পন্যভূমি || ইন্দ্রনীল স্যানাল Panya Bhumi Pdf & Review

পন্যভূমি || ইন্দ্রনীল স্যানাল Panya Bhumi Pdf & Review

বইয়ের নাম_ পন্যভূমি
লেখক _ ইন্দ্রনীল স্যানাল
প্রকাশনী_ দেজ পাবলিকেশন
পেজ সংখ্যা_ 168
জনরা_ মেডিক্যাল থ্রিলার


থ্রিলার বলতে আমরা কি বুঝি। যে বই পড়তে শুরু করলে তার শেষ না জানতে পারলে মনটা ছটফট করে।
লেখক এর সাথে সাথে আমরাও মনে মনে কাহিনী সাথে এগিয়ে চলি। এর পর কি হতে পারে বা কি হবে তার একটা কাহিনি মনে মনে আন্দাজ করি। আর সব শেষ এ লেখক যদি আপনাকে পুরোটা বই একবারে পাঠ করিয়ে নিতে পারে তাহলে তাকে থ্রিলার বলি।সে রকম এটি একটি মেডিকেল থ্রিলার। 

এবার আসা যাক কাহিনী নিয়ে। কাহিনী শুরু টে আমরা দেখতে পাই গাইনোকলোজিস্ট পথিক চ্যাটার্জী  সেবাগৃহ ম্যাটানিটি ক্লিনিক এ যায় একটা সিজার করতে  আর সেখান থেকে রহস্য ময় ভাবে হারিয়ে যায়।
কে বা কারা তাকে অপহরণ করলো আর কেনোই বা অপহরণ করলো।এমন কি জানতে পেরে ছিলো যে তাকে অপহরণ করতে হলো।
অন্যদিকে তার স্ত্রী দিঠি মায়ের মৃত্যুর স্ট্রেস না নিতে না পেরে অ্যালকোহল খাওয়া শুরু করে ও সে নিজে ও জানতে পারে না কখন সে নেশার মধ্যে জড়িয়ে পড়েছে ঘটনা ক্রমে তাকে ভর্তি করা মায়াগ্রামে। যেটা হলো একটি নেশামুক্ত কেন্দ্র।
সেখানে তিন মাস থাকতে বলা হয়  সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় প্রকাশ ঘোষাল বা পেলের সাথে। দিঠি আর পেলে একদিনে ছাড়া পেলে জানতে পারে যে তার স্বামী পথিক এর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এখানে থেকে কাহিনী দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে। সে যতই তার স্বামীর খোঁজ করতে থাকে ততোই জানতে পারে যে এটি একটি চক্র যাদের কাজ হলো কলকাতা শহরের সব নবজাতক কে পয়সার জন্য বিক্রি করে দেওয়া বিভিন্ন বৈদেশিক দম্পতি দের কাছে টাকার মাধ্যমে। আর তাছাড়া বিভিন্ন আর্থিক দিক থেকে দূবল আর পাগল মেয়েদের জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্কের ফলে তাদের সন্তান জন্মালে বা মিথ্যা কথা বলে তাদের সন্তান পাচার করে দেওয়া।আর এই সব কিছুর পেছনে আছে গুরুজী বা ওরফে সর্বেরস্বর। প্রথম দিকে দিঠি কে থানার বড় বাবু এই সবের জন্যে সন্দেহ করে। কিন্তু পড়ে সে জানতে পারে দিঠি এই সবের পেছনে নেই। আর কাহিনীর টানটান বুননে গল্পের প্লট দ্রুত চেঞ্জ হতে থাকে। এখানেই ইন্দ্রনীল বাবুর লেখার জাদু।
দিঠি আর পেলে মতো  আমরা কখন রহস্যের গভীরে ঢুকে যাই ততো আমরা জানতে পারি এক সমাজের অন্ধকার দিক। নিজে বাবা হতে পারবে না জেনে সে খুলে ফেলে এক শিশু পাচার চক্র আর সাথে যারা নেশা জন্য পিছিয়ে পড়ছে তাদের উদ্ধার। একটি মানুষ এর ভালো আর মন্দ দিক সমাজের জন্য কতটা ভয়ানক হতে পারে সেটা লেখক এক অসমান্য লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছে। এখানেই ইন্দ্রনীল বাবুর লেখার জাদু। উপন্যাস টি শেষ হলে আমাদের তিনি ভাবতে বাধ্য করেন যে পন্য কি কি না হতে পারে। সেদিক থেকে লেখক এর দেওয়া নাম ও সার্থক "পন্যর্ভূমি"।

আপনারা যারা মেডিক্যাল থ্রিলার পড়তে ভালো বাসেন। তাদের জন্য ইন্দ্রনীল বাবুর লেখা এইই বইটি অতি অবশ্যই পাঠ করবেন। আর গল্পের শেষে সমাজের অন্ধকার দিক আপনাদের ভাবতে বাধ্য করবে।
এক কথায় অসাধারণ একটি উপন্যাস (পন্যভূমি)। আমি ইন্দ্রনীল বাবুর লেখার জাদুর ফ্যান।
রেটিং_ আমি ১০ এর মধ্যে ৯.৫ দেবো
রিভিউটি লিখেছেনঃ বাপন দা

