উপন্যাস- পুঁথিচোর (কালকেতু সিরিজের উপন্যাস)
লেখক- রূপক সাহা
আমি রূপক সাহার লেখার ভক্ত এবং সেই অনুভূতি এসেছে ওনার লেখা গোয়েন্দা কালকেতু গল্পগুলি পড়ার পর। রূপক সাহার কালকেতু আর সমরেশ মজুমদারের অর্জুনের বৈশিষ্ট্য হল এদের নামের সঙ্গে গোয়েন্দা থাকলেও গল্পগুলি ঠিক গোয়েন্দা গল্প হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধী কে সেটা আগেই বলা থাকে, এরপর কালকেতু বা অর্জুন কিভাবে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেই অপরাধীর কাছ অবধি পৌঁছাচ্ছেন, সেটাই হয় গল্পের মূল উপজীব্য। গোয়েন্দা গল্পে গোয়েন্দা হন উন্নত বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, তাঁর মগজে কী চলছে তা আমরা জানতে পারি না। কিন্তু কালকেতু বা অর্জুনের গল্পে লেখকেরা চরিত্রের মনের অতলের কথা আমাদের সামনে তুলে ধরেন, ফলে এঁরা হয়ে ওঠেন আমার ঘরের মানুষ।
ভূমিকাতে এত কথা লেখার পেছনে বিশেষ কারণ রয়েছে। কালকেতু সমগ্র এক এবং দুই আমার পড়া, তিন পড়া হয়নি। পুঁথিচোরে যে কালকেতুকে পেলাম তিনি খানিক বয়স্ক, এই কালকেতুর সঙ্গে আমার এর আগে আলাপ হয়নি। পুঁথিচোরে এও দেখলাম যে কালকেতু সাংবাদিকতা ছেড়ে এখন পুরোদস্তুর গোয়েন্দা। এর ফলে অন্য গোয়েন্দা গল্পের মতোই অপরাধী কে এই প্রশ্নটি উপন্যাসে মুখ্য হয়ে উঠেছে। কাহিনী গড়িয়েছে নিজের মতন করেই, তবুও পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিল কী যেন একটা নেই। কালকেতুর গল্প একটানা পড়ে ফেলতাম আগে, সেই আগ্রহটা যেন পাচ্ছিলাম না। মনে হচ্ছিল এরচেয়ে সেই পুরানো কালকেতুই বরং ভাল ছিল। রূপক সাহা লেখেন ভাল, তাই লেখাটিকে খারাপ তো বলতে পারি না। পড়লাম, রহস্য ছিল, রোমাঞ্চটা ঠিক টের পাইনি। সবই হল কিন্তু পাঠের সন্তুষ্টি পেলাম না আর কী। যাঁরা কালকেতুকে আগে থেকে চেনেন না তাঁদের এই অনুভূতি নাও হতে পারে অবশ্য।
আমার ব্যক্তিগত রেটিং - ৬/১০।
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।