বই: দ্য ডিভোশন অফ সাসপেক্ট এক্স
লেখক: কিয়েগো হিগাশিনো
অনুবাদ: সালমান হক
প্রকাশনা: বাতিঘর প্রকাশনী
কাহিনীতে ইয়াসুকো নামের এক মহিলা বিবাহবিচ্ছেদের পর মেয়ে মিশাতো-কে নিয়ে জীবনযাপন করেন। কিন্তু সুখের জীবনে বিপদ হয়ে দেখা দেয় প্রাক্তন স্বামী টোগাশি। ঘটনাক্রমে টোগাশি তাদের ফ্ল্যাটে খুন হয়। মা-মেয়ের রক্ষাকর্তা হিসেবে হাজির হন পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী ইউসুকা নামের এক গণিত শিক্ষক।
অঙ্কে কোনো অজ্ঞাত মান-কে প্রাথমিকভাবে আমরা "x" ধরে নিয়ে এগিয়ে চলি। গণিতবিদ ইউসুকা বা এক্স ক্ষুরধার মস্তিষ্কের সাহায্যে নানা রহস্য তৈরি করেন যা তদন্তকারী অফিসারদের ধাঁধায় ফেলে এবং তাদের সাহায্যকারী হিসেবে এগিয়ে আসেন ইউসুকার ইউনিভার্সিটি জীবনের বন্ধু পদার্থবিদ ইউকাওয়া। বুদ্ধির চাপা লড়াই শুরু হয় দুই যুযুধান রহস্যকারী ও রহস্যভেদীর মধ্যে। শেষ অবধি কি হয় সেটাই এই কাহিনীর মূল উদ্দেশ্য।
শুরু থেকে শেষ অবধি টানটান উত্তেজনা রয়েছে কাহিনীতে। অসম্ভব সুন্দর থ্রিলার এটি। অবশ্য পাঠ্য।
রেটিং: ৯.৫/১০
বই- দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স
ধরণ- থ্রিলার
প্রকাশনী : বাতিঘর প্রকাশনী
কন্যা মিশাতোকে নিয়ে ডিভোর্সি ইয়াসুকোর বসবাস। একটি খাবারের দোকানে কাজ করে দিন যাচ্ছিল কোনোভাবে। কিন্তু ডিভোর্স হয়েও অত্যাচারী স্বামী টোগাশির কাছ থেকে রেহাই পায় না ইয়াসুকো। বার বার এত হয়রানি সহ্য করতে না পেরে একবার ঘটনাক্রমে নিজেদের ফ্ল্যাটে টোগাশিকে খুনই করে বসে সে! এদিকে পাশের ফ্ল্যাটের ভদ্রলোক ইশিগামি, যিনি আবার ইয়াসুকোর প্রতি মনে মনে বেশ দুর্বল, এই খুন টের পেয়ে যান! ইয়াসুকোর মন জয় করতে ভীতসন্ত্রস্ত মা-মেয়ের পাশে দাঁড়ান তিনি! কিন্তু কথা হচ্ছে খুনটা এখন কিভাবে ধামাচাপা দেয়া যায়?
তো,শুরুতেই জেনে ফেললেন খুনি কে! ভাবছেন স্পয়লার হয়ে গেল? মোটেই কিন্তু তা নয়! আসল খেলা শুরু হয় এরপর। এই প্রতিবেশী ভদ্রলোক ইশিগামি কিন্তু বিশাল বুদ্ধির অধিকারী এক গণিতবিদ! এদিকে এই খুনের তদন্ত কর্মকর্তা কুসানাগির বন্ধু আরেক বুদ্ধিমান পদার্থবিদ ইউকাওয়া,কৌতূহলবশত জড়িয়ে পড়েন এই কেসে! পড়বেন নাই বা কেন! টোগাশি খুনের এই কেসের অন্যতম সাস্পেক্ট ইশিগামি যে ঘটনাক্রমে আবার তারই ভার্সিটি জীবনের বন্ধু!
এরপর শুধু দেখে যাবেন দুই প্রবল বুদ্ধিমান বন্ধুর বুদ্ধির কারিশমা, দেখবেন কত সাধারণভাবে অপরাধ লুকানো যায়,দেখবেন কত অসাধারণ ভাবে অপরাধীর ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়! এবং বইটি পড়া শেষে অবশ্যই ভাববেন, এতক্ষণ আসলে কী পড়লাম!!!
