বইয়ের নামঃ ট্রাফিক সিগন্যাল
লেখকঃ অর্পিতা সরকার
প্রকাশনীঃ দীপ প্রকাশন
পেজ সংখ্যাঃ 136
জনরাঃ রহস্য গোয়েন্দা গল্প, থ্রিলার
প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি 2022
বর্তমান লেখক দের মধ্যে যেসব লেখক দের লেখনী মাধ্যমে পাঠক দের মন জয় করে নিতে পারে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো অর্পিতা সরকার।
এনার লেখার স্টাইল পাঠক কে শেষ অব্দি বেধে রাখেন। এনার আগের লেখা গুলো পড়েছি বলে জানি এনার লেখার জাদু।যতক্ষণ না আপনি বইটি পড়ে শেষ করবেন ততক্ষন শান্তি নেই আপনার এখানেই লেখিকার কেরামতি আর এই ব্যাপারে তিনি আমার একজন অন্যতম পছন্দের লেখিকা।
এবার আসা যাক কাহিনী নিয়ে। কাহিনী শুরু টে আমরা দেখতে পাই চয়নিকা সান্যাল এর ইন্টারভিউ নিতে হাজির সুস্মিতা তাদের পত্রিকা "সাকসেসফুল" এর জন্য কিন্তু আমাদের গল্পের নায়িকা কলকাতা শহরের সেলিব্রেটি ও একটি অনাথ আশ্রম চালান ও অদ্বিতীয়া কোম্পানির মডেল ও সেই কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার। সুস্মিতা তার দ্বিতীয় শ্রেণীর পত্রিকা জন্য তার ইন্টার ভিউ চাইতে আসলে তিনি তার ইমেজ এর জন্য দ্বিতীয় শ্রেণীর পত্রিকাতে ইন্টারভিউ দিতে অস্বীকার করেন।ও সেখান থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ও পথের মধৌ কলকাতায় ট্রাফিক সিগন্যাল এর ওখানে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অ্যাকসিডেন্ট করেন ও তাকে ও তার সাথে সেই অ্যাকসিডেন্ট করা ভিখারী মহিলা ও তার কোলের ২ বছর এর সন্তান সহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেখান থেকে রহস্য ময় ভাবে হারিয়ে যায় শিশুটি।ও সেই মহিলাটি রহস্য জনক ভাবে হসপিটালের বেডে শ্বাস রোধ করে খুন করে এক ছদ্দবেশী ডাক্তার।সহায় সম্বল হীন ভিখারী কে হাসপাতালে ঢুকে কে খুন করতে পারে? গাড়ি দূর্ঘটনায় তে এমনি মারা যাবে তাকে খুন করতে হবে কেন?সে বেঁচে গেলে এমন কি জানিয়ে দেবে তার জন্য তাকে এতো তাড়াতাড়ি খুন করা হলো?
কে বা কারা বাচ্চাটিকে অপহরণ করলো ?আর কেনোই বা অপহরণ করলো?কেন সেই বাচ্চাটিকে অপহরণ করতে হলো?
এখানে থেকে কাহিনী দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে?
ঘটনার তদন্ত করতে আসেন আমাদের গল্পের নায়িকা কলকাতা পুলিশের এস.আই লগ্নজিতা ভট্টাচার্য ও তিনি যতো তদন্ত করতে থাকেন ততো তিনি জানতে পারেন যেএকটি চক্র যাদের কাজ হলো কলকাতা শহরের সব নবজাতক কে পয়সার জন্য কিছুখন করে ভাড়া দেওয়া হয় ও তাদের দিয়ে কলকাতায় বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যাল এ গাড়ি দার করিয়ে ভিক্ষা চাওয়া হয় ও প্রয়োজনে তাদের হাত পা কেটে দিয়ে তাদের পঙ্গু বানিয়ে দেওয়া হয় যাতে তারা মানুষের বেশি সহানুভূতি পায় ও তার ফলে বেশি ভিক্ষা পেতে পারে।আর তাছাড়া বিভিন্ন আর্থিক দিক থেকে দূবল মেয়েদের টাকার লোভ এ ফেলে তাদের একটি ছোট শিশু দিয়ে ভিক্ষা করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এইই সবের পেছনে আছে কে? কারা এই সবের সঙ্গে জড়িত?
