বইয়ের নাম - ব্যাঙা
লেখিকার নাম - দীপাঞ্জনা দাস
প্রকাশনা - বিভা পাবলিকেশন
ব্যাঙা এক অবহেলিত ছেলের গল্প। যে কখনো বাবা মায়ের ভালোবাসা পায়নি। এমনকি তার একটা নাম নেই। সে কিভাবে এক বাবা-ছেলের সাদামাটা জীবনে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাই নিয়েই প্রথম গল্প। দ্বিতীয় গল্পেএক ছা-পোষা চাকরিজীবী মানুষ। যাতায়াতের সুবিধের জন্য মাস খানেকের জন্য অফিসের কাছাকাছি ভাড়া নিলেন একটা অতি সাধারণ পুরনো খালি বাড়ি। কিন্তু বাড়িটাকে বাইরে থেকে যতটা সাধারণ মনে হয় আসলে কিন্তু তা নয় এই বাড়িতেই আছে এক ভয়াল ছায়া যা এই অতি সাধারণ মানুষটির জীবনটাই বদলে দেবে। তৃতীয় গল্পে একটি স্কুল। যেখানে ছোট্ট ছোট্ট ফুলের মত শিশুরা পড়ে, খেলে, ছুটে বেড়ায়। অথচ সেই আনন্দঘন পরিবেশের আড়ালেও অন্ধকার থাবা গেঁড়ে বসে থাকে, সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়ার অপেক্ষায়। সেই অন্ধকার যা আস্তে আস্তে একটি শিশুর জীবনে প্রবেশ করে। আপাতদৃষ্টিতে এই তিনটি গল্প আলাদা মনে হলেও একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।যেখানে কিছু চরিত্র বার বার ফিরে এসেছে। লেখিকার লেখা এই প্রথম বার পড়লাম।বই টি আমার খুব বেশি ভয়ের না লাগলেও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা বজায় রাখতে লেখিকা সক্ষম হয়েছেন।
আমি গল্পটিকে ৭/১০ দেব।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Indrani
ব্যাঙা
দীপান্বিতা দাস
মধ্যবিত্ত একটি পরিবারের একটি আবনর্মাল ছেলে ব্যাঙ্গা। তার হাত লম্বা, জিভ বের হয়ে থাকে ও পিঠ বাঁকা। এই অদ্ভুত চেহারাই তার নামের কারণ। একদিন রাতে সে মারা যাওয়ার পর আচমকাই শুরু হয় অদ্ভুত কিছু কান্ড। নিচের তলার ভাড়া থাকা পরিবারের বাচ্চাটির সাথে অদ্ভুত এক বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে মৃত ব্যাঙার। তারপর নানা চরিত্র ও সাথে সাথে এগোতে থাকা সময়কালের হাত ধরে এগোতে থাকে ভয়ংকর এই গল্পটি।
গল্পের ভালো দিক হল সাবলীল ভাষা ও চরিত্রায়ন। কিন্তু সমস্ত লেখাটা একযোগ করলে বড়ই খাপছাড়া। লেখার সাথে বাস্তব জগতের কোনো মিল নেই। একের পর এক খুনের পর খুন হতেই থাকে, অথচ একবার নাম কে ওয়াস্তে উল্লেখ করা ছাড়া কোথাও পুলিশের উপস্থিতিই নেই। সব কিছু জেনে বুঝেও বারবার বোকার মত একই কাজ করতে থাকে সবাই। আর ' বড়ো বড়ো দাঁত, লাল লম্বা জিভ, বিশাল লম্বা চেহারা, কালো রঙের হরহরে বর্ষাতির মতো গা ' শুনলে স্পষ্ট বোঝা যায় Venom এর এফেক্ট এই গল্পে কতখানি। কখনো পিশাচ, কখন devil spawn, কখনো দেশি ভূত, কখনো বিদেশি ফাদার - সব মিলিয়ে গল্প নিজেই নিজেকে মনে রাখতে অক্ষম।
খারাপ লাগা এই যে অনেক অনেক ভালো হতে পারতো।
৪/১০
রিভিউটি লিখেছেনঃ Titas
গল্প: ব্যাঙা
লেখিকা: দীপাঞ্জনা দাস
গতকাল পড়তে শুরু করেছিলাম দীপাঞ্জনা দাসের লেখা ভৌতিক গল্প সংকলন ‘ব্যাঙা’, আজ শেষ হ'লো। গ্রুপে রিভিউ পড়েই বসে গিয়েছিলাম। বইটিতে মোট তিনটি গল্প আছে- 'ব্যাঙা' নামের হাত লম্বা-জিভ বের করা, পিঠ বাঁকা ব্যাঙের মতো দেখতে একটা ছেলেকে কেন্দ্র ক'রে, একদিন রাতে যে হঠাৎ মারা যায়। কিন্তু তার ভুত চিলেকোঠার ঘরে আটকে থাকে।
প্রথম গল্প- ভয় যখন সত্যি হয়ঃ মা মরা ডানপিটে ছেলে বুবান একটা বাড়িতে ভাড়া থাকতো তার বাবার সঙ্গে। বুবান ওই বাড়ির বাড়িওয়ালা মুখার্জি দম্পতির কুকুরের কানে পেরেক ঢুকিয়ে দেয়, তাতে কুকুরটা মারা যায় এতে তার বাবা রেগে তাকে বাড়িওয়ালার মৃত ছেলে ব্যাঙার অন্ধকার ঘরে বন্ধ করে রাখে। তারপর তার সঙ্গে ব্যাঙার বন্ধুত্ব শুরু হয় তারপর ঘটতে থাকে নানান অযাচিত ঘটনা, সেটা নিয়েই এই গল্প।