সবশেষে আপনাদের ভাবনার জন্য চমৎকার অনুবাদের এই বইটি থেকে পাওয়া একটি প্রশ্ন-
"একটি সমস্যার সমাধান নিজে বের করা কঠিন নাকি সেই সমস্যাটার অন্য কারো সমাধান ঠিক আছে কিনা সেটা যাচাই করা কঠিন?"
রিভিউটি লিখেছেনঃ Saiful Islam
দ্য ডিভোশান অফ সাসপেক্ট এক্স
লেখক - কিয়েগো হিগাশিনো
অনুবাদক - সালমান হক
বইটির প্রথম সন্ধান পাই এই গ্রুপের এক রিভিউ পড়ে। তখনই বইটির প্রতি আগ্রহ জন্ম হয়। এখানে এক ডিভোর্সি মহিলা তার প্রাক্তন স্বামী কে খুন করে। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে প্রতিবেশী গণিত শিক্ষক। সেই শিক্ষক নিজের মত করে ঘটনা সাজায় এবং পুলিশ সেই সাজানো ঘটনার ফাঁদে পা দিয়ে দেয়। কিন্তু ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয় গণিত শিক্ষক এর বন্ধু এক পদার্থবিজ্ঞানী। শেষে কি হলো জানতে হলে পড়ুন বইটি। কারণ ওইটাই বইটার থ্রিল। লেখক জাপানী নাম গুলো তাই একটু খটোমটো। অনুবাদক বাংলাদেশী তাই বাংলাদেশের বাংলা ভাষা এসে গেছে যেমন আলামত যেটাকে আমরা প্রমাণ হিসাবে জানি। এইসব ছোটো খাটো বিষয় গুলো এড়িয়ে গেলে বইটি ভালোই লাগবে। পরিশেষে ধন্যবাদ টিম বর্ণপরিচয়কে এমন একটা বই পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।বই পড়ুন বই পড়ান বইয়ের আলোকে আলোকিত হোন। ধন্যবাদ।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Abhijit Mondal
বই: দ্যা ডিভোষণ অফ সাসপেক্ট এক্স
লেখক: কিয়াগো হিগাসিনো
বেশ কিছুদিন থেকে থ্রিলার পড়ে পড়ে যখন ক্লান্ত, স্বাভাবিক ভাবেই চাইছিলাম একটু অন্য কিছু পড়তে, ঠিক তখনই ফেসবুকের এক গ্রুপে জনৈক ব্যাক্তির পোস্টে চোখ আটকে গেল। অনুবাদ খুব কম পড়ি, তার উপর যদি সেটা হয় বাংলাদেশের কোন ব্যাক্তির তাহলে সযত্নে তা এড়িয়ে যাওয়াই আমি সময়ের সঠিক মূল্যায়ন বলে মনে করি। এভাবে আগে বহু সময় বাঁচালেও এবারে পড়ে গেলাম এক অলীক আকর্ষণের ফাঁদে। বলা বাহুল্য আবারও সেই থ্রিলার কিন্তু অভারতীয়। পড়ার পরিধি খুবই কম, তাই এই বিশ্ব বিখ্যাত সাহিত্য ও সাহিত্যিক সম্পর্কে গত চারদিন আগে জানতে পারি। গুগল জানায় এই থ্রিলারটির জন্যে লেখকের ঝুলি বহু পুরস্কারের ভারে ভারাক্রান্ত।
"দ্য ডিভোশান অব সাসপেক্ট এক্স" এর লেখক প্রখ্যাত জাপানী থ্রিলার সাহিত্যিক কিয়েগো হিগাশিনো যার অনুবাদ করেছেন সালমান হক। গল্পটি এরকম, অত্যাচারী স্বামীর হাত থেকে পালিয়ে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিস্তরঙ্গ ভাবেই কেটে যাচ্ছিল ইয়াসুকোর দিন গুলি। কিন্তু একদিন আবার দেখা দিল সেই মানুষরূপী বিভীষিকা। নেশার টাকার জন্যে পাঁচ বছর আগে বিবাহ বিচ্ছিন্না তার স্ত্রী ইয়াসুকার জীবন নরক করতে দ্বিধা বোধ করেনা সে। পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলে, একসময় খুন হয়ে যায় সে ইয়াসুকা আর তার মেয়ের হাতে। ত্রাণ কর্তা