আর কাহিনীর টানটান বুননে গল্পের প্লট দ্রুত চেঞ্জ হতে থাকে। এখানেই অর্পিতা সরকারের লেখার জাদু।
লগ্নজিতা ও ডাক্তার কৌশিক ব্যানার্জি মতো আমরা কখন রহস্যের গভীরে ঢুকে যাই ততো আমরা জানতে পারি পর পর শহরে ঘটে চলা খুনের পেছনে কি কোনো সিরিয়াল কিলার আছে,নাকি কোনো সাইকো পেশেন্ট?নাকি নিন্ম মধ্যবিত্ত মানসিকতার কোনো ছাপোষা মানুষ?এক সমাজের অন্ধকার দিক। নিজে মা সে খুলে ফেলে এক শিশু পাচার চক্র আর সাথে যারা নেশা জন্য পিছিয়ে পড়ছে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করানো। একটি মানুষ এর ভালো আর মন্দ দিক সমাজের জন্য কতটা ভয়ানক হতে পারে সেটা লেখক এক অসমান্য লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছে। এখানেই অর্পিতা সরকারের লেখার জাদু।
উপন্যাস টি শেষ হলে আমাদের তিনি ভাবতে বাধ্য করেন যে সমাজে কি কি না হতে পারে। ও আমরা সমাজের কোথায় বসবাস করেছি। সেদিক থেকে লেখিকার এর দেওয়া নাম ও সার্থক ট্র্যাফিক সিগন্যাল।
আপনারা যারা থ্রিলার ও রহস্য উপন্যাস পড়তে ভালো বাসেন। তাদের জন্য অর্পিতা সরকারের লেখা এইই বইটি অতি অবশ্যই পাঠ করবেন। আর গল্পের শেষে সমাজের অন্ধকার দিক আপনাদের ভাবতে বাধ্য করবে। আর গল্পের শেষে যে টুইস্ট আছে তা আপনাদের কে অবাক করে দেবে এক কথায় অসাধারণ একটি উপন্যাস "ট্রাফিক সিগন্যাল"
আমি অর্পিতা সরকার ম্যাডাম এর লেখার জাদুর ফ্যান।
রেটিংঃ আমি ১০ এর মধ্যে ১০ দেবো।
review
উপন্যাস - ট্রাফিক সিগন্যাল
লেখিকা - অর্পিতা সরকার
প্রকাশন - দীপ প্রকাশন
প্রচ্ছদ - স্বর্ণাভ বেরা
প্রথম প্রকাশ - ফেব্রুয়ারি ২০২২
এইমাত্র পড়ে শেষ করলাম অর্পিতা সরকারের লেখা 'ট্রাফিক সিগন্যাল'। এই বইয়ের রিভিউ পড়ে বইটি পড়ার আগ্রহ জন্মায়। তারপর আর কি, পড়াশোনার মাঝে একটু সময় বের করে পড়ে ফেললাম। চলুন আর ভাট না বকে, এবার ছোট্টো করে বইটির রিভিউ দেই। তবে হ্যাঁ, রিভিউ দেওয়ার পাশাপাশি বইটির যে অংশগুলো আমার ভালো লাগেনি সেগুলো উল্লেখ করব।
একটা খুব সাধারণ গাড়ি দূর্ঘটনা। একটা ভিখারী মহিলা যার কোলে নোংরা তেলচিঠে পোষাক পড়া একটা বাচ্ছা, রাস্তা পার করতে গিয়েই গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগে এবং দূর্ঘটনাটি ঘটে একটা নামজাদা সাকসেসফুলওমেন চয়নিকা সান্যালের সঙ্গে, যিনি একজন সেলিব্রিটিও বটে। চয়নিকা সান্যাল সহ ভিখারী মহিলা ও বাচ্ছাটিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ভিখারী মহিলাটির ব্রেন হ্যামারেজ হয় এবং কোমায় চলে যান। সেই হাসপাতালেই খুন হন