উপন্যাস ---- ভয়নিচের অজানা দেশে
লেখক ---- অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী
১৪২৯ বঙ্গাব্দ
রাজু এক অনাথ ছেলে। তার বন্ধু, সেও পোলিও আক্রান্ত গরিব ঘরের সন্তান। অল্প বয়সে মাতৃহারা। বাবার গ্রামে একটি টিমটিম করে চলা মুদির দোকান। দুজনেই বড় একলা, তাদের সামাজিক নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হতে গেলে যা যা প্রয়োজন সেই অনুসারে বৃত্ত লোকবল প্রতিষ্ঠা কিছুই নেই, তাই সমাজে মোটামুটি তারা একঘরে। আকস্মিক ভাবে রাজু হারিয়ে যায়। তারপর থেকে তার বন্ধু আরও একা হয়ে পড়ে। আর এই সময় ধরা পড়ে তার বাবার প্রাণঘাতী অসুখ, যার চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করতে দিশেহারা ভালোমানুষ ছেলেটি হাসপাতালের চক্রান্তে পড়ে সামান্য সম্বলটুকু হারায়। ইতিমধ্যে গ্রামের একদল গুন্ডা রাজনৈতিক মদতে যাদের ক্ষমতা অপ্রতিরোধ্য, তারা রাজুর বন্ধুর পৈতৃক বাড়ি আর দোকান কিনে নিয়ে শপিং মল বানাতে চায়। থানা পুলিশ সবই তাদের করায়ত্ত। এই পরিস্থিতিতে অবসাদগ্রস্থ ছেলেটি স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যায়। সেখান থেকে তার প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে ফিরে আসা। জীবন-মৃত্যুর সীমান্তে তার দেখা হয় রাজুর সঙ্গে, কিছু প্রিয় মানুষের সঙ্গে, আর সেখান থেকেই সে ফিরে আসে এক অদ্ভুত মনোবল, আশ্চর্য ক্ষমতা নিয়ে। যার জোরে সে প্রকৃতির গভীরে নিহিত ইউনিভার্সাল ল্যাঙ্গুয়েজ বা মহাজাগতিক ভাষার সংকেত উদ্ধার করতে শিখতে থাকে। তার জন্য সে প্রকৃতি এবং মহাবিশ্বের সঙ্গে যোগ রক্ষায় সক্ষম হবে বলে বন্ধু রাজু ভরসা দেয়। এভাবেই রাজুও মানুষের থেকেও অনেক উন্নততর শক্তির সহায়তা পেতে সক্ষম হয়। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ রাজুর সাহায্য নিয়ে ফিরে আসা, তার কাছ থেকে জীবনের লড়াইয়ে মনোবল পাওয়া এবং প্রকৃতির অন্তরালে শক্তি ও ছাড়া মহাজাগতিক ভাষার মাধ্যমে দুনিয়ার সৎ বিশুদ্ধ শক্তির সহায়তায় এই উপদ্রুত কোণঠাসা ছেলেটি নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায় এবং আশ্চর্যভাবে তার জীবনের মানচিত্র বদলে যেতে থাকে। দুর্বল হয়ে যেতে থাকে তাকে ঘিরে থাকা প্রতিকূল শক্তির প্রতাপও।
কিশোর পাঠ্য কাহিনীটি আসলে ছোটদের দুটি বার্তা দেয়। চেনা পৃথিবীর অন্তরালের বিশ্বকে মহাজীবনের রহস্যকে জানতে গেলে পারিপার্শ্বিক আপাত তুচ্ছ বিষয়ের মধ্যে সন্ধান করতে হবে, প্রকৃতির অন্তস্থলে জীবনের গভীরে ডুব দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, অন্যায় শক্তির সামনে মাথা নত করলে চলবে না।
0 Comments
আপনার মতামত লিখুন।