বই- মড়ি
লেখক - অঙ্কুর বর
কিছু বই থাকে যা রয়ে সয়ে পড়তে হয় আর কিছু একদম শেষ না করে ওঠা যায় না। এটা দ্বিতীয় প্রকারের। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন লেখক দুর্দান্ত ভাবে। সমস্ত ঘটনা সুন্দর ভাবে সাজানো।মানুষের লোভ এর ফল কী ভয়ানক হতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এই উপন্যাস।চরিত্র নির্মাণ ও বেশ সুন্দর। অসাধারণ লিখেছেন ।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Apu
মড়ি
লেখকঃ অঙ্কুর বর
ভূত ভুতুম ফেসবুক গ্রুপের আরো একজন লেখকের বই পড়লাম। এটাও ভালো লেগেছে। কাহিনী শুরু হয় এক গ্রামে যেখানে কৃষ্ণপক্ষের দুপুরের পর কেউ মারা গেলে সেই মৃত্যু মড়িক্ষণে পরে। মড়িক্ষণে পরলে সেই দেহ আর দাহ করা যায় না এমনকি বাড়ির বাইরেও নেয়া যায় না। তখন সেই মৃতদেহ বাড়ির ছাদে অথবা ফাঁকা কোনো জায়গায় নিয়ে গিয়ে রেখে আসতে হয়। কারণ মড়ি নামক কিছু একটা এসে ওই দেহ দুইবার এসে খেয়ে নেয়। একবার খেয়ে গিয়ে দ্বিতীয়বার খেতে আসার আগে ওই এটো মৃতদেহ যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে তার জন্য অপেক্ষা করে ভয়ংকর পরিণতি।
কি হয় তার সাথে?
মড়ি জিনিসটাই বা কি?
এর উৎপত্তি কোথায়?
এসব জানতে হলে পড়তে হবে আনুমানিক ১৬০ পৃষ্ঠার এই হরর উপন্যাসটি। লেখার কোথাও বোরিং লাগেনি। বরং এক বসায় বইটা পড়ে শেষ করেছি। একবার অবশ্যই পড়ার জন্য সাজেস্ট করবো।
রেটিং 🌟🌟🌟🌟🌟🌟 (৭)
রিভিউটি লিখেছেনঃ Fardin Rafi
মড়ি
লেখক - অঙ্কুর বর
"মড়ি" এককথায় অসাধারণ লেগেছে, সবার পড়া উচিৎ। আমি পড়া শুরু করে শেষ না হওয়া পর্যন্ত উঠতে পারিনি। মড়ি পড়ে বেশ ভয় পেয়েছি সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। লেখকের কলমের মাধ্যমে চরিত্রগুলো যেভাবে জীবন্ত করে তুলেছে আর তার পাশাপাশি যে একটা টানটান উত্তেজনা আর ভয়ের আবহ সৃষ্টি করেছে তা এককথায় দুর্দান্ত। এখানেই তো লেখার সার্থকতা , এরকম লেখা বারবার ভালোবাসা যায়, এরকম লেখা তার ছাপ রেখে যায় পাঠকের মনের মাঝে সবসময়।
প্রথমেই মড়ি কথাটা শুনে প্রশ্ন আসতেই পারে মড়ি কী, আমরা মড়ি বলতে জানি সুন্দরবনে বাঘ কোনো শিকার যদি একবারে না খেয়ে চলে যায়, সেই অর্ধেক খাওয়া মৃতদেহকেই বলে মড়ি। আমরা মড়ি মানে এটাই জানি, লোকের মুখে মুখে মড়ির কথা এভাবেই প্রচলিত হয়ে এসেছে। এই গল্পের কাহিনী গড়ে ওঠে হেমতপুরে, সেখানে কেন মানুষেরা ভয় দিন কাটায়। কেনই বা তাদের জীবনে নেমে আসে অশুভ আঁধারের ছায়া। কৃষ্ণপক্ষে কেউ মারা গেলে সবাই কেন প্রচণ্ড ভয় পায় , সেই সময় মড়িক্ষণ শুরু হয় কেন, এই মড়িক্ষণ বা কী? হেমতপুরে এরকমই এক মড়িক্ষণে রামকৃষ্ণ সরকারের