আমি যখন পুলিশ ছিলাম : ধীরাজ ভট্টাচার্য Jokhon Police Chilam by Dhiraj Bhattacharya

আমি যখন পুলিশ ছিলাম : ধীরাজ ভট্টাচার্য Jokhon Police Chilam by Dhiraj Bhattacharya

বই : আমি যখন পুলিশ ছিলাম
লেখক : ধীরাজ ভট্টাচার্য

১৯৩০ সালে লাহোরের ইউনিক পাবলিকেশন্স থেকে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘যখন পুলিশ ছিলাম’ প্রকাশ করেন ধীরাজ ভট্টাচার্য

বইটা আমার যখন ৮/৯ বছর বয়স সে সময় দাদুর লাইব্রেরীতে দেখি। মলাট ছিল না। বড়দের বই ছিল বিধায় লুকিয়েই পড়া শুরু করি। ধীরাজ এবং মাথিনের ঐতিহাসিক প্রেমকাহিনী। সে সময় পড়েছিলাম দেখেই হয়তো এখনো মনে আছে। সে সময় অনেক কিছুই বুঝতাম না। শুধু ভাল রিডিং পড়তে পারতাম সেজন্যই বইটা পড়ে শেষ করি।

এখন কদিন যাবত পুনরায় পড়ছি। এখন পড়ে একদিকে বাঙ্গালি পুলিশ অফিসার ধীরাজকে পিতার বাধ্যগত ছেলে মনে হলেও অপরদিকে মনে হচ্ছে রাখাইন জমিদার কন্যা প্রেমিকার সাথে প্রতারণাই করেছে। 

ধীরাজ ভট্টাচার্য ১৯০৫ সালে ৫ নভেম্বর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায় ইস্ট বেঙ্গলের যশোর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯২৩-১৯২৪ সালের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফে কর্মরত ছিলেন। সেসময় থানার কূপ থেকে জল নিতে আসা স্থানীয় রাখাইন জমিদার কন্যা মাথিনের সঙ্গে তার হৃদয় বিনিময় হয়। এরপর হঠাৎ একদিন বাবার অসুস্থতার কথা জানতে পেরে ছুটি নিয়ে সন্ধ্যার অন্ধকারে কাউকে কিছু না বলে, কারো মতে একমাসের কথা বলে কলকাতায় ফিরে যান তিনি। পরে আর চাকরিতে যোগ দেননি। তাই মাথিনের কাছে আর ফিরে আসা হয়নি। এদিকে মাথিন তাকে ছাড়া খাবার মুখে তুলবেন না বলে অনশন শুরু করেন। এক পর্যায়ে অনাহারে বিরহ যাপন করতে করতেই পৃথিবী ত্যাগ করেন তিনি। 

টেকনাফ ত্যাগের পর পুলিশের চাকরি ছেড়ে ১৯২৫ সালে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন ধীরাজ ভট্টাচার্য। তার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি ‘সতীলক্ষী’। এছাড়াও তার অভিনীত বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এরমধ্যে ১৯২৯ সালে ‘গিরিবালা’, ১৯৩০ সালে ‘কাল পরিণয়’ ও ‘মৃণালীনী’ এবং ১৯৩২ সালে ‘নৌকাডুবি’ সহ ৫৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন ধীরাজ। ১৯৫৮ সালে তার অভিনীত শেষ সিনেমাটি মুক্তি পায়, ছবিটির নাম ‘নীলাকঙ্গা’। তিনি দুটি আত্মজীবনীমুলক গ্রন্থও রচনা করেছেন। একটির নাম ‘যখন পুলিশ ছিলাম’, আরেকটি হলো ‘যখন নায়ক ছিলাম’।

উল্লেখ্য মাথিনের ঐতিহাসিক কূপটি বর্তমানে কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সীমানা প্রাচীর পুনঃনির্মাণ, ফুলের বাগান, সৌন্দর্য বর্ধিত রাস্তা নির্মাণ, চেরাংঘর মেরামত ও কূপের সংস্কার কাজ করে সুসজ্জিত করা হয়েছে। কূপটি টেকনাফ থানা কম্পাউন্ডে অবস্থিত৷

রিভিউটি লিখেছেনঃ Najmush Shakeer

Post a Comment

0 Comments