হাতে সময় বড্ড কম - কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়

হাতে সময় বড্ড কম - কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়

উপন্যাসের নাম - হাতে সময় বড্ড কম
লেখক - কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় 


এটা জাস্ট কী ছিল! মানে ওনার লেখার ভক্ত আমি কিন্তু এটা কী!!! শুরুটা বেশ ভালো। এক রিয়্যালিটি শো যেখানে প্রত্যেক এপিসোডে একটা করে ভুতুড়ে বাড়িতে গিয়ে প্রতিযোগীদের কিছু টাস্ক করতে হয়। যে বেশি সময় নেবে বা ভয় পেয়ে বা কোন কারণে টাস্ক শেষ না করতে পারলে সে প্রতিযোগিতা থেকে আউট! প্রথম কিছু পাতায় এতদূর অবধি বুঝলাম কিন্তু গল্পটি ভৌতিক নাকি রহস্য সেটা বুঝতে পারছিলাম না!

ভুতে ডর লাগে খুব... ওমাগো ভুত আমার পুত, etc etc😟

যাইহোক আরেকটু পড়লাম তো বুঝলাম যে লাস্ট দুজন মানে ফাইনালিস্ট দুজনের দুটো গল্প আর শোয়ের গল্প মোট তিনটে ট্র্যাক একসাথে চলছে আর আমার ভালো লাগাও পাল্লা দিয়ে কমছে! এবার মাইকেলমামা এলেন আর সাথে তার দুই ভাগ্নে আর ভাইপো! সাথে আমার মাথাও বিদ্রোহী হচ্ছে! তবে এটুকু ক্লিয়ার যে আমার মন্তরের চোটে হোক বা আর যাইহোক গল্পটি ভৌতিক কোনোমতেই নয়! ভাবতে পারেন শেষের দিকে বেশ কয়েক জায়গা স্কিপ করেছি! এই মাইকেল মামার জন্যে!! মা গো!! আর হঠাৎ শেষ! যাহ্!

শেষে আমার মনে তিনটে প্রশ্ন থাকলো বেঁচে।
১. কেন?
২. কেন?
৩. কেন?

১০-এ কোনো নাম্বার দেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই এখন! রিভিউ লিখতে গিয়ে আরেকবার পড়তে হল! কী ভয়ঙ্কর!!!😑

কিশোর অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী -- হাতে সময় বড্ড কম 
কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় 

টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো - ওদের সঙ্গে কতক্ষণ। বিখ্যাত সব ভুতুড়ে পোড়ো বাড়িতে প্রতিযোগীদের নানান কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে টিকে থাকার লড়াই। সেই লড়াইতে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ওঠে গুড়িয়া এবং বাপ্পাদিত্য। ফাইনালের জন্য নির্বাচিত বাড়ির বুকিং বিশেষ কারণে বাতিল হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ নতুন বাড়ি খুঁজে পাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু হয় গন্ডগোল। এই গোলমাল গল্পের মূল বিষয়। এরই সূত্র ধরে আসে মাইকেল নামের এক ধুরন্ধর ব্যবসায়িক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। ভুতুড়ে বাড়ি খুঁজে দেওয়ার বরাত নিয়ে যে আসলে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়। সেখানে এসে পড়ে মাইকেলের ভাইপো আর ভাগ্নে, নির্দিষ্ট গ্রামের কিছু চরিত্র, বাপ্পাদিত্যের দাদু প্রমূখ। অতঃপর কী হয় সেই রিয়ালিটি শোয়ের শেষ পর্বে? ভূতের বাড়িতে সত্যি কি ভূত আছে? থাকলে ভূতের ভূমিকা কী হয়? কী হয় ফলাফল? কে জেতে?  ইত্যাদি নিয়ে এ কাহিনী।
ছোটদের কাছে উপভোগ্য গল্পের মধ্যে কিন্তু কিছু সত্যি কথা রয়েছে।  টিভির রিয়েলিটি শোগুলো বহু ক্ষেত্রেই যে অনেকখানি বানিয়ে তোলা, প্রকৃত রিয়েলিটি এমনটা নয়, গল্পের সেই বাস্তবতা আভাসে ফুটে ওঠে । এই সমস্ত শো ঘিরে বিপুলতর বাণিজ্য, ব্যবসায়িক স্বার্থ মিশে থাকে, দর্শকদের বহু ক্ষেত্রেই কিছুটা বোকা বানানো হয় । আবার এইসব শো-কে ঘিরে প্রাইজ মানির অংক মানুষকে আকৃষ্ট করে ঝুঁকি নিতে। আবার কেউ কেউ নিছক মজার খোরাক পেতে শোগুলিতে অংশ নেয়। শুধুমাত্র পারিবারিক অর্থাভাবের কারণে বিভিন্ন সংকট মোচনের জন্য ওই প্রাইজ মানি পেতে অভাবী দরিদ্র ঘরের প্রতিযোগীরা অংশ নিতে বাধ্য হয়।
রিয়েলিটি শো এর শেষ পর্বের ঘটনা শেষে একটু মন ভাল করে দেয়। যখন প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে উঠে ফাইনাল রাউন্ডে দুই প্রতিযোগী বাপ্পা আর গুড়িয়া পরস্পরের বন্ধু হয়ে ওঠে। গুড়িয়ার এখানে অংশ নিয়েছে তার বাবাকে ভালো করে তোলার চিকিৎসার অর্থ জোগানে, আর বাপ্পাদিত্যের ভূতের রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নেওয়ার কারণ শেষ পর্যন্ত ভূতকে মিথ্যে বলে প্রমাণ করার বৈজ্ঞানিক বোধ। প্রতিযোগিতার শেষ পর্বে বাইরের নানা লোক নানা উদ্দেশ্যে এর মধ্যে অবাঞ্ছিত ঢুকে পড়ে এবং সমস্ত ঘটনা ধারাকে গুলিয়ে একাকার করে দেয়। গল্পের আসল মজা উঠে আসে এখান থেকে। সাজানো ছক বদলে দিয়ে রিয়েলিটি শো কে আর এক রিয়ালিটি মুখোমুখি করে দেয় ঘটনা প্রবাহ।  বাপ্পার দাদু যখন নিজের নাতির সেরা হওয়ার দাবি ভুলে গুরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তার হয়ে কোর্টে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন তখন এই অহংকারী মানুষটির অন্তর্গত মানবিক স্নেহ চরিত্রটিকে পাঠকদের ভারী আশ্বস্ত করে।  কাইনীর মধ্যে মজার ঘটনা চরিত্র দৃশ্য সব আছে। কিন্তূ সব থেকে বেশি আছে যা তা হল বিশুদ্ধ মজা এবং গভীর মানবিকতা। সেই কারণেই ছোটদের পক্ষে এক প্রয়োজনীয় পাঠ হয়ে ওঠে এই উপন্যাস।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Bubu

Post a Comment

0 Comments