উপন্যাস- যে পথে যেতে হবে
লেখক- ইন্দ্রনীল স্যান্যাল
লেখকের ভয়ঙ্কর ভক্ত হয়ে গিয়েছি। পরপর ওনার বেশ কয়েকটা উপন্যাস পড়ে ফেললাম। গতকাল পড়লাম "যে পথে যেতে হবে"। আবারও একটা দারুণ লেখা।
গল্পের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে একাধিক নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ
বৃদ্ধার খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনা। আশ্চর্যজনক ভাবে এই প্রত্যেকটি খুনের দিন সকালে ওই বৃদ্ধ / বৃদ্ধার বাড়িতে উপস্থিতি দেখা যায় ডঃ শালুকের। কেসের তদন্তভার পড়ে দক্ষ পুলিশ অফিসার কৃত্তিবাসের ওপর। এরপর ঘটনা প্রবাহ কোনদিকে যায় তা জানতে হলে উপন্যাসটি অবশ্যই পড়তে হবে।
এই উপন্যাসটিকে সাধারণ সামাজিক উপন্যাসের শ্রেণীতেও ফেলা যায় না, আবার থ্রিলারও বলা যায় না পুরোপুরি; বরং দুটোর মিশ্রণ বলাই যুক্তিযুক্ত। তবে মিশ্রণ মানে জগাখিচুড়ি নয় কিন্তু। লেখক দুটো দিকই খুব দক্ষতার সঙ্গে বজায় রেখেছেন সমগ্র উপন্যাস জুড়ে। একদিকে যেমন অপরাধী কে বোঝার জন্য পাঠককে মুখ্য চরিত্রদের সঙ্গে মিলে মাথা খাটাতে হয়, তাদের সঙ্গে অভিযানে নামতে হয়, তেমনই আবার কখনও তাদের সঙ্গে মিলে মিষ্টি ভালোবাসার আবেশেও ডুবে যেতে হয় / ডুবে যায় পাঠক। গল্পটিতে একাধারে বৃদ্ধ বয়সের নিঃসঙ্গতা, মধ্যবিত্ত জীবনের উত্থানপতন ও আধুনিক মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত মানসিক স্বাস্থ্যের মত বিষয়গুলিকে তুলে ধরা হয়েছে। আবার আমার যে জিনিসটা সব থেকে লেগেছে তা হল লেখার সময় লেখক সর্বক্ষণ মনে রেখেছেন তিনি উপন্যাস লিখতে বসেছেন, উইকিপিডিয়ার পেজ নয়। অনেক নতুন শব্দ উপন্যাসে এসেছে যা সাধারণ মানুষের জানার কথা নয়। সেই জায়গাগুলিতে লেখক যে কোনো চরিত্রের মুখ দিয়ে এক দুই লাইনে বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছেন। পাতার পর পাতা লম্বা বক্তৃতা দেওয়াননি কোনো চরিত্রকে।
খারাপ লাগার জায়গা সেরকম কিছুই নেই। একটা বিষয় একটু কেমন কেমন লেগেছে, তা হল গল্পের নায়ক নায়িকা স্বল্প পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও রাস্তাঘাটে একে অন্যের হাত, কাঁধ ইত্যাদি যেভাবে ধরাধরি করছিল ব্যাপারটা আমার ঠিক বিশ্বাসযোগ্য লাগেনি। আমি নীতি পুলিশ হয়ে কথাটা একদমই বলছি না, আমি বলছি তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। আমি মফস্বলে বেড়ে উঠেছি, এখানে এই ধরণের বিষয় দেখা যায় না বললেই চলে, তাই জিনিসটা চোখে লাগল, মেট্রো সিটিতে কী হয় তা অবশ্য আমার জানা নেই।
যাইহোক, পরিশেষে এটাই বলার যে সুখপাঠ্য বলতে যা বুঝি উপন্যাসটি একদমই তাই। যে কেউ নিঃসংকোচে পড়তে পারেন। ভাল লাগবেই আশা করছি।
রেটিং - ৯/১০
Samrat Mitra এর লেখা আরো একটি রিভিউঃ
#review
গল্প - যে পথে যেতে হবে
লেখক - ইন্দ্রনীল সান্যাল
ছেলেবেলা বা শৈশব খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় বা বলতে পারেন জীবন পর্যায়ের সবথেকে গুরত্বপূর্ণ অংশ...
পনেরো বছরের ছোটো ছেলেটা দেখছে দিনের পর দিন তার নিরীহ মা কে পশুর মত অত্যাচার করে যাচ্ছে তার স্বনামধন্য স্কুল শিক্ষক বাবা কিন্তু সেদিন আর সে দেখতে না পেয়ে দিলো এক ঘা.....
