জগুমামা রহস্য সমগ্র ১ - ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় Jagumama Rahasya Samagra 1 by Tridib Kumar Chattopadhyay

জগুমামা রহস্য সমগ্র ১ - ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় Jagumama Rahasya Samagra 1 by Tridib Kumar Chattopadhyay

বই - জগুমামা রহস্য সমগ্র ১ 
লেখক - ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় 
প্রকাশনা - পত্রভারতী 

জগুমামা সিরিজের প্রথম আত্মপ্রকাশ ১৯৮৫ সালের শারদীয়া কিশোর ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত "হাত" উপন্যাস দিয়ে। বিজ্ঞানী জগবন্ধু মুখার্জী ও তার ভাগ্নে অর্ণবের বিভিন্ন রহস্যের কারণ খুঁজতে করা তদন্ত ও অভিযান নিয়ে গল্পগুলো লেখা। এই গল্পগুলোয় লালমোহনবাবুর মত অনন্ত সরখেল বলে একটি চরিত্রও আছে। জগুমামার মধ্যে কাকাবাবু বা মামাবাবুর ছায়াও দেখা যায়। গল্পগুলো সরল, বেশী প্যাঁচ নেই, সম্ভাব্য অপরাধী অনুমান করা সম্ভব।

👉🏻এই বইটিতে মোট আটটি বড় গল্প আছে, সবগুলোই রহস্য-ভ্রমণ বিষয়ক।
বিষয়বস্তু এইরকম ---

১. হাত - রাঁচিতে এক বিজ্ঞানীর গাড়ি দুর্ঘটনা হয়েছে, তার জবানবন্দি অনুযায়ী কাটা হাত গাড়ির চালে লাফিয়ে পড়েছিল। এই হাতের রহস্যভেদ করেন জগুমামা।

২. ছায়া মূর্তি - লাদাখের গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে জ্যান্ত দেবদেবী দেখে, জওয়ান সহ মিলিটারি ট্রাক খাদে পড়ে তারা মারা গেছে।
জগুমামা গিয়ে সমাধান করলেন রহস্যের।

৩. আলোয় সেদিন অন্ধকার - দার্জিলিংয়ের বিজনবাড়িতে জনাপনেরো গোর্খা মারা গেছে, স্থানীয় মানুষদের মতে এই মৃত্যু ঘটেছে এক মারাত্মক বিষাক্ত পোকার কামড়ে, যেগুলোর দেখতে মশার মত অথচ জোনাকির মত জ্বলে-নেমে। সেখানেই জগুমামার পুরানো বিলাতফেরত বন্ধু জয়ন্ত দত্ত তাকে আমন্ত্রণ করেছেন। যাওয়ার পরে দেখা যায় যে তার জ্যাঠা শিবশঙ্কর দত্ত আচমকা আতঙ্কিত হয়ে তার সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে ও তিনি হাসপাতালে ভর্তি। আরো জানা যায় যে মৃত গোর্খারা তার চা-বাগানেই কাজ করত। 
জগুমামা এই দুটি সমস্যার সমাধান করেন।

৪. মুখোশের আড়ালে - এবারে রহস্য বিহারে, রাঁচির বেতলা ন্যাশনাল পার্কের পশুরা (বিশেষত মাংসাশী পশুরা) নাকি খেপে উঠে আক্রমণ করছে, তাদের হাত থেকে তৃণভোজী পশুরা তো বটেই, মানুষজনও রেহাই পাচ্ছে না। এর সাথেই সেখানে আসা ম্যাড্রাস ইউনিভার্সিটির জুওলজির অধ্যাপক কে সি ভেঙ্কটসুন্দরম নিখোঁজ যিনি বন্য জন্তুর হাবভাব আচার ব্যবহার ঘনিষ্ঠভাবে দেখার জন্যে ওখানে এসেছিলেন।
জগুমামা এই রহস্যের সমাধান করেন।

৫. রুকটুকার পাড়ে - অর্ণব দুই বন্ধুর সাথে প্রাতর্ভ্রমণ করতে গিয়ে রেলব্রিজের তলায় নদীর ধারে একজনের মৃতদেহ দেখতে পায় যার মুখ থেঁতলে গেছে। এটা আত্মহত্যা না হত্যা? মৃতদেহটি কার? মৃত্যুর কারণ কী? এইসব রহস্যের সমাধান করে মামা-ভাগ্নে জুটি।

৬. বড় পায়ের খোঁজে - জগুমামার ছোটবেলার বন্ধু প্রকৃতিবিদ সরোজশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় মামার সাথে দেখা করে জানান যে হিমালয়ের পাহাড়ের ইয়েতির বড় পায়ের ছবি তার কাছে আছে। 
এরপরে ইয়েতির অনুসন্ধানে জগুমামার দল বেরিয়ে পড়ে রাবাংলা থেকে মৈনান পাহাড়ের দিকে এবং রহস্যের সমাধান করে।

৭. নীল কাঁকড়া রহস্য - বায়োকেমিস্ট্রির  অধ্যাপক শান্তশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে; পুলিশের ধারণা, শান্তশ্রীর সঙ্গে তার স্ত্রী চৈতালীর বনিবনা ছিল না বলে তিনি নাইট্রিক অ্যাসিড দিয়ে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু জগুমামার ধারণা যে তার ছাত্র আত্মহত্যা করার মতো মানুষ ছিল না। জগুমামা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন যে শান্তশ্রী কাঁকড়া নিয়ে গোপন গবেষণা করছিলেন।

কী সেই গবেষণা আর শান্তশ্রী আত্মহত্যা করেছেন না খুন - তার রহস্যভেদ করেন জগুমামা।

৮. জগুমামার বিপক্ষে জগুমামা - জগুমামার সাথে অর্ণব আর অনন্তবাবু ট্রেনে করে শিলং যাচ্ছিলেন জগুমামার বন্ধু বায়োফিজিক্সের বিজ্ঞানী শ্যামদাস শর্মার কাছে। ট্রেনজার্নির সময়ে দুই বিদেশীকে স্থানীয় আমসত্ত্ব খাওয়াতে চান, সেই লাইনেই সামনে মালগাড়ি উলটে যাওয়ায় লাইন ক্লিয়ার হতে আরো আধ ঘন্টার মত ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়াবে দেখে অনন্তবাবু অর্ণবের সাথে নেমে শহরের ভেতরে গিয়ে আমসত্ত্ব কিনে আনেন। আমসত্ত্ব কেনার সময় অটোতে তারা জগুমামাকে দেখতে পান, অথচ ট্রেনের কামরায় ফিরে অন্য যাত্রীদের প্রশ্ন করে জানতে পারেন যে জগুমামা এই সময়টা ধরে ট্রেনেই ছিলেন।
শিলংয়ে পৌঁছে দেখা যায় যে মামার বন্ধু অপহৃত এবং বাড়ির কাজের লোক পুলিশকে জানায় যে জগুমামাই তাঁকে আগের রাতে অপহরণ করেছে।

শ্যামদাসকে সত্যিই কি জগুমামাই অপহরণ করেছেন? করলে, কেন করেছেন? - এই রহস্য সমাধান করতে নেমে পড়ে তার ভাগ্নে।

(এইটা কিছুটা শঙ্কুর শনির দশা গল্পের মত।)

Post a Comment

0 Comments