সেই ভিখারী মহিলা এবং বাচ্ছাটি চুরি হয়ে যায় আরও একজনের দ্বারা। যদিও ব্রেন হ্যামারেজের কারণে সেই ভিখারী মহিলা মারা যেতেন তবুও তাকে কেন খুন করা হল আর সেই ভিখারী মহিলার কোলে থাকা বাচ্ছাটি আসলে কার যাকে হাসপাতাল থেকে চুরি করা হল? পর পর ঘটে চলা খুনের পিছনে আছে? কেন ই বা সে এভাবে খুন করে যাচ্ছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আপনাকে অবশ্যই এস আই লগ্নজিতা ভট্টাচার্যের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকতেই হবে। হয়ত উপন্যাসের শেষে ডাক্তার কৌশিকের মত আপনিও তাকে ভালোবাসতে পারেন।
কে বলতে পারে কি হয় শেষে,
খুনিরাও যে কেন থাকে শুধু ছন্মবেশে!
যাই হোক, যে অংশগুলো আমার চোখে একটু কমজোরি লেগেছে, সেগুলো বলি --
১) গল্প বলার ধরণ:- খারাপ বলব না, তবে সাসপেন্স হারিয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝে আর কখনও কখনও অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা যা আপনাকে ধৈর্যহারা করতে পারে।
২) চরিত্রের ঘনঘটা:- হ্যাঁ, আমার ব্যাক্তিগতভাবে মনে হয়েছে উপন্যাসটিতে মাত্রাতিরিক্ত চরিত্রের সমাবেশ ঘটনা হয়েছে যা হয়ত প্রয়োজন ছিল না। আর একটা কথা, গীতা, রীতা আর শিউলিকে আপনিও আমার মতন ঘুলিয়ে ফেলতে পারেন।
৩) সমাধানের পথ:- একটা বিশেষ জায়গায় এসে আমার মনে হয়েছে, কেসটির সমাধান যেন অফিসারের হাতের কাছেই আছে কিন্তু উনি খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি এখানে হয়ত সম্পূর্ণ বলতে পারছি না তবুও যারা পড়েছেন তাদের জন্য ক্লু দিচ্ছি "...... গলায় যে চৌকো তাবিজের ভিতরে ফটো যেখানে বুদ্ধের ফটোর পাশাপাশি ক্রিমিনালের ফটো রাখা আছে এবং সেই তাবিজ তাদের সমগ্র সদস্যের গলায় দেওয়া থাকে ...... "
৩নং পয়েন্ট হয়ত সবাই বুঝতে পারবেন না। তাই বলব একবার পড়েই দেখতে পারেন অর্পিতা দিদিভাইয়ের লেখা গোয়েন্দা উপন্যাস 'ট্রাফিক সিগন্যাল'।
লিখেছেন - শুভজিৎ বিশ্বাস
উপন্যাস - ট্রাফিক সিগন্যাল
লেখিকা - অর্পিতা সরকার
প্রকাশন - দীপ প্রকাশন
প্রচ্ছদ - স্বর্ণাভ বেরা
প্রথম প্রকাশ - ফেব্রুয়ারি ২০২২
এইমাত্র পড়ে শেষ করলাম অর্পিতা সরকারের লেখা 'ট্রাফিক সিগন্যাল'। এই বইয়ের রিভিউ পড়ে বইটি পড়ার আগ্রহ জন্মায়। তারপর আর কি, পড়াশোনার মাঝে একটু সময় বের করে পড়ে ফেললাম। চলুন আর ভাট না বকে, এবার ছোট্টো করে বইটির রিভিউ দেই। তবে হ্যাঁ, রিভিউ দেওয়ার পাশাপাশি বইটির যে অংশগুলো আমার ভালো লাগেনি সেগুলো উল্লেখ করব।
