শোণিত উপাখ্যান: অতঃপর
সৈয়দ অনির্বাণ
"ইতিহাস কথা বলে বিজয়ীদের কথা। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় – অতীত গৌরবের সাক্ষ্য। কিন্তু কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ঘটনাবলির কতটুকু তাতে অটুট থাকে?"
অতঃপর গল্পের শুরু হয় ঠিক এর আগের পর্ব থেকেই যেখানে শেষ হয়েছিল পূর্ববর্তী বইটি। যেখানে রহস্যময় এক ছায়ামূর্তি সবার সামনে থেকে মীরানা মোরেসকে বন্দী করে নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ মীরানার সঙ্গীরা শুরু করে তার খোঁজ। এদিকে অ্যান্ড্রিয়াস তার নিজস্ব শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জানতে পারে কিছু ভয়াবহ সত্য সম্পর্কে যার ভিতরে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো শতাব্দী প্রাচীন কোন এক অশুভ শক্তি শীঘ্রই আঘাত হানতে যাচ্ছে পৃথিবীতে।
একই সাথে এগিয়ে যেতে থাকে অতীতের কাহিনীও যেখানে মুঘল সম্রাট বাবর চেষ্টা ত্রুটি রাখতে চাননি তার পুত্র হুমায়ুনকে বাঁচাতে। অতীতের এই ঘটনাপ্রবাহে কি ভূমিকা রেখেছিল শোণিত মন্দিরের পুরোহিত এবং বাঘাতুরের? সুদূর অতীতের এইসব ঘটনাগুলোর সাথে বর্তমানের সম্পর্ক কি? সমস্ত ঘটনার মূলে কে রয়েছে আর তার মহা পরিকল্পনা কি? কায়েস - অবলাল - অ্যান্ড্রিয়াস আর তাদের সাথে থাকা বাকিরা কি পারবে এগিয়ে আসা সেই মহা শক্তির মোকাবিলা করতে? সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে ‘শোণিত উপাখ্যান’ সিরিজের শেষ পর্ব "শোণিত উপাখ্যান অতঃপর"- এ।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে শেষের দিকের পার্টটি রীতিমতো সিনেম্যাটিক মনে হয়েছে। দুর্দান্ত একশন দৃশ্যের সাথে তাল মেলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছিল। আমার কেন জানিনা মনে হয়েছে শেষটা যেন একটু তাড়াহুড়ো করেই শেষ করেছেন লেখক। সমাপ্তিটা কিছুটা এরকমই হবে আশা করেছিলাম। কিন্তু কেন জানিনা সিরিজের শেষ সংখ্যাটি আগের দুটোর মত অতোটা মন কাড়তে পারেনি। বইটাটিতে মারকাটারি একশনের বর্ণনা খুব বেশি এবং কাহিনী তুলনামূলকভাবে কম বলেই মনে হলো। তবে যদি তিনটে বইয়ের এক সাথে রিভিউ দিতে বলা হয় তাহলে বলা যায় যে সিরিজটি পরিপূর্ণতা পেল এই বইটির সমাপ্তির মাধ্যমে। আর হ্যাঁ, সিরিজে ঐতিহাসিক চরিত্রের বর্ণনা থাকলেও প্রকৃত ইতিহাসের সাথে কোনোরকম তুলনা না করাটাই ভালো। যাঁরা রহস্য, ফ্যান্টাসি ভালোবাসেন তারা শুরু করতেই পারেন।
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।