বই: পন্যভূমি
লেখক: ইন্দ্রনীল সান্যাল।
গতকাল পড়ে শেষ করলাম শ্রী ইন্দ্রনীল সান্যাল এর লেখা পন্যভূমি উপন্যাসটি। উপন্যাস এর মুখ্য চরিত্র দিঠী, পেলে ও গুরুজী। উপন্যাসটি শুরু হয় দিঠী'র স্বামী ডাক্তার পথিক সরকার নিখোঁজ হওয়া থেকে। দিঠী অ্যালকোহল এর নেশামুক্ত হয়ে ফিরে এসে দ্যাখে যে তার হাসব্যান্ড নিখোঁজ। পেলে নামক এক অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সাহায্যে দিঠী ধীরে ধীরে এই নিরুদ্দেশ সম্বন্ধে খোঁজখবর শুরু করে এবং এক চক্রের সন্ধান পায় যেটি শিশু পাচার এর সঙ্গে যুক্ত। কিভাবে দিঠী ও পেলে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মত এই রহস্যে ও তার উন্মোচনের আবহে ঢুকে পড়ে, নেশামুক্তি কেন্দ্রের সর্বেসর্বা গুরুজী কিভাবে তার এই অবৈধ সাম্রাজ্য বিস্তার করলেন সেটি লেখক খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। সব শেষে পুলিশের ভূমিকা টা ও দিঠী দের কবর দেবার বিষয়টা একটু বেমানান লেগেছে, যেটা আরো ভালো মত উপস্থাপনা করা যেত বলে আমার ব্যক্তিগত মতামত। সব মিলিয়ে একটি সাসপেন্স উপন্যাস লেখক উপহার দিয়েছেন পাঠক দের। অবশ্যই পাঠ করতে পারেন। 
ব্যক্তিগত রেটিং - ৬/১০

রিভিউটি লিখেছেনঃ নিলয়

বই- পণ্যভূমি
লেখক- ইন্দ্রনীল সান্যাল 
মাস তিনেক মায়াগ্রাম রিহ্যাব থেকে ফিরে এসে অ্যালকোহলিক দিঠি জানতে পারে স্বামী সার্জন পথিক চট্টোপাধ্যায় নিখোঁজ আর এজন্য তদন্তকারী কোরাপ্টেড অফিসার ঋতম তাকেই সন্দেহ করছে। দিঠি জানতো এক্সট্রা পয়সার লোভে নর্থ ক্যালকাটার রেড লাইট এরিয়ার একটা ক্লিনিক সেবাগৃহতে সিজার করে তার স্বামী। কিন্তু সেখানে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে মিসিংয়ের দিন পথিক সেখানে আসেনি। তারপর রিহ্যাবের বন্ধু পেলেকে সঙ্গে ক'রে চলে স্বামীকে খোঁজার পালা। কিন্তু তাদের অপর আক্রমণ করছে কে? কারা তাদের বাধা দিচ্ছে? আস্থা ক্লিনিকের তিনতলায় কী হয়? একদিকে পুলিশ অন্যদিকে ভাড়াটে লোকেরা। এই খুঁজতে গিয়েই শহরের এক অচেনা অদ্ভুত জগতের সঙ্গে পরিচয় হয় তাদের। জানতে পারে গুরুজির কথা। গোপনে চলা ব্যবসার কথা। সর্বপোরি এই শহরে সবকিছুই পণ্য। প্লটের জালে গল্প এগোয় বেশ গতিতেই কিন্তু এই শেষে কী বেরোবে এটা বাদ দিয়ে থ্রিলারের অন্য উত্তেজনা যেন কম পেলাম। ইন্দ্রনীল বাবুর আর পাঁচটা মেডিকেল থ্রিলারের মতো এখানেও ডিটেলিং রয়েছে, অন্য একটা জগৎ তৈরির প্রয়াস রয়েছে কিন্তু কিছু জায়গায় যেভাবে রহস্য খোলসা হচ্ছে তার যুক্তিবোধের ফাঁক প্রকট হয়েছে। আর শেষেও তেমন মোচড় পেলাম না যেটা অকল্পনীয়। সবমিলে আমার মোটামুটি লেগেছে, অনেকদিন থেকেই পড়বো পড়বো ভেবে শেষে এখানে কয়েকটি রিভিউ পড়েই বইটি পড়েছি, কিন্তু যে এক্সপেক্টেশন ছিল সেটা পূরণ হয়নি। তবে নেহাত মন্দও বলবো না, পড়াই যায়।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Raktim Ghanta

Post a Comment

0 Comments