হিসেবে এগিয়ে আসে তাদের পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী নিরীহ এক গণিতের শিক্ষক অযাতিত ভাবেই। কিন্তু কি তার উদ্দেশ্য? কেন মধ্য বয়সী এক মহিলা আর তার মেয়েকে এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে? সেই গণিতের শিক্ষকের পরামর্শ মত চলতে থাকে ইয়াসুকো আর তার মেয়ে মিশাতো। যথারীতি নদীর ধারে লাশ পরে থাকতে দেখে অনুসন্ধান করে পুলিশ খোঁজ পেয়ে যায় ইয়াসুকার। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও খুনী হিসেবে ইউসুকা কতটা সম্ভবনাময় তার খোঁজেই গল্প এগোতে থাকে। জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বাদ যায়না তার প্রতিবেশী গণিতের শিক্ষক ইশিগামি। পুলিশ যখন খুনী ও খুনের কারন খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছে, ঠিক তখনই জনৈক পুলিশের বন্ধু পদার্থবিদ্যার গবেষক ইউকাওয়া কৌতূহল দেখায় পুরো ঘটনা তে। তার এই কৌতূহল আগ্রহতে রূপান্তরিত হয় যখন সে জানতে পারে সন্দেহভাজন মহিলার প্রতিবেশী তারই বহু পুরোনো বন্ধু ব্যাতিক্রমী জিনিয়াস ইশিগামি, যার সাথে বিশ্ব বিদ্যালয়ের পর থেকে আর কোন যোগাযোগ নেই। এরপর গল্প চলতে থাকে তার নিজের গতিতে।
গল্পের শুরুতেই পাঠক জানতে পারে কে খুন হয়েছে, কেন খুন হয়েছে, কিন্তু তার পরেও কি আছে ২৮৮ পাতা জুড়ে? আছে, খুনের কিনারা করতে আসা পুলিশ ও তাদের অণুসন্ধান প্রক্রিয়া, আছে বহু বছর আগে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া দুই জিনিয়াস বন্ধুর পুনর্মিলন,আছে এক প্রেমান্ধ ব্যাক্তির কথা, আর আছে এক জটিল অঙ্ক, যার সমস্যা ও সমাধান দুটোই যেন "পুতুল নাচের ইতিকথা"। পড়তে পড়তে যে প্রশ্নটা উঁকি দিয়েছে বহুবার, এটাকে কি শুধুমাত্র থ্রিলারের তকমা দেওয়া জাস্টিফায়েড হবে? এ যে শুরু থেকে শেষ অবধি কোন অংশে প্রেমের গল্পের কম নয়! কেমন সে প্রেম? কি তার রূপ? কিছুদিন আগে এক আলোচনায় দেখছিলাম অনেকের মতে থ্রিলারে যদি সামান্য হাস্যরস যোগ করা যায় তাহলে উত্তেজনার গুমোটে মৃদুমন্দ বায়ুর আগমনে পাঠক ও হাঁফ ছাড়ে। তাদের সকলকে এই বইটি পড়ে দেখতে বলব, যেখানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে একইরকম উত্তেজনা, প্রতিটি মোড়কে রয়েছে চমক। না, লেখকের প্রয়োজন পড়েনি কোন হাস্যরসের অবতারণা করার, এই উত্তেজনা, এই গুমোট এই দাঁত দিয়ে নখ কাটা ভীষণ ভাবে কাম্য।
বলতে বাধ্য হচ্ছি, জীবনে প্রথম এমন একটা থ্রিলার পড়লাম, যার পরে আর কোন লেখা ভাল লাগবে কি না সন্দেহ হচ্ছে। খুব বাজে অনুবাদ, ভুল শব্দ চয়ন, বানান ভুল, তবু সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে গল্পের বাঁধুনি, তার চোরা টান আর এক কঠিন জটিল অঙ্ক।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Nandita
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।