চন্ড রাজার বলি || সঞ্জয় ভট্টাচার্য || Chand Razar Boli pdf & Review

চন্ড রাজার বলি || সঞ্জয় ভট্টাচার্য || Chand Razar Boli pdf & Review

গল্পের নাম - চন্ড রাজার বলি 
লেখক - সঞ্জয় ভট্টাচার্য 
প্রকাশক - দীপ প্রকাশন 
ISBN - 978-81-952-375-8-6 
প্রথম প্রকাশ - মে, ২০২১ 


আমি বরাবরই একটু অফবিট বই ভালবাসি। হয়ত অনেকেই পড়েছেন বইটি, কিন্তু আমার চেনাজানার মধ্যে এই বইটির রিভিউ আমি পড়িনি।

যাইহোক এবার শুরু করি। শুরুতে বইয়ের নামটা পড়েই কিরকম একটা জঙ্গল জঙ্গল ভাব মনে আসলো।

গল্প শুরু হয় ২০১৩ সাল থেকে। মুখ্য চরিত্র "জয়ন্ত", তার জবানিতেই পুরো গল্পটা লেখা হয়েছে। তার এক বন্ধু তপন, যার সাথে জয়ন্তের বহুদিন দেখা সাক্ষাৎ হয়নি বলে, তার সাথে দেখা করতে যায়। তপনের বেশ কিছু কথা জয়ন্তের বেশ অদ্ভুত লাগে। এরপর তপন তার সাথে ঘটে যাওয়া উড়িষ্যা সীমান্তে ভগীরথপুরের অভিজ্ঞতার কথা বলতে শুরু করে। সে গল্পে আসে এক অনার্য দেবতা চন্ডরাজা, বাবুরামের টিলা আর চন্ডরাজার মন্দিরের নরবলি। এই চন্ডরাজাকে তুষ্ট করে নরবলি দিতে পারলে অতুল ঐশ্বর্য পাওয়া যায় নাকি। তপনের এই ঘৃণ্য চক্রান্তে জয়ন্ত ফেঁসে যায়। বলির মূহুর্তে সেখানে আবার এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ নকশাল নেতা এসে হাজির হয়। তপনের বদলে এবার সে এই বলির প্রসাদ নিতে চায় কিন্তু এতকিছুর মাঝে এসে পড়ে পুলিশ। সবাই মারা যায় কিন্তু হৃৎপিণ্ডে গুলিবিদ্ধ হয়েও আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যায় জয়ন্ত।

এই নিয়ে গল্পের প্রথম অংশ। দ্বিতীয় অংশে আরও অনেক চরিত্র আসে, যেমন- ইতিহাসবিদ রূদ্রপ্রসাদ, দিবাকর ইত্যাদি। কেউ জয়ন্তকে সঠিক পথে আবার কেউ বেঠিক পথে নিতে চায়। কলকাতার চারিদিকে সাদাজ্বর নামের এক মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। দলে দলে ইঁদুর কলকাতার দিকে চলে আসে। রূদ্রপ্রসাদ মনে করেন যে জয়ন্তের আত্মবলিদানই হল এসবকিছু বন্ধ করার একমাত্র উপায়।


তপনের কী সেই অভিজ্ঞতা?
এই বলির সাথে উড়িষ্যার রাজপরিবারের কী সম্পর্ক?
তপন হঠাৎ জয়ন্তকে কেন সবকিছু বলছে?
জয়ন্ত কেন জড়িয়ে পরলো এই সবকিছুর সাথে? কী পরিচয় জয়ন্তের?
রূদ্রপ্রসাদ কে? তার এরকম মনে হওয়ার কী কারণ? জয়ন্তকে কেন‌ আত্মবলিদান দিতে হবে?

সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বইটি পড়লে। পড়ে ফেলুন ভালো লাগবে।

যদিও সব গল্পের মতই উপসংহারে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন হয়েছে। এছাড়াও বেশ দু একটা পৌরাণিক কল্পিত কাহিনী আর অন্ধকার জঙ্গল ঘোরা হয়েছে তপন আর জয়ন্তের সাথে।
 
বানান ভুল নজরে পরেছে কিন্তু। যেমন - সম্মন্দ, পক্রিয়া, দ্বায়িত্ব, ইত্যাদি। এরকম আরও আছে। অতি সাধারণ বানান যেহেতু, তাই দৃষ্টিকটু লাগছিলো।

প্রচ্ছদটি সাধারণ লেগেছে আমার। আরো ভালো হতে পারতো।

বইটিকে আমি রেটিং দেবো ৭/১০।

চন্ড রাজার বলি 
লেখক: সঞ্জয় ভট্টাচার্য 
দীপ প্রকাশন

আমার পড়া লেখকের প্রথম বই। বৃষ্টির দিনে adventure গল্প পড়ার ইচ্ছায় একদিনেই বইটি শেষ করি। একটি গল্পে adventure, জঙ্গল, তন্ত্র- মন্ত্র, অধিবাসী লৌকিক উপাচার সব পেতে চাইলে বইটি পড়ে দেখতে পারেন।
 তপন পেশায় সাংবাদিক, বন্ধু জয়ন্ত কে জানায় নকশাল নেতা সমীরনের ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য উড়িষ্যার জঙ্গলে, সেখানে গিয়ে জানতে পারে নিকটবর্তী ভাগীরথপুর গ্রামে নরবলি হয়। সেই নিয়ে স্টোরি করতে গিয়ে আলাপ হয় ত্রিলোচন নামের এক তান্ত্রিক পূজারী, যার ভয়ে গ্রামে সবাই তটস্থ।
এই পূজারীর কাছ থেকে তপন জানে চন্ড রাজার বালির বাপ্যার, যার জন্য ত্রিলোচন এক জমিদার পুত্রকে ৭ বছর ধরে বন্দি রেখেছে মন্দিরের এক গোপন ঘরে। এরপর তপন সেই বাচ্ছা ছেলেটিকে মুক্ত করে। এরপর গল্পটি পট পরিবর্তন করতে থাকে তপন কি উদ্দেশ্য ছেলেটিকে মুক্ত করেছিল? জয়ন্ত বন্ধুর জন্য কি সমস্যায় পড়বে? টান টান উত্তেজনা পূর্ণ এই গল্পটি একবার পড়তে শুরু করলে শেষ করতে হবে। গল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আছে রুদ্রপ্রসাদ মিত্র, যিনি জয়ন্তকে অনেকভাবে সাহায্য করবেন। অলৌকিক উপাচার, জঙ্গলের adventure, দেবতার অভিশাপ.....এককথায় সুপাঠ্য।

রিভিউটি লিখেছেনঃ Sumanta

Post a Comment

0 Comments