একটা খুব সাধারণ গাড়ি দূর্ঘটনা। একটা ভিখারী মহিলা যার কোলে নোংরা তেলচিঠে পোষাক পড়া একটা বাচ্ছা, রাস্তা পার করতে গিয়েই গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগে এবং দূর্ঘটনাটি ঘটে একটা নামজাদা সাকসেসফুলওমেন চয়নিকা সান্যালের সঙ্গে, যিনি একজন সেলিব্রিটিও বটে। চয়নিকা সান্যাল সহ ভিখারী মহিলা ও বাচ্ছাটিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ভিখারী মহিলাটির ব্রেন হ্যামারেজ হয় এবং কোমায় চলে যান। সেই হাসপাতালেই খুন হন সেই ভিখারী মহিলা এবং বাচ্ছাটি চুরি হয়ে যায় আরও একজনের দ্বারা। যদিও ব্রেন হ্যামারেজের কারণে সেই ভিখারী মহিলা মারা যেতেন তবুও তাকে কেন খুন করা হল আর সেই ভিখারী মহিলার কোলে থাকা বাচ্ছাটি আসলে কার যাকে হাসপাতাল থেকে চুরি করা হল? পর পর ঘটে চলা খুনের পিছনে আছে? কেন ই বা সে এভাবে খুন করে যাচ্ছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আপনাকে অবশ্যই এস আই লগ্নজিতা ভট্টাচার্যের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকতেই হবে। হয়ত উপন্যাসের শেষে ডাক্তার কৌশিকের মত আপনিও তাকে ভালোবাসতে পারেন।
কে বলতে পারে কি হয় শেষে,
খুনিরাও যে কেন থাকে শুধু ছন্মবেশে!
যাই হোক, যে অংশগুলো আমার চোখে একটু কমজোরি লেগেছে, সেগুলো বলি --
১) গল্প বলার ধরণ:- খারাপ বলব না, তবে সাসপেন্স হারিয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝে আর কখনও কখনও অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা যা আপনাকে ধৈর্যহারা করতে পারে।
২) চরিত্রের ঘনঘটা:- হ্যাঁ, আমার ব্যাক্তিগতভাবে মনে হয়েছে উপন্যাসটিতে মাত্রাতিরিক্ত চরিত্রের সমাবেশ ঘটনা হয়েছে যা হয়ত প্রয়োজন ছিল না। আর একটা কথা, গীতা, রীতা আর শিউলিকে আপনিও আমার মতন ঘুলিয়ে ফেলতে পারেন।
৩) সমাধানের পথ:- একটা বিশেষ জায়গায় এসে আমার মনে হয়েছে, কেসটির সমাধান যেন অফিসারের হাতের কাছেই আছে কিন্তু উনি খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি এখানে হয়ত সম্পূর্ণ বলতে পারছি না তবুও যারা পড়েছেন তাদের জন্য ক্লু দিচ্ছি "...... গলায় যে চৌকো তাবিজের ভিতরে ফটো যেখানে বুদ্ধের ফটোর পাশাপাশি ক্রিমিনালের ফটো রাখা আছে এবং সেই তাবিজ তাদের সমগ্র সদস্যের গলায় দেওয়া থাকে ...... "
৩নং পয়েন্ট হয়ত সবাই বুঝতে পারবেন না। তাই বলব একবার পড়েই দেখতে পারেন অর্পিতা দিদিভাইয়ের লেখা গোয়েন্দা উপন্যাস 'ট্রাফিক সিগন্যাল'।
লিখেছেন - শুভজিৎ বিশ্বাস
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।