিলাসের যান্ত্রিক কৌশলের বর্ণনা, বিভিন্ন ভৌগলিক বর্ণনা, ঐতিহাসিক কিংবা মিথের আটলান্টিসের বর্ণনা আমাকে বিরক্ত তো করেই নি বরং চমৎকৃত করেছে।বিশেষ করে সামুদ্রিক প্রাণীবৈচিত্রের এমন বিস্তারিত বর্ণনা আমাকে বাধ্য করছিল কিছুক্ষণ পরপর গুগল করে দেখতে।
তবে সবারই যে এই তথ্যসমাহার ভালো লাগবে এই নিশ্চয়তা নেই।
এবার আসি অনুবাদে।আমার পূর্বোক্ত তিনটা অনুবাদই পড়া ছিল। তবুও যখন শুনলাম বইয়ের প্রথম এডিশনের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ আনতে যাচ্ছে একটা তরুণ প্রকাশনী তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলাম এই বই পড়তে হবেই।আবার যখন শুনলাম প্রায় নতুন এক অনুবাদক কাজ করছেন এখানে, তখন কিছুটা ভয়ও কাজ করছিল, না জানি কোনো গুবলেট মার্কা অনুবাদ পড়তে হয় কি না।
ভয়ে ভয়ে শুরু করে বুঝলাম অনুবাদকের হাত যথেষ্ট শক্ত।পড়তে গিয়ে আটকাতে হয় নি একেবারেই,খুবই মসৃণ অনুবাদ।তবে সামান্য কিছু জায়গায় একটু ঘাটতি থেকে গেছে, তবে তা পড়ার গতিকে খুব বেশি বাধাগ্রস্থ করার মতো নয়। উপরি হিসাবে আছে বিভিন্ন টীকা,যা কিছু টার্ম বুঝতে খুব সহায়ক হবে।
এক কথায় আরো একবার ক্যাপ্টেন নিমোর সাথে নটিলাসে ভ্রমণ করে এসে বরাবরের মতোই মুগ্ধতা লুকাতে পারছি না। পূর্ণাঙ্গ বইয়ের স্বাদ পেয়ে এবার বরং একটু বেশিই তৃপ্ত।।
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।