মরুদ্যানে শয়তান
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত
কিশোর উপন্যাস
ক্রিপ্টোজ্যুলজিস্ট হেরম্যান আর তার ভারতীয় বন্ধু সুদীপ্তকে নিয়ে রহস্যময় অভিযানের যে সিরিজ তাতেই নবতর সংযোজন এই গল্পটি। এবারের পটভূমি আবুধাবি, সেখান থেকে গভীর মরুর রাজ্যে এ পর্বে তাদের অভিযান। ক্রিটিড অর্থাৎ লোককথা বা পুরাণ কাহিনীতে থাকা কিংবা বর্তমানে পৃথিবীতে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে চর্চা করে যারা, এই দুই অভিযাত্রী তাদের অন্যতম। তাদের প্রত্যেকটি অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে এমন প্রাণীদের সন্ধান। এরকমই এক প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন হেরম্যান যার নাম সান লায়ন। মরু অঞ্চলের গল্পকথা তে যার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। হেরম্যানের বন্ধু হলিউডের অভিনেতা মার্লিন ক্রোর একটি মরুদ্দ্যান আছে। সেখানেই নাকি সান লায়নের অস্তিত্ব রয়েছে। তারই আমন্ত্রণে হেরম্যান সেখানে যান এবং তার আমন্ত্রণে দুদিন বাদে সুদীপ্ত সেখানে হাজির হয়।
কিন্তু মরুরাজ্য উপস্থিতির পর সুদীপ্তর কিছু ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা হয়। এখানে এসে সে দেখে মরু রাজ্যের আবহে এক অদ্ভুত ইনফেকশনে গলা ভেঙে যায় হেরম্যানের। তিনি সুদীপ্তর উপস্থিতি সত্ত্বেও বন্ধুর সঙ্গে বেশির ভাগ সময়টা কাটান। আসলে ক্রো নিজের মরুদ্দ্যানটি ভাবী আমির বিন কাশেমের কাছে বিক্রি করে দেবেন। এই মরুদ্যানে রয়েছে একটি ছোটখাটো চিড়িয়াখানা এবং সেই চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ সেই সান লায়ন যাকে ক্রো অভূতপূর্বভাবে এক মুমূর্ষু মরু পথিকের কাছ থেকে পেয়েছিলেন।
সুদীপ্ত এবং হেরম্যানের এখানে আসা শুধুমাত্র ওই বিকিকিনির সময়ের সাক্ষী থাকা এবং ক্রিপ্টিডটিকে যথার্থ বলে চিহ্নিত করা, যে কারণে ওই মরুদ্যানের দাম আরো কয়েক কোটি বেড়ে যাবে।
কিন্তু সুদীপ্ত অনুভব করে ওই মরুদ্দ্যানে রাতের গভীরে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যায় যার ব্যাখ্যা মেলে না। সান লায়নের গর্জন, চিতার আনাগোনা, আমির শেখ বিন কাশেমের আবির্ভাব, জোৎস্না রাতে উটের দৌড়, আকস্মিক মরু দসুদের আগমন ও একটি অভূতপূর্ব খণ্ড যুদ্ধ এবং তারপরেই রহস্যের যবনিকা উত্তোলন। কি হয় কাহিনী শেষে? সব থেকে বড় কথা, হেরম্যান ও সুদীপ্তর এবারের অভিজ্ঞতায় যে পূর্বপরিকল্পিত নাটক রয়েছে কাহিনী শেষে তার যবনিকা উত্তোলন হয়। আর ক্রিপ্টিড সান লায়ন? তার পরিণতি বা কি হয়?
এসব নিয়ে এই পর্বের অভিযান। লেখকের অন্য সব অ্যাডভেঞ্চার গল্পের মতো এটিও ভারি মনোরম। তবে এই সিরিজের পূর্ব কাহিনীগুলি পাঠের অভিজ্ঞতা যাদের আছে তাদের প্রথম থেকেই দুই একটি বিষয় খটকা কিন্তু লাগবেই এবং সে খটকার সমাধান মিলবে কাহিনী শেষে। আপাতত এটুকুই। আর বাকিটা জানবার জন্য, হ্যাঁ অবশ্যই। কাহিনী তো পড়তেই হবে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Mirmalya Mandal
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।