কলকাতার মতো শহরে ক্রমেই বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রম, যেখানে মানুষ তার জীবনের অন্তিম পর্বে এসে আর একটু ভালোভাবে বাঁচার চেষ্টা করে... আর সেই শহরেই কিনা হয়ে চলেছে একের পর এক বয়স্ক মানুষের রহ্যজনকভাবে মৃত্যু! এই প্রতিটা মৃত্যুর সাথেই যে জিনিস টা কমন সেটা হলো যারা মারা যাচ্ছেন মারা যাওয়ার আগের দিন তাদের কে দেখতে যেতেন বয়স্ক মানুষ দের জন্য গড়ে উঠেছে যে সংস্থা "অশেষ" সেই সংস্থারই জেরিয়াট্রিশিয়ন (বার্ধক্যবিদ্যার চিকিৎসক) ডক্টর শালুক চক্রবর্তী.....
এই রহস্যের তদন্তভার পড়ে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট লালবাজার এর অন্যতম অফিসার কৃত্তিবাস মিত্র র উপর যিনি প্রথম দেখাতেই শালুক এর প্রেমে পড়ে গেছেন...
কৃত্তিবাস কি পারবে প্রেমের জাল সরিয়ে রেখে রহস্যের জাল সমাধান করতে?
ইন্দ্রনীল সান্যাল যিনি নিজে একজন ডাক্তার তার মেডিক্যাল থ্রিলার পড়লেই অনেক কিছু সমন্ধে আইডিয়া বাড়ে আর তার জন্যেই আরো বেশি করে পড়তে ইচ্ছা করে..এই গল্পে দুটো জিনিস যা খুব ভালো লেগেছে তা হলো গল্পের ক্লাইম্যাক্স অর্থাৎ শেষ টা ভাবাই যায় না এমন একটা চমক শেষে পাবো আর অন্য একটা দিক হলো অবশ্যই কৃত্তিবাস আর শালুক এর একটা মিষ্টি প্রেম যেন সরু নদীর মতো বয়ে চলেছে গল্পের সাথে কোথাও গিয়ে আমার একবার ও মনে হয়নি ওদের প্রেমের জন্য গল্পের থ্রিল নষ্ট হয়েছে..
আরেকটা বিষয় গল্পের মধ্যে যে একটা মানুষের মনের সাইকোলজি টা লেখক খুব সুন্দর করে বলেছেন তা প্রশংসনীয়...
পার্সোনাল রেটিং - 5/5
যে পথে যেতে হবে
লেখক - ইন্দ্রনীল সান্যাল
ছেলেবেলা বা শৈশব খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় বা বলতে পারেন জীবন পর্যায়ের সবথেকে গুরত্বপূর্ণ অংশ...
পনেরো বছরের ছোটো ছেলেটা দেখছে দিনের পর দিন তার নিরীহ মা কে পশুর মত অত্যাচার করে যাচ্ছে তার স্বনামধন্য স্কুল শিক্ষক বাবা কিন্তু সেদিন আর সে দেখতে না পেয়ে দিলো এক ঘা.....
কলকাতার মতো শহরে ক্রমেই বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রম, যেখানে মানুষ তার জীবনের অন্তিম পর্বে এসে আর একটু ভালোভাবে বাঁচার চেষ্টা করে... আর সেই শহরেই কিনা হয়ে চলেছে একের পর এক বয়স্ক মানুষের রহ্যজনকভাবে মৃত্যু! এই প্রতিটা মৃত্যুর সাথেই যে জিনিস টা কমন সেটা হলো যারা মারা যাচ্ছেন মারা যাওয়ার আগের দিন তাদের কে দেখতে যেতেন বয়স্ক মানুষ দের জন্য গড়ে উঠেছে যে সংস্থা "অশেষ" সেই সংস্থারই জেরিয়াট্রিশিয়ন (বার্ধক্যবিদ্যার চিকিৎসক) ডক্টর শালুক চক্রবর্তী.....
এই রহস্যের তদন্তভার পড়ে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট লালবাজার এর অন্যতম অফিসার কৃত্তিবাস মিত্র র উপর যিনি প্রথম দেখাতেই শালুক এর প্রেমে পড়ে গেছেন...
কৃত্তিবাস কি পারবে প্রেমের জাল সরিয়ে রেখে রহস্যের জাল সমাধান করতে?
ইন্দ্রনীল সান্যাল যিনি নিজে একজন ডাক্তার তার মেডিক্যাল থ্রিলার পড়লেই অনেক কিছু সমন্ধে আইডিয়া বাড়ে আর তার জন্যেই আরো বেশি করে পড়তে ইচ্ছা করে..এই গল্পে দুটো জিনিস যা খুব ভালো লেগেছে তা হলো গল্পের ক্লাইম্যাক্স অর্থাৎ শেষ টা ভাবাই যায় না এমন একটা চমক শেষে পাবো আর অন্য একটা দিক হলো অবশ্যই কৃত্তিবাস আর শালুক এর একটা মিষ্টি প্রেম যেন সরু নদীর মতো বয়ে চলেছে গল্পের সাথে কোথাও গিয়ে আমার একবার ও মনে হয়নি ওদের প্রেমের জন্য গল্পের থ্রিল নষ্ট হয়েছে..
আরেকটা বিষয় গল্পের মধ্যে যে একটা মানুষের মনের সাইকোলজি টা লেখক খুব সুন্দর করে বলেছেন তা প্রশংসনীয়...
পার্সোনাল রেটিং - 5/5
রিভিউটি লিখেছেনঃ Sudipa
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।