দ্বিতীয় গল্প- ওখানে কেউ ছিল নাঃ চাকরিজীবী ব্যাচেলর মিত্রবাবু যাতায়াতের সুবিধার জন্য একটা বাড়ি ভাড়া নেন, হ্যাঁ সেই অভিশপ্ত বাড়িটার নিচের তলাতে ওঠেন। ওপরের তলাটা বন্ধই থাকে কারণ বাড়ির মালিক বর্তমানে কলকাতার ফ্ল্যাটে উঠে গেছেন। ব্যাঙার সেই ঘরটাও সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করা। তাঁর কলিগ আনন্দ ওরফে অ্যান্ডি ওই বাড়িতে একদিন মারা যায়। এরপর মিন্টুদার চাকর কেতো ভয় পেয়ে বাড়ি ছাড়ার আগেই মারা গেল। কিন্তু সবাই একে একে কেন মারা যাচ্ছে? তাঁর নতুন বন্ধু কিংশুকও জড়িয়ে পড়ে ওই বাড়ির সাথে। তারপর কী হয় সেই উত্তর পাওয়া যাবে গল্পে।
তৃতীয় গল্প- বন্ধু চেনা বিষম দায়ঃ বিন্নির বাবা বাইরে থাকেন তাই সে আর মা মামার বাড়িতে এসে মামার স্কুলেই ভর্তি হয়েছে। তারপর একদিন স্কুলে রঙ করতে এসে মিস্ত্রীরা মারা গেল অদ্ভুতভাবে। তারপর বিন্নির বাড়ির কুকুর আর ছাদের পায়রাটা মারা যাওয়ার পর থেকেই তার মধ্যে অদ্ভুত বদল ঘটে। কিন্তু কেন এসব অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। এর সঙ্গেও কি ব্যাঙার কানেকশন আছে সেসবের উত্তর পাওয়া যাবে একদম শেষে।
তিনটেই ছিমছাম গল্প, মূল প্লটগুলো মন্দ নয় সঙ্গে ভয়টাকে ভয়ংকর ক'রে তোলার দিকটাও পরিপাটি তবে কাহিনির বাঁকে বাঁকে যে যুক্তি সেগুলো বড্ড পলকা ও বাস্তব বিচ্ছিন্ন। যে মুড নিয়ে শুরু হয় শেষ পর্যন্ত টেনে পড়ার পর সেই আমেজটা কেমন যেন থাকে না।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Raktim Ghanta
ব্যাঙা
লেখিকাঃ দীপাঞ্জনা দাশ
দীপাঞ্জনা দাশের "ব্যাঙা" পড়ে শেষ করলাম। ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট সবমিলিয়ে গত প্রায় ২ মাস খুব কম বই পড়েছি। এরমধ্যে মনে দাগ কাটার মতো, বইয়ের সংখ্যা খুবই নগন্য। সেই নগন্য সংখ্যক বইয়ের একটি হলো এই "ব্যাঙা"। লেখিকার আরো বই পড়ার ইচ্ছে করছে। কিন্তু উইশলিস্ট বড় হতে হতে এত বড় হয়ে গেছে যে উনার কালভৈরব বইটা অনেক পিছনে চলে গেছে।
গল্পের শুরু হয় বাবুন নামের মা হারা দুরন্ত স্বভাবের একটি ছেলে আর তার বাবাকে নিয়ে। তারা যে বাসায় ভাড়া থাকতো সে বাসার বাড়িওয়ালার একটি প্রতিবন্ধী ছেলে ছিল নাম ছিল ব্যাঙা। মুলত অবহেলা করে একটা ভালো নামও রাখার প্রয়োজন মনে করেনি তার বাবা-মা। কোনো কারণে এত দুরন্ত স্বভাবের বাবুন ওই ছেলেটাকে খুব ভয় পেতো। এতই ভয় পেতো যে ব্যাঙার নাম করে ওকে মাঝেমাঝে শান্ত করা হতো। হঠাৎ একদিন রাতে ব্যাঙা মারা যাওয়ায় ওই ঘরটা খালি পড়ে থাকতো।
একদিন বাবুনের দুষ্টুমির মাত্রা অনেক বেশি হয়ে যাওয়ায় রেগে গিয়ে ওর বাবা ওকে ওই ব্যাঙার খালি ঘরে আটকে রেখে বাইরে চলে যায়। কয়েকঘন্টা পর মনে পড়লে জলদি গিয়ে ঘর খুলে বের করে আনে। কিন্তু এই ঘটনার পর বাবুনের দুষ্টুমি একদম কমে যায়। এতটাই শান্ত হয়ে যায় বাবুন যেটা খুব অস্বাভাবিক।
এপর্যন্ত পরে খুব স্বাভাবিক এবং বহুল প্রচলিত গল্পই মনে হচ্ছে তাই না? গল্প স্বাভাবিকই কিন্তু দীপাঞ্জনা দাশের লেখনির মুনশিয়ানায় পুরো প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার বইটি একবারের জন্যও বোরিং লাগে নি।
তবে এখন পর্যন্ত আখিদা, মড়ি, ব্যাঙা (একসাথে প্রকাশ হয়েছিল) এই তিনটি বইয়ের মধ্যে আমার পছন্দের বই মড়িই থাকবে।
মড়ি > ব্যাঙা > আখিদা
রেটিং 🌟🌟🌟🌟🌟🌟 (৬.৫)
রিভিউটি লিখেছেনঃ Fardin Rafi
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।