মৃতদেহ বাড়ির থেকে বের করে নিয়ে যায় গ্রামের লোকেরা, কিন্তু পরক্ষনেই বুঝতে পারে কতো বড়ো ভুল তারা করেছে। সেই মৃতদেহকে রেখে দেওয়া হয় বাড়ির ছাদে, সবাই জানে মড়ি আসবে সেই মৃতদেহের কাছে। সেই রাতে কেন তারপর সবাই যে জার নিজেদের বাড়িতে দরজা জানলা বন্ধ করে বসে থাকে, আর সব বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসতে থাকে মড়ির ছড়া।
এই গল্পে উঠে এসেছে অমুয়াদের কথা , কাদের অমুয়া বলা হয়, তারা কী ক্ষমতার অধিকারী, কেনই বা মড়িকে প্রতিরোধ করতে তাদের অনেকটা ভূমিকা। আউধুনির ডাঙা ঘুমিয়ে থাকে কেন, কিসের অস্তিত্ব রয়েছে আউধুনির ডাঙায়? বাঘমড়ি কী, এই পশ্চিমের জঙ্গল কেন অভিশপ্ত, কেনই বা এই মড়িক্ষণের সংকেত ভেসে আসে এই পশ্চিমের জঙ্গল থেকে, কেনই বা ভেসে আসে কাঁসর ঘণ্টার আওয়াজ?
এই হেমতপুরের লোকেদের জীবন কী মড়ির আতঙ্কের থেকে বাইরে আসবে কখনো নাকি এই ভয় তাদের তাড়া করে বেরোবে সবসময়। মড়ির শেষ কোথায়, কী হতে চলেছে এই গল্পের শেষে, সবটা জানতে হলে পড়ে ফেলতে হবে এই টানটান লেখা "মড়ি"।
এই গল্প যেমন জানান দিয়েছে ভয়ের, এই গল্প তেমন জানান দিয়েছে লোভ মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে , লোভ জীবনে অন্ধকার ডেকে আনতে বাধ্য। এই গল্প পড়তে পড়তে প্রতি মুহূর্তে ভয় পেয়েছি, একটা গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে প্রতিবার। মড়ি পড়তে পড়তে কতটা যে ভয় পেয়েছি তা বলে বোঝাতে পারব না, শুধু বলবো লেখকের কলম এই লেখার মধ্যে দিয়ে যথেষ্ট ভয় ধরিয়ে দিয়েছে।
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমি বলবো মড়ি পড়বার পর আবারও মড়ির অপেক্ষায় থাকবো, চাইবো মড়ির সেকেন্ড পার্ট বেরোক, এরকম ভয় পেতে বারবার রাজি।
মড়ি অসাধারণ হয়েছে, যেমন শব্দচয়ন, তেমন নিপুণ ভাবে প্রত্যেক চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা, ভয়কে এমন ভাবে তুলে ধরা যা পাঠকের মনে শিহরণ জাগাতে বাধ্য একটা লেখা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন তার মধ্যে এগুলো সব থাকে সমান ভাবে। এইখানেই লেখকের দক্ষতার পরিচয়, মড়ি দুর্দান্ত বললেও কম বলা হবে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Dr Jeet Majumder
মড়ি
লেখক: অঙ্কুর বর
বিভা পাবলিকেশন
মড়ি নামটা প্রথম পড়েছিলাম জিম কর্বেট অমনিবাসে। বাঘ তার শিকার একবারে খায়না। পরে আরেকবার খাবে বলে রেখে দিয়ে যায়। এই আধখাওয়া মৃতদেহ কেই বলা মড়ি।সেই মড়ি কে টোপ করে শিকারীরা বাঘ শিকার করে।
কিন্তু এই মড়ি কীভাবে বাঘের স্বর্গরাজ্য থেকে উঠে এলো হেমতপুরে? বইয়ের মড়ি আর বাঘে খাওয়া মড়ি কি এক? অতীতের কোন ঘটনার অভিশাপ এই মড়ি? এর থেকে কী আদৌ মুক্তি পাওয়া যাবে? জানতে হলে ' মড়ি' পড়তেই হবে।
💢💢ভালোলাগার জায়গা:
১. শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই রকম টানটান লেখা। বইটি পড়া ছেড়ে উঠে যাবার কোনও প্রশ্নই ওঠেনা। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন লেখক দুর্দান্ত ভাবে। সেই ভয়ের ভেতর কখন প্রবেশ করেছি নিজেও টের পাইনি।
২. পর পর ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা সুন্দর ভাবে সাজানো। পড়তে কোনও অসুবিধাই হয়না। সমস্ত কিছু যেনো চোখের সামনেই ঘটছে এতটাই বাস্তব মনে হচ্ছিল বর্ণনা।
৩. মানুষের লোভ এর ফল কী ভয়ানক হতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এই উপন্যাস।
৪. চরিত্র নির্মাণ ও বেশ সুন্দর। মড়িকে বেশী সময় না রাখলেও অন্যান্য চরিত্রের সহায়তায় মড়ি চরিত্রের ভয়ংকরতার পুর্ণ প্রকাশ ঘটেছে।
৫. সঙ্গে রয়েছে কিছু আত্মা পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেওয়া ভয়ংকর দৃশ্য। ছাদের উপরে এক বাচ্চার তার বাবার মৃতদেহ দেখে ফেলার বর্ণনা বা স্মশানে মৃতদেহ পোড়ানোর বর্ণনা পড়লে আপনি কেঁপে উঠতে বাধ্য। ভাগ্যিস রাতে পড়িনি😢।
💢 মড়ি সৃষ্টির গল্পটা যদি বড়ো করে দেখানো হতো তাহলে আমার মনে হয় আরো ভালো লাগত।
💢 অতি দ্রুত ক্লাইম্যাক্স মনে হলো আমার।
💢 খেমি মা এর গল্পটা যদি আরেকটু বলা হতো তাহলে ভালো লাগত।
সব মিলিয়ে বেশ ভালো।😊❤️
রিভিউটি লিখেছেনঃ S R D
বইয়ের নাম - মড়ি
লেখক - অঙ্কুর বর
প্রকাশনা - বিভা পাবলিকেশন
আমরা মড়ি বলতে জানি সুন্দরবনে বাঘ কোনো শিকার যদি একবারে না খেয়ে চলে যায়, সেই অর্ধেক খাওয়া মৃতদেহকেই বলে মড়ি। লোকের মুখে মুখে মড়ির কথা এভাবেই প্রচলিত হয়ে এসেছে। লেখক এই প্রচলিত কথার উপর ভিত্তি করে একটি দারুন ভয়ের গল্প লিখেছেন। এই গল্পের কাহিনী গড়ে ওঠে হেমতপুরে, সেখানে কৃষ্ণপক্ষে কেউ মারা গেলে সবাই প্রচণ্ড ভয় পায়, সেই সময় নাকি মড়িক্ষণ শুরু হয়। তখন মৃতদেহ বাড়ির বাইরে বের করা যায়না সেই মৃতদেহকে রেখে দেওয়া হয় বাড়ির ছাদে, সবাই জানে মড়ি আসবে সেই মৃতদেহের কাছে। সেই রাতে তারপর সবাই যে যার নিজেদের বাড়িতে দরজা জানলা বন্ধ করে বসে থাকে , আর সব বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসতে থাকে মড়ির ছড়া। এইনিয়েই গল্প এগোতে থাকে।এই ছোট্ট একটি প্রচলিত ধারণার উপর ভিত্তি করে লেখক যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। আমার গল্পটি দারুন লেগেছে। আমি গল্পটিকে ৮/১০ দেব।